সূরা “আল ক্ব-রিআ”-এর অনুবাদ ও সামগ্রিক কিছু তথ্য

1072 0

🤲 بِسْمِ الّٰلهِ الرَّحْمٰنِ الرَحِيْمِ ⬅️

🗣️ (বলো! আমি) আল্লাহর নামে (শুরু করছি), যিনি রহমান (পরম করুণাময় সকল সৃষ্টির জন্যে), যিনি রহিম (অসীম দয়াবান কিছু বিশেষ ব্যক্তির জন্যে)।

✍️ সূরা “আল ক্ব-রিআ”-এর অনুবাদঃ

চূর্ণ বিচূর্ণকারী একটি (মহা ঘটনা)! (১)
(আহ্!) কী (ভয়ংকর সেই) চূর্ণ বিচূর্ণকারী (ঘটনাটি) (২)
(হে নবী!) তুমি কী জানো, সেই চূর্ণ বিচূর্ণকারী (মহা ঘটনাটি) কী? (৩)
(জেনে রাখো!) সেদিন মানুষ (হতভম্ব হয়ে) বিক্ষিপ্ত পতংগের ন্যায় (দিক বিদিক ছোটাছোটি করতে) থাকবে (৪)
এবং পাহাড়গুলো তুলা ধুনা রঙ্গীন পশমের মত ছিন্নভিন্ন হয়ে যাবে। (৫)
তখন (সেদিন) যার (নেক আমলের) ওজন ভারী (ও মূল্যবান) হবে, (৬)
সে ব্যক্তি সম্পূর্ণ সন্তোষজনক ও পছন্দনীয় একটি জীবনের অধিকারী হবে। (৭)
আর (সেদিন) যার (নেক আমলের) ওজন হালকা (ও মূল্যহীন) হবে, (৮)
তার আশ্রয় হবে হা-উইয়া (নামক জাহান্নামের অগ্নিকুন্ডে)।(৯)
(হে নবী!) তুমি জানো কী? হা-উইয়া কী?(১০)
(সেটা হচ্ছে) অতি উত্তপ্ত ও জ্বলন্ত আগুন।(১১)
======================

📚সূরা  “আল ক্ব-রিআ” সম্পর্কে সামগ্রিক কিছু তথ্য:

✅১। কোরআনের বর্তমান উসমানী মুসহাফ এর ক্রমিক নম্বর অনুসারে এ সূরাটি একশত একতম।
✅২। নাযিল হওয়ার ধারাবাহিকতা অনুসারে এ সূরাটি ত্রিশ নম্বরে অবস্থিত।
✅৩। নাযিলের স্থানটি হচ্ছে পবিত্র মক্কা নগরী।
✅৪। আয়াতের সংখ্যা ১১।
✅৫। এ সূরাটির অভ্যন্তরে অবস্থিত শব্দ সংখ্যা ৩৬।
✅৬। এ সূরাটির অভ্যন্তরে মোট বর্ণ ব্যবহৃত হয়েছে ১৬০ টি।
✅৭। এ সূরাটির অভ্যন্তরে “আল্ল-হ” শব্দটি ব্যবহৃত হয়েছে ১ বার।
✅৮। সূরাটির নামের অর্থ: আরবী ব্যাকারণের দৃষ্টিতে “ক্ব-রিআ” কর্তা কারক
শব্দ। এর মূল ধাতু “ক্বারাআ”। এর অর্থ হচ্ছে “প্রচন্ড শক্তিশালী
আঘাতকারী”  বা “চূর্ণ-বিচূর্ণকারী”।
✅৯। সূরাটির বৈশিষ্ট্য:
এ সূরাটির সবটুকুই ক্বিয়ামতের বিষয়ে আলোচিত হয়েছে যা মানুষের আমলের
পরিমাপ এবং বিচার দিবসে তাদের সর্বশেষ পরিণাম সম্পর্কে বর্ণনা করছে। এ
সূরা সম্পর্কে আল্লাহর রাসূল (সা.) বলেছেনঃ “এ সূরা আমাকে বুড়ো করে
দিয়েছে।” (আল জামিয়’ আস সাগ্বির, খন্ড ২, পৃঃ নং ৮২)।
✅১০। সামগ্রিকভাবে এ সূরাটির আলোচ্য বিষয় হচ্ছে নিম্নরূপ:
• সূরা আল ক্ব-রিআ-এর সকল আয়াত-ই ক্বিয়ামতের দিবস সম্পর্কে বর্ণিত হয়েছে।
• ক্বিয়ামতের দিবসে মানুষের আতংক ও দিশেহারা অবস্থার বর্ণনা।
• যমিনের বুকে পাহাড়-পর্বতসহ সব কিছু চূর্ণ-বিচূর্ণ হয়ে যাওয়া।
• মানুষের ভাল-মন্দ আমলের ওজন ও মূল্যায়ন করা।
✅১১। সূরা “আল ক্ব-রিআ” তিলাওয়াতের ফযিলত:
• হাযরাত রাসূল (সা.) থেকে বর্ণিত হয়েছে যে, তিনি বলেছেনঃ “যে ব্যক্তি
সূরা আল ক্ব-রিআ তিলাওয়াত করবে ক্বিয়ামতের দিবসে তার নেকির ওজন ভারী হয়ে যাবে।” (তাফসীর মাজমাউল বায়ান, খন্ড ১০, পৃঃ নং ৪২৬)।
• হাযরাত ইমাম মুহাম্মাদ ইবনে আলী আল বাক্বির (সালামুল্লাহি আলাইহি): “যে
ব্যক্তি এ সূরা অধিক পরিমানে তিলাওয়াত করবে আল্লাহ তায়ালা তাকে দুনিয়াতে
দাজ্জালের ফেতনা এবং আখেরাতে জাহান্নামের উত্তাপ থেকে নিরাপদে রাখবেন।
(সাওয়াবুল আ’মাল, পৃঃ নং ১২৫)।
✅১২। সূরা “আল ক্ব-রিআ” -এর মাধ্যমে তদবীর:
• যে কোন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে হাজত পূরণের লক্ষ্যে এ সূরা একশত আশি বার
তিলাওয়াত করলে তা কার্যকরী হবে। (দারমন ব কোরআন, পৃঃ নং ১৬০)।
• রিযিক বৃদ্ধি ও বিস্তৃতির জন্যে এ সূরা লিখে সঙ্গে রাখলে উপকার
হয়।(দারমন ব কোরআন, পৃঃ নং ১৬০)।
• হাযরাত রাসূল (সা.) ও হাযরাত ইমাম জাফার সাদিক (সালামুল্লাহি আলাইহি) থেকে বর্ণিত আছে যে, তারা বলেছেনঃ “যদি ব্যবসায়ে মন্দা বাজার ও বেচা
কেনায় স্থবিরতার শিকার ব্যক্তি সূরা আল ক্ব-রিআ লিখে সঙ্গে রাখে তাহলে
আল্লাহ তায়ালা তার ব্যবসায়ের মন্দা দূর করতঃ কেনা বেচায় জমজমাট করে
দিবেন।”

(তাফসীর আল বুরহান, খন্ড ৫, পৃঃ নং ৭৩৯)।====================

Related Post

সূরা ইয়াসিন তিলাওয়াতকারীর মর্যাদা

Posted by - February 15, 2022 0
https://www.youtube.com/watch?v=3fJGGI9Y9tY হযরত মুহাম্মাদ মুস্তাফা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহি ওয়া সাল্লামঃ ✍️“সূরা ইয়াসিন তিলাওয়াতকারী আল্লাহর নিকট মর্যাদাবান আখ্যায়িত হয়ে থাকেন। সূরা…

সূরা আল ফালাক্ব-এর বঙ্গানুবাদ

Posted by - August 11, 2019 0
(আমি) আল্লাহর নামে (শুরু করছি), যিনি রাহমান (পরম করুণাময় সকল সৃষ্টির জন্যে), যিনি রাহিম (অসীম দয়াবান কিছু বিশেষ ব্যক্তিদের জন্যে)।…

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *