দোয়া খিজির (আঃ)

3207 0

দোয়া খিজির (আঃ)❣‌

বিসমিল্লা-হির রহমা-নির র-হীম

🌹আল্ল-হুম্মা সাল্লি আ’লা মুহাম্মাদ ওয়া আলে মুহাম্মাদ🌹

 
😰হে আল্লাহ! আমি তোমার কাছে আবেদন জানাই তোমার ‘রহমত’-এর উসিলায়, যা সব কিছুর উপর ছেয়ে আছে।
 
😰(হে আল্লাহ!) আমি তোমার কাছে আবেদন জানাই তোমার সেই মহাশক্তির উসিলায়, যা দিয়ে তুমি সব কিছু পদানত করো এবং যে শক্তির কাছে সব কিছু মাথা নত করে ও দূর্বল হয়ে যায়।
 
😰(হে আল্লাহ!) আমি তোমার কাছে আবেদন জানাই তোমার শক্তিমত্তার উসিলায়, যা দিয়ে তুমি সব কিছু পরাজিত করো।
 
😰(হে আল্লাহ!) আমি তোমার কাছে আবেদন জানাই তোমার মহামর্যাদার উসিলায়, যার সামনে কোন কিছুই দাঁড়াতে পারে না।
 
😰(হে আল্লাহ!) আমি তোমার কাছে আবেদন জানাই তোমার মহত্ত্বের উসিলায়, যা সব কিছুকে ঘিরে রেখেছে।
 
😰(হে আল্লাহ!) আমি তোমার কাছে আবেদন জানাই তোমার রাজত্বের উসিলায়, যা সব কিছুর উপর ক্ষমতাবান।
 
😰(হে আল্লাহ!) আমি তোমার কাছে আবেদন জানাই তোমার চিরস্থায়ী সত্তার উসিলায়, যা সব কিছু শেষ হয়ে যাবার পরও বিরাজমান থাকবে।
 
😰(হে আল্লাহ!) আমি তোমার কাছে আবেদন জানাই তোমার নামসমূহের উসিলায়, যা সব কিছুর মূলে অবস্থান করছে।
 
😰(হে আল্লাহ!) আমি তোমার কাছে আবেদন জানাই তোমার মহাজ্ঞানের উসিলায়, যা সব কিছুকে ঘিরে রেখেছে।
 
😰(হে আল্লাহ!) আমি তোমার কাছে আবেদন জানাই তোমার সত্তার নূরের উসিলায়, যার মাধ্যমে সব কিছু আলোকিত হয়েছে।
 
😰হে নুর! হে মহাপবিত্রময়! হে সব প্রথমেরও প্রথম। হে সব শেষেরও শেষ সত্তা।
 
😰হে আল্লাহ! তুমি আমার ঐ সব পাপ ক্ষমা করে দাও যা পাপ করার বাধাকে সরিয়ে দেয়। হে আল্লাহ! তুমি আমার ঐ সব পাপ ক্ষমা করে দাও যা দু:খ-কষ্ট ডেকে আনে।
 
😰হে আল্লাহ! তুমি আমার ঐ সব পাপ ক্ষমা করে দাও যা নেয়ামতগুলোকে পরিবর্তন করে দেয়।
 
😰হে আল্লাহ! আমার ঐ সব পাপ ক্ষমা করে দাও যা দোয়া কবুল হওয়ার পথে বাঁধা হয়ে দাঁড়ায়।
 
😰হে আল্লাহ! আমার ঐ সব পাপ ক্ষমা করে দাও যা বালা-মুসিবত ডেকে আনে।
 
😰হে আল্লাহ! আমার কৃত সব গুনাহ তুমি ক্ষমা করে দাও এবং আমার কৃত সব ত্রুটি তুমি মাফ করে দাও।
 
😰হে আল্লাহ! আমি তোমার জিকিরের মাধ্যমে তোমার কাছে আসতে চাই আর তোমার দরগাহে তোমার-ই শাফায়াত কামনা
করছি।
 
😰(হে আল্লাহ!) আমি তোমার দানশীলতার উসিলায় তোমার কাছে আবেদন করছি, আমাকে তোমার নিকটবর্তি করে নাও এবং তোমার প্রতি শুকরিয়া জানানোর তৌফিক দিয়ে দাও আর তোমার যিকির আমার উপর ইলহাম করে দাও।
 
😰হে আল্লাহ! আমি তোমার কাছে একজন অনুগত, বিনয়ী ও ভীতু মানুষের মত আবেদন জানাই, যেন তুমি আমার বিষয়টা সহজভাবে নাও এবং আমার প্রতি দয়া করো আর আমি যেন তোমার নির্ধারিত দানে সন্তুষ্ট থাকতে পারি এবং যেন সকল পরিস্থিতিতে বিনয়ী থাকতে পারি।
 
😰হে আল্লাহ! আমি তোমার কাছে একজন চরম অভাবী ব্যক্তির মত আবেদন জানাই, যে ব্যক্তি তার কষ্টের সময় তোমার কাছে নত হয়ে হাজত কামনা করছে এবং যে ব্যক্তি তোমার কাছে বিদ্যমান (মহাপ্রাচুর্য) দেখে তোমার প্রতি আকৃষ্ট হয়েছে।
 
😰হে আল্লাহ! বিশাল তোমার সাম্রাজ্য, তোমার মর্যাদা অনেক উপরে এবং তোমার পরিকল্পনা রয়েছে লুকায়িত।
 
😰(হে আল্লাহ!) তোমার ক্ষমতা প্রকাশিত, তোমার শক্তি সবকিছুর উপর বিজয়ী, তোমার ক্ষমতা সব জায়গায় ছড়িয়ে আছে। (তাই), তোমার রাজত্ব থেকে পলায়ন সম্ভব নয়।
 
😰(হে আল্লাহ!) তুমি ছাড়া আমার পাপ ক্ষমা করার আর কাউকে পাচ্ছি না এবং আমার মন্দ কাজগুলো ঢেকে রাখার মত তুমি ছাড়া আর কেউ নেই।
 
😰(হে আল্লাহ!) আমার মন্দ কাজগুলোকে সদ্‌গুণে রূপান্তরিত করার জন্যেও তুমি ছাড়া আমার আর কেউ নেই।
 
😰(হে আল্লাহ!) তুমি ছাড়া আমার আর কোন ইলাহ নেই, তুমি অতিশয় পবিত্র এবং সকল প্রশংসা তোমারই।
 
😰(হে আল্লাহ!) আমি আমার নিজের উপর জুলুম করেছি এবং আমার অজ্ঞতার কারণে এ ধরনের দুঃসাহস করে ফেলেছি।
 
😰(হে আল্লাহ!) আমি যে নির্ভর করেছিলাম আমার প্রতি তোমার অতীত স্মরণ ও দয়ার উপর। হে আল্লাহ! হে আমার মাওলা! আমার কত মন্দ কাজকে তুমি ঢেকে দিয়েছো এবং আমার কত কঠিন বিপদকে সহজ করে দিয়েছো।
 
😰(হে আল্লাহ!) তুমি কত বিচ্যুতি হতে আমাকে রক্ষা করেছো আর কত অপছন্দনীয় কাজ আমার কাছ থেকে দুরে সরিয়ে রেখেছো।
 
😰(হে আল্লাহ!) আমার কত সুন্দর সুন্দর প্রশংসা তুমি চারদিকে ছড়িয়ে দিয়েছো যার উপযুক্ত আমি ছিলাম না। হে আল্লাহ! আমার যাতনা অসহনীয় হয়ে গেছে আর আমার মন্দ অবস্থা সীমা ছাড়িয়ে গেছে এবং আমার আমল আমাকে অনেক নীচে নামিয়ে দিয়েছে।
 
😰(হে আল্লাহ!) পার্থিব আসক্তির শিকল আমাকে ধরাশায়ী করে ফেলেছে আর মিথ্যে আশার মরীচিকা আমাকে আমার কল্যাণ থেকে দুরে সরিয়ে রেখেছে।
 
😰(হে আল্লাহ!) দুনিয়া তার চাকচিক্য দিয়ে আর আমার নফস তার বিভিন্ন অপরাধ ওদূর্বলতার মাধ্যমে আমাকে তার প্রতারণার শিকারে পরিণত করেছে।হে আমার মনিব! তোমার মর্যাদার নামে আমি তোমার কাছে কাতর মিনতি জানাই, আমার বদ আমলগুলো যেন আমার দোয়াকে তোমার কাছে পৌঁছুতে বাঁধা সৃষ্টি না করে।
 
😰(হে আমার মনিব!) আমার সম্পর্কে তোমার জানা গোপন বিষয়গুলো প্রকাশ করে দিয়ে তুমি আমাকে অপমানিত করো না এবং আমার যেসব মন্দ কাজ ও আচরণ, অনবরত অলসতা ও অজ্ঞতা আর অতিরিক্ত লালসা ও উদাসীনতা, একান্তে হয়ে গেছে, তার কারণে আমার শাস্তি তরান্বিত করো না।
 
😰হে আল্লাহ! তোমার মর্যাদার উসিলায় আমি তোমার কাছে নিবেদন জানাই, সব অবস্থায় তুমি আমার প্রতি করুণা করো এবং সব কাজে আমার প্রতি দয়া পরবশ হও।
হে আমার ইলাহ! হে আমার রব! তুমি ছাড়া আমার কেউ নেই। আমি তোমার কাছেই বিপদ মুক্তি কামনা করছি এবং আমার কাজে সুদৃষ্টি দেয়ার আবেদন জানাচ্ছি।
 
হে আমার ইলাহ! হে আমার মাওলা! তুমি আমাকে কিছু হুকুম দিয়েছিলে কিন্তু তার পরিবর্তে সেখানে আমি আমার নফসের অনুসরণ করেছিলাম আর তাই শত্রুর ধোকা থেকে দূরে থাকতে পারিনি। অতএব, সে তার মনের মত করে আমাকে ধোকা দিয়েছে এবং ভাগ্য তাকে এ কাজে সাহায্য করেছে। আর এভাবে আমি তোমার দেয়া কিছু হুকুমেরে বিষয়ে সীমালংঘন করে তোমার কিছু আদেশ অমান্য করে ফেলেছি। অতএব ঐ সমস্ত বিষয়ে আমাকে (শাস্তি দেয়ার ব্যাপারে) তোমার যথার্থ অভিযোগ রয়েছে অথচ তোমার রায়ের বিরুদ্ধে আমার কোন অজুহাত নেই। এ কারণে তোমার হুকুম ও শাস্তি আমার উপর আবশ্যক হয়ে গেছে।
 
😰এখন, হে আমার প্রভু! আমি অপরাধী সাব্যস্থ হয়ে এবং আমার নিজের উপর বাড়াবাড়ি করার পর ক্ষমাপ্রার্থী ও অনুতপ্ত হয়ে, ভগ্ন হৃদয়ে নত অবস্থায়, নতশিরে অপরাধ স্বীকার করে তোমার কাছে ফিরে এসেছি। (কেননা), আমার কৃতকর্মের ফলাফল থেকে পলায়নের তো অন্য কোন পথ দেখছি না। আর আমার কাজের জন্যে তোমার ক্ষমা এবং তোমার অনন্ত করুণার রাজ্যে প্রবেশের অনুমতি ছাড়া কোন আশ্রয়স্থলও দেখছি না। হে আল্লাহ! আমার ত্রুটি ক্ষমা করে দাও। আমার কঠিন যন্ত্রনার উপর রহম করো আর আমাকে আমার পাপকাজের (ভারী) শৃঙ্খল থেকে মুক্ত করে দাও।
 
😰হে আমার রব! আমার দুর্বল শরীর, আমার কোমল ত্বক ও ভঙ্গুর হাড়গুলোর উপর রহম করো। আমার অস্তিত্ত সৃষ্টি, ব্যক্তিত্ব, প্রশিক্ষন, নেক কাজ ও আহার দানের হে সূচনাকারী! আমার প্রতি তোমার সর্বপ্রথম করুনা ও পুর্ববর্তি ভাল আচরণের কারণে আমাকে ক্ষমা করে দাও।
 
😰হে আমার ইলাহ্! হে আমার মনিব! হে আমার পালনকর্তা! তোমার তাওহীদে (আমার বিশ্বাস), তোমার মা’রেফাতে আমার অন্তর পরিপূর্ণ হওয়া, আমার জিহ্বা তোমার যিকিরে ব্যস্ত হওয়া, তোমার প্রেমে আমার অন্তর প্রেমার্ত হওয়া, সত্যিকারভাবে আমার ভুল স্বীকার করা এবং বিনয়ের সাথে তোমাকে প্রতিপালক হিসেবে ডাকার পরও তুমি কি আমাকে (দোজখের) আগুনে শাস্তি পেতে দেখবে? না, কখনোই না, যাকে তুমি লালন-পালন করেছো তাকে ধ্বংস করা কিংবা যাকে তুমি কাছে রেখেছিলে তাকে তোমার কাছ থেকে দুরে সরিয়ে দেয়া কিংবা যাকে তুমি আশ্রয় দিয়েছিলে তাকে বের করে দেয়া কিংবা যার অভিভাবকত্ব করে তুমি দয়া দেখিয়েছিলে তাকে যন্ত্রণার দিকে ঠেলে দেয়া থেকে তুমি অনেক মহান।
 
😰হে আমার মনিব! হে আমার ইলাহ্‌ ! হে আমার মাওলা ! (আমার জানতে ইচ্ছে করে) যেসব মুখ তোমার মহত্ত্বের সামনে সিজদাবনত হয়েছিল সেসব মুখকে অথবা যে সব জিহ্বা সত্যিকারভাবে তোমার একত্ব মেনে নিয়েছিল এবং সব সময় তোমার প্রতি কৃতজ্ঞ থেকেছিল সেসব জিহ্বাকে (দোজখের) আগুন কী পোড়াতে পারবে? অথবা যেসব অন্তর দৃঢ়তার সাথে জেনে-শুনে ভীত-বিহ্বল হয়ে তোমার প্রভুত্বকে মেনে নিয়েছিল সেসব হৃদয়কে (দোজখের) আগুন কী নিঃশেষ করে দিতে পারবে? কিংবা যেসব অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ আত্মসমর্পনের লক্ষ্যে তোমার ইবাদতের স্থানগুলোয় ধাবিত হয়েছিল এবং ক্ষমা ভিক্ষা করে তোমার প্রতি আনুগত্য প্রদর্শন করেছিল সেসব অঙ্গ-প্রত্যঙ্গকে কী (দোজখের) আগুন জ্বালানোর সাহস রাথে? না, তোমার ব্যাপারে এরকম ধারনা করা যেতে পারে না আর তোমার মহানুভবতা ও দয়ার ব্যাপারে এরকম খবর আমাদের কাছে পৌঁছেও নি।
 
😰হে দাতা, হে পালনকর্তা! এই দুনিয়ার সামান্য কষ্ট ও শাস্তিতে এবং দোজখের অধিবাসীদের উপর যে কষ্টদায়ক ঘটনা ঘটবে তার মোকাবেলায় আমার দূর্বল অবস্থা সম্পর্কে তুমি তো জানো। যদিও পৃথিবীর কষ্ট ও আযাব স্বল্পস্থায়ী, সামান্য ও দ্রুত নিঃশেষ হয়ে যায়। তাহলে আমি কেমন করে আখেরাতের এরকম কষ্ট ও শাস্তি সইতে পারবো? যে শাস্তির মেয়াদ দীর্ঘ ও চীরস্থায়ী। যার অধিবাসীদের থেকে শাস্তি কমানোও হবে না। কেননা, এ শাস্তি যে একমাত্র তোমার ক্রোধ, প্রতিশোধ ও অসন্তুষ্টি থেকে নিঃসরিত হয়েছে, যা আসমান-জমিনও সহ্য করতে অক্ষম? হে আমার প্রভু! তবে আমার কি হবে, আমি যে তোমার দুর্বল ও হীন বান্দা, আর ক্ষুদ্র, নগণ্য ও ম্রিয়মান দাসানুদাস?
 
😰হে আমার ইলাহ! হে আমার রব! হে আমার প্রভু! হে আমার মাওলা! কোন্‌ বিষয়ে আমি তোমার কাছে অভিযোগ জানাবো আর কোনটা নিয়ে আমি বিলাপ করে অশ্রু ঝরাবো? শাস্তির যন্ত্রনা ও তীব্রতার জন্যে নাকি শাস্তির মেয়াদের দীর্ঘতার জন্যে? অতএব, যদি তুমি আমাকে তোমার শত্রুদের সাথে শাস্তি দিতে নিয়ে যাও এবং তোমার আযাব ভোগকারী লোকদের সাথে আমাকেও একত্র করে ফেলো আর তোমার প্রেমিক ও অলী-আওলিয়াদের কাছ থেকে আমাকে পৃথক করে নাও তাহলে
 
😰হে আমার ইলাহ! হে আমার মনিব! হে আমার মাওলা! হে আমার প্রতিপালক! আমি না হয় তোমার এ শাস্তি সয়ে নিলাম, কিন্তু তোমার সাথে আমার এ বিচ্ছিন্নতা আমি কীভাবে সহ্য করবো? কিংবা ধরে নিই, আমি তোমার আগুনের উত্তাপ সইতে পারলাম
কিন্তু কেমন করে আমি তোমার দয়া ও মহানুভবতা থেকে দৃষ্টি সরিয়ে নেবো? অথবা কেমন করে আমি (দোজখের) আগুনের মাঝে বসবাস করবো যখন তোমার ক্ষমার উপর আমার আশা-ভরসা পুরোপুরী বিরাজ করবে? অতএব, তোমার সত্যিকার মর্যাদার শপথ করে বলছি,
 
😰হে আমার প্রভু! হে আমার মাওলা! তুমি যদি (দোজখের মধ্যেও) আমার বাক্‌শক্তি রক্ষা কর তাহলেও আমি সেখানে একজন দৃঢ় আশাবাদীর মতো আহাজারী করতে থাকবো। আমি তোমার কাছে একজন সহায়হীনের মতোই সাহায্য প্রার্থনা করতে থাকবো এবং প্রিয়জনকে হারানো ব্যক্তির মতোই আমি তোমার জন্যে আকুল হয়ে কাঁদবো। আর উচ্চ স্বরে তোমাকে ডাক ছেড়ে বলবো, হে মু’মিনদের অভিভাবক! হে আরেফদের চুড়ান্ত লক্ষ্য! হে সাহায্য প্রার্থীদের সাহায্যকারী! হে সত্যবাদীদের প্রাণপ্রিয় প্রেমিক! হে জগতসমূহের প্রভু, তুমি কোথায়? হে ইলাহ! তুমি সব কিছু থেকে অতিশয় পবিত্র। আর সকল প্রশংসা একমাত্র তোমারই। তুমি কি তোমার একজন মুসলমান বান্দার আওয়াজ শুনবে না? যে তোমার সাথে তার বিরোধীতার কারণে দোজখের মধ্যে বন্দী হয়ে আছে এবং তার গুনাহর কারণে শাস্তি ভোগ করছে আর পাপ ও অপরাধের কারণে সে জাহান্নামের বিভিন্ন স্তরের মধ্যে বন্দী হয়ে আছে? অথচ সে তোমার রহমতের উপর ভরসা করে তোমার কাছে ফরিয়াদ তুলেছে এবং উচ্চ স্বরে তাওহীদে বিশ্বাসী ব্যক্তির মতো তোমাকে ডাকছে আর তোমার প্রভুত্বের উসিলা ধরেছে।
 
😰হে আমার মাওলা! তোমার অতীত সহিষ্ণুতার উপর ভরসা রাখার পরও কেমন করে সেই ব্যক্তি আযাবের মধ্যে অবস্থান করবে? কেমন করে (দোযখের) আগুন তাকে কষ্ট দিবে যখন সে তোমার মহানুভবতা ও দয়ার প্রতি আশাবাদী? কেমন করে দোযখের আগুনের লেলিহান শিখায় সে পুড়তে থাকবে অথচ তুমি তার ফরিয়াদ শুনতে এবং তার অবস্থা দেখতে পাবে? কিভাবে আগুনের শিখা তাকে গ্রাস করে নিবে অথচ তুমি তো তার দূর্বলতাকে জানো? কিভাবে সে দোযখের বিভিন্ন স্তরগুলোর চাপে নিষ্পিষ্ট হতে থাকবে অথচ তুমি তো তার নিষ্ঠার কথা জানো? কেমন করে দোযখের প্রহরীরা তাকে কষ্ট দেবে যখন সে “ইয়া রব্ব”! বলে তোমাকে ডাকছে? কেমন করে তুমি তাকে দোযখের মাঝে ফেলে রাখবে যখন তার দৃঢ় বিশ্বাস যে, তোমার অপার করুণা তাকে এখান থেকে মুক্ত করে ছাড়বে? না, তোমার ব্যাপারে এমন ধারনা করা যেতে পারে না। আর এমন কাজ তোমার মহানুভবতার দৃষ্টিতেও পছন্দনীয় নয়। আর একত্ববাদীদের প্রতি তুমি যে করুণা ও অনুগ্রহ প্রদর্শন করো তার সাথেও এর কোন মিল নেই। অতএব, আমি নিশ্চিত হয়ে ঘোষণা করছি যে, যদি তুমি অবিশ্বাসীদের উপর শাস্তির ব্যবস্থা না করতে এবং তোমার শত্রুদের আবাস হিসাবে দোযখকে নির্ধারিত না করতে তাহলে তুমি আগুনকে শীতল ও প্রশান্তিময় করে দিতে আর সেখানে কারো ঘর ও বাসস্থান হিসেবে বিবেচিত হতো না। অথচ পবিত্র তোমার নামসমূহ। তুমি শপথ করেছো যে, সকল জ্বীন ও ইনসান কাফেরদের দিয়ে সে জায়গা পূরণ করবে এবং একে তোমার দুশমনদের চিরস্থায়ী নিবাসে পরিণত করবে। আর মহিমান্বিত তোমার প্রশংসা। তুমি শুরুতেই বলেছো এবং নেয়ামত ও করুণার সাথে ঘোষনা দিয়েছো যে, একজন মুমিন আর একজন পাপাচারী মানুষ কি সমান? না, তারা সমান হতে পারে না।
 
😰হে আমার ইলাহ! হে আমার মনিব! তোমার কাছে আমি আবেদন করছি, তোমার ঐ শক্তির উসিলা ধরে, যা দিয়ে তুমি সবার ভাগ্য নির্ধারণ করো এবং তোমার ঐ চূড়ান্ত ও কার্যকরী হুকুমের উসিলা ধরে, যা দিয়ে তুমি সবার উপর তোমার সিদ্ধান্ত কার্যকর করো। দয়া করে আমাকে এই রাতের এই প্রহরে ক্ষমা করে দাও ঐসব অপরাধ ও পাপ, যা আমি করেছি, ঐসব ঘৃণ্য কাজ, যা আমি গোপন রেখেছি, ঐসব অজ্ঞতাপূর্ণ কাজ, যা আমি প্রকাশ্যে কিংবা গোপনে, অন্ধকারে কিংবা দিবালোকে সম্পাদন করেছি। তাছাড়াও আমার অন্যান্য সব ধরনের ত্রুটি ক্ষমা করে দাও, যা লিখে রাখতে তোমার সম্মানিত লেখকদের আদেশ করেছো, যাদেরকে তুমি আমার সকল আমল লিখে রাখার জন্যে নিয়োগ করেছো এবং আমার উপর সকল অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের সাথে তাদেরকেও সাক্ষী হিসেবে নিয়োগ দিয়েছো আর তাদের পেছনে থেকে তুমি নিজেই আমার কাজের নিয়ন্ত্রণ করেছো। এমনকি তাদের কাছে যা গোপন তাও তোমার কাছে ছিল পরিষ্কার। সেগুলোকে তুমি তোমার করুণা দিয়ে গোপন করে রেখেছো আর তোমার মহানুভবতা দিয়ে ঢেকে রেখেছো। (আমি তোমার কাছে কামনা করছি) তোমার অবতীর্ণ সকল ভাল বিষয়, তোমার অনুগ্রহকৃত সকল করুণা, তোমার বিস্তৃত সকল কল্যাণ, তোমার প্রসারিত সকল রিজিক, সকল গুনাহর ব্যাপারে তোমার ক্ষমা এবং সকল ত্রুটির বিষয়ে তোমার আচ্ছাদন থেকে উপকৃত হবার জন্যে আমার তৌফিক বাড়িয়ে দাও।
 
😰হে আমার পালনকর্তা! হে আমার পালনকর্তা! হে আমার পালনকর্তা! হে আমার ইলাহ! হে আমার মনিব! হে আমার
মাওলা! হে আমার মুক্তির মালিক! হে আমার ভাগ্য নিয়ন্ত্রক! হে যিনি আমার যাতনা ও নিঃস্বতা সম্পর্কে পরিজ্ঞাত! হে আমার দুঃসহায়তা ও অনাহার সম্পর্কে পূর্ণ সচেতন সত্ত্বা! হে আমার পালনকর্তা! হে আমার পালনকর্তা! হে আমার পালনকর্তা! তোমার মহামর্যাদা ও পবিত্র সত্তা এবং মহান গুণাবলী ও নামসমূহের উসিলায় আমি তোমার কাছে মিনতি জানাই, আমার সমস্ত প্রহর, দিবা ও রাত্রি যেন তোমার যিকিরের মধ্য দিয়েই অতিবাহিত হয় এবং একাধারে যেন তোমার উদ্দেশ্যে সেবাব্রত থাকতে পারি আর আমার সকল আমল যেন তোমার কাছে গ্রহণযোগ্য হয়ে উঠে। এমনকি আমার আচরণ ও কথোপকথন সবই যেন একই লক্ষ্যে সম্পাদিত হয় এবং আমার সমগ্র জীবন যেন সব সময় তোমার খেদমতে নিয়েজিত থাকে।
 
😰হে আমার প্রভু! যার উপর আমার সমস্ত ভরসা, যার কাছে আমি আমার সমস্ত দুর্দশার কথা খুলে বলি, হে আমার পালনকর্তা! হে আমার পালনকর্তা! হে আমার পালনকর্তা! তোমার খেদমতের জন্যে আমার অঙ্গ-প্রতঙ্গকে শক্তিশালী করে দাও এবং তোমার দিকে ধাবিত হবার জন্যে আমার মনোবলকে দৃঢ় করে দাও আর তোমার প্রতি ভীতি ও সর্বক্ষণ তোমার খেদমতের ব্যাপারে দৃঢ় মনোবল সৃষ্টি করে দাও যেন আমি পূর্ববর্তীদের চেয়ে দ্রুত তোমার পানে অগ্রসর হতে পারি এবং সবার চেয়ে দ্রুততর তোমার কাছে পৌঁছুতে পারি আর যেন তোমার নৈকট্য লাভের সাধনায় আগ্রহীদের কাতারে অন্তর্ভুক্ত হতে পারি এবং বিশুদ্ধ অন্তরের অধিকারীদের মতোই আমি যেন তোমার নৈকট্যপ্রাপ্ত হতে পারি। আমি যেন দৃঢ় বিশ্বাসী ব্যক্তিদের ন্যায় তোমাকে ভয় করে চলতে পারি। আমি যেন মুমিনদের সাথে তোমার ছায়াতলে থাকতে পারি।
 
😰হে আল্লাহ্‌ ! যে আমার অনিষ্ট চায়, সেই অনিষ্ট তুমি তার দিকেই ফিরিয়ে দাও! আর যে আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে তাকেই তুমি ষড়যন্ত্রের শিকারে পরিণত করে দাও এবং আমাকে তোমার সর্বশ্রেষ্ঠ, সর্বনিকটতম ও একান্ত বিশেষ বান্দাদের অবস্থানে স্থান দান করো, যা তোমার অনুগ্রহ ছাড়া অর্জন করা সম্ভব নয়।
 
😰(হে আল্লাহ্‌!) তোমার উদারতা থেকে আমাকে একটু দান করো এবং তোমার মহানুভবতার দৃষ্টি আমার উপর নিক্ষেপ করো আর তোমার রহমতের মাধ্যমে আমাকে হেফাজত করো। আমার জিহ্বাকে সর্বক্ষণ তোমার যিকিরে থাকার তৌফিক দাও এবং আমার অন্তর তোমার প্রেমে কাতর ও অস্থির করে দাও। আর আমার অনুরোধ কবুল করে আমার প্রতি দয়া করো। আমার পদস্খলনগুলো মুছে দাও এবং আমার ত্রুটিগুলো মার্জনা করে দাও! কেননা, তুমিই তো তোমার বান্দাদেরকে তোমার ইবাদত করতে ও তোমার কাছে দোয়া চাইতে আদেশ করেছো আর সে দোয়া কবুলেরও নিশ্চয়তা দিয়েছো। তাই, হে আমার পালনকর্তা! তোমার দিকে আমি মুখ ফিরিয়েছি এবং তোমার দিকে আমি ভিক্ষার হাত উঠিয়েছি, হে আমার প্রতিপালক! অতএব, তোমার মর্যাদার কসম করে বলছি, আমার দোয়া কবুল করে নাও এবং আমার আশা পূরণ করে দাও। আর কিছুতেই আমার আশাকে হতাশায় পরিণত করে দিও না। তুমি আমাকে জ্বীন ও মানুষ শত্রুর অনিষ্ট থেকে রক্ষা করো।
 
😰হে(আল্লাহ)! যে তুমি দ্রুত সন্তুষ্ট হও, তুমি তাকে ক্ষমা করে দাও যার দোয়া ছাড়া অন্য কোন সম্বল নেই। কেননা, তুমি যা ইচ্ছে তাই করতে পার। হে (আল্লাহ! তুমি এমন প্রভু) যার নাম-ই ঔষধ, যার যিকির-ই আরোগ্য এবং যার আনুগত্য-ই সম্পদ।
 
😰(হে আল্লাহ!) রহম করো তার উপর যার মূলধন শুধুই আশা আর হাতিয়ার শুধুই কান্না। হে প্রচুর নেয়ামত দানকারী! হে সকল দুঃখ-কষ্ট দূরকারী! হে অন্ধকারে আতঙ্কিত ব্যক্তিদের আলোর দিশা! হে সর্বজ্ঞ! যাকে কখনো শিখানো হয়নি। মুহাম্মাদ ও আলে মুহাম্মাদের উপর দরুদ প্রেরণ করো।
 
😰(হে আল্লাহ!) আমার প্রতি তুমি তা-ই করো যা করা তোমাকে মানায়। আল্লাহর পক্ষ থেকে দরুদ ও রহমত প্রেরীত হোক তাঁর রাসূল ও রাসূলের আলের মধ্য হতে বরকতময় ইমামদের উপর এবং তাঁদের উপর অফুরন্ত সালাম ও অভিবাদন বর্ষিত হোক।🌹
 
আমিন! ইয়া রাব্বাল আ’লামিন।

Related Post

মরহুম পিতা-মাতার কাছে খাসভাবে সাওয়াব রেসানির জন্যে বিশেষ নামাজ

Posted by - September 18, 2019 0
🔊 আজ রাত, বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত… 🕯🕯🕯 বৃহস্পতিবার আসলেই আমাদের মরহুমদের কথা মনে পড়ে যায়ঃ এই হাদিস পড়ার সাওয়াব 🎁…

রাতে ঘুমোনোর পূর্বের দোয়া, ওযিফা

Posted by - August 28, 2019 0
•✦✨ রাতে ঘুমোনোর পূর্বের ওযিফা ✨✦• 1⃣ তিনবার সূরা ইখলাস তিলাওয়াত, যা এক খতম কোরআন পড়ার সমান। 2⃣ নিজেকে হাশরের মাঠে নবীদের শাফায়াত লাভের…

হাজত পূরণের দোয়া

Posted by - August 11, 2019 0
১। হাজত পূরণের দোয়াঃ 🖊 যদি কেউ ৪০ বার সূরা আদ্ব দ্বুহা, মাঝখানে কোন কথা ছাড়া, কেবলামূখী ও পাক পবিত্র…

হাজত পূরণের বিশেষ একটি দোয়া

Posted by - August 18, 2019 0
☘️আল্লামা শেইখ তাক্বীউদ্দীন ইব্রাহীম কাফআমী (মৃত্যু ৯০০ হিঃ), “বালাদুল আমিন ওয়াদ দির্-উল হাসিন” কিতাবে 🌹ইমাম আলী ইবনুল হুসাইন যাইনুল আবেদীন(আ:)🌹-এর…

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *