হযরত ইমাম হুসাইন ইবনে আলী আশ্ শাহিদ আলাইহি সালাওয়াতুল্লাহঃ

1816 0

🔊 হযরত ইমাম হুসাইন আলাইহি সালাওয়াতুল্লাহঃ

“তোমার প্রতি মানুষের মুখোপেক্ষীতা আল্লাহর নেয়ামতগুলোর অন্যতম। এ নেয়ামতের ব্যাপারে বিরাগভাজন হয়ো না।”
📚বিহারুল আনওয়ার, খণ্ড ৭৪, পৃ নং ২০৫

🔊 হযরত ইমাম হুসাইন আলাইহি সালাওয়াতুল্লাহঃ

✍ “জনসাধারণ দুনিয়ার গোলাম। তারা দ্বীন জিহ্বার মধ্যেই সীমাবদ্ধ রাখে। যতক্ষণ পর্যন্ত তারা জানবে যে, এরূপ দ্বীন চর্চা তাদের জীবনে কোন ক্ষতি বয়ে আনবে না ততক্ষণ পর্যন্ত তারা দ্বীনের চারপাশে
ঘুরাফেরা করে। কিন্তু যখন তারা কোন পরীক্ষার সম্মুখীন হয় তখন খুব কম সংখ্যকই দ্বীনের পথে অবিচল থাকে।”
📚তুহাফুল উক্বুল, পৃঃ নং ২৪৪।

🔊 হযরত ইমাম হুসাইন আলাইহি সালাওয়াতুল্লাহ, তাঁর প্রিয় পূত্র ইমাম যাইনুল আবেদীনকে (আ.) বলেনঃ

“হে বৎস! যে ব্যক্তির আল্লাহ ব্যতীত অন্য কোন সাহায্যকারী নেই তার উপর যুলুম করা থেকে বিরত থাকো। আল্লাহ এ ধরনের মজলুমের ফরিয়াদ অতি শীঘ্রই গ্রহণ করে থাকেন।”
(তুহাফুল উকুল, পৃঃ নং ২৪৬)।

🔊 হযরত ইমাম হুসাইন আলাইহি সালাওয়াতুল্লাহ-কে প্রশ্ন করা হলোঃ “রাত্রি কেমন কাটালেন?” তিনি উত্তরে বলেনঃ

“আমি এমন অবস্থায় সকাল করেছি যখন আমার রব (প্রতিপালক) আমার কাজ-কর্মের উপর সর্বক্ষন নজর রাখছেন, যখন জাহান্নামের আগুন আমাকে ধাওয়া করে চলছে এবং মৃত্যু হাতছানি দিয়ে ডাকছে আর হিসেব-নিকেশ (পৃথিবীতে এবং ক্বিয়ামতের দিবসের জন্যে) আমাকে ঘিরে রেখেছে আর এভাবে আমি আমার কর্ম অনুযায়ী ফল ভোগ করবো। এরকমটি নয় যে, সব কিছু আমার পছন্দ অনুসারে আমার সামনে আসবে আর যা কিছু অপছন্দ করি তা থেকে নিজেকে রক্ষা করতে পারবো। কেননা সকল কিছুর পরিচালনা তাঁর হাতে। তিনি যদি চান আমাকে আযাব দিতে পারেন। আবার যদি চান ক্ষমা করে দিতে পারেন। সুতরাং আমার চেয়ে বড় অভাবী কে হতে পারে?”
(বিহারুল আনওয়ার, খন্ড ৭৮, পৃঃ নং ১১৬)।

🔊 হযরত ইমাম হুসাইন আলাইহি সালাওয়াতুল্লাহঃ
“হে আল্লাহ! যে তোমাকে পেয়েছে, সে কি হারিয়েছে? আর যে তোমাকে হারিয়েছে, সে কি পেয়েছে?”

📚হজ্বের মধ্যে আরাফাতের ময়দানে ইমাম হুসাইন কর্তৃক পঠিত দোয়া আল আরাফাহ্-এর একাংশ।

🔊 হযরত ইমাম হুসাইন আলাইহি সালাওয়াতুল্লাহঃ
“আমার নিহত হওয়ার কারণে বহু মানুষের চোখের জলে বুক ভাসবে। যে কোন মুমিন ব্যক্তি আমাকে স্মরণ করবে তার চোখ দিয়ে অশ্রু গড়িয়ে পড়বেই।”

📚বিহারুল আনওয়ার, খন্ড ৪৪, পৃ: নং ২৮৪।

🔊 হযরত ইমাম হুসাইন আলাইহি সালাওয়াতুল্লাহঃ

“জেনে রাখো! একদল মানুষ জান্নাতের লোভে আল্লাহর ইবাদত করে থাকে। তাদের ইবাদত ব্যবসায়ীদের ইবাদতের ন্যায়। অন্য একদল লোক জাহান্নামের ভয়ে ইবাদত করে থাকে। তাদের ইবাদত দাসদের ইবাদতের সমতুল্য। অপর একদল আল্লাহর শোকর আদায়ের লক্ষ্যে ইবাদত করে থাকে। তাদের ইবাদত মুক্ত মানুষদের ইবাদত। আর এটাই সর্বোত্তম ইবাদত।”
📚বিহারুল আনওয়ার, খন্ড ৭৮, পৃঃ নং ১১৭।

🔊 হযরত ইমাম হুসাইন (আলাইহি সালাওয়াতুল্লাহ):

شیعتى ما ان شربتم عذب ماء فاذکرونى او سمعتم بغریبا وشهید فاندبونى

✍”হে আমার অনুসারীরা! যখন ঠান্ডা শীতল ও সুস্বাদু পানি পান করবে তখন আমার কথা স্মরণ করো এবং যখন কোন অসহায় অথবা কোন শাহাদাত বরণকারী ব্যক্তির সংবাদ প্রাপ্ত হও, আমার কথা স্মরণ করে কান্নাকাটি ও আর্তনাদ করো।

📚শুশতারী, আল খাসায়িসুল হুসাইনিয়্যা, পৃঃ নং ৯৯।

🔊 ইমাম হুসাইন সালাওয়াতুল্লাহি ওয় সালামুহু আলাইহি –এর ‎কাছে প্রশ্ন করা হয়েছিল যে, “মৃত্যু কী?” তিঁনি উত্তরে বলেছিলেন, ‌‎

“মৃত একজন ‎মুমিনের জন্যে তার সামনে আগত সর্বোত্তম ‎আনন্দ। মৃত্যু এমন এক সেতু যা তোমাদেরকে এ দুনিয়ার ‎নানাবিধ যন্ত্রনাদায়ক সমস্যা থেকে আরাম-‎আয়েশ ও আল্লাহর ‎অনুগ্রহের দিকে পৌছিয়ে দেয়। যেমনি করে আল্লাহর শত্রুদের ‎জন্যে প্রাসাদ থেকে কারাগারে স্থানান্তর করা হয়।”*

🔰 ফাইজ কশনী, মোল্লা মুহাম্মাদ মুহসিন, মাহাজ্জাতুল বাইদ্বা, খণ্ড ‎৮, পৃঃ নং ২৫৫।

🔊 ইমাম হুসাইন(আ.):

اِنِّیْ لَمْ اَخْرُجْ اَشَراً وَ لاَ بَطَرًا وَ لاَ ظَالِماً وَ لاَ مُفْسِداً، وَ اِنَّمَا خَرَجْتُ لِطَلَبِ الاِصْلاَحِ فِیْ اُمَّةِ جَدِّیْ  اُریدُ اَن آمُرَ بالْمَعْرُوْفِ وَ اَنْهَیْ عَنِ الْمُنْکَرِ وَ اَسِیْرَ بِسِیْرَةِ جَدِّیْ وَ اَبِیْ

“”আমি কোনো ধন-সম্পদ বা ক্ষমতার লোভে কিংবা গোলযোগ সৃষ্টির জন্যে অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাড়াইনি, বরং আমি শুধু আমার নানাজানের উম্মতের মধ্যে অবস্থিত ভ্রান্তিগুলোর সংস্কার করতে চেয়েছি। আর আমি সৎ কাজের আদেশ ও অসৎ কাজে নিষেধ করতে চাই এবং আমার নানাজান যে পথে চলেছেন আমিও সে পথে চলতে চাই।”
🔰মাকতালু খরাযমী, খণ্ড ১, পৃঃ নং ১১৮

✨সৃষ্টির উদ্দেশ্যঃ
🌸 *(যামানার ইমামকে গভীরভাবে চেনা=যামানার ইমামের মা’রিফাত হাসিল করা)*🌸
❤ইমাম হুসাইন❤আলাইহিস সালাম তাঁর সাহাবীদের সামনে বলেনঃ
⭐️”হে মানুষেরা! নিশ্চয় আল্লাহ তাঁর যিকির ও স্মরণকে সুপ্রতিষ্ঠিত করেছেন।
🔸জেনে রাখো! আল্লাহ তাঁর বান্দাকে তাঁর মা’রিফাত হাসিল করা ছাড়া অন্য কোন উদ্দেশ্যে সৃষ্টি করেননি।
🔸যদি সে আল্লাহর মা’রিফাত হাসিল করে নেয় তাহলে নিঃসংকোচে সে তাঁর ইবাদতে মশগুল হয়ে যায়।
🔸আর সে যখন তাঁর ইবাদতে ব্যস্ত হয়ে যায় তখন তিঁনি ছাড়া অন্য সকল বান্দাদের প্রতি ইবাদত করার ব্যাপারে সে অমুখাপেক্ষী হয়ে যায়।”
🚫এ পর্যায়ে জনৈক ব্যক্তি বলে উঠেঃ
🌹”হে আল্লাহর রাসূলের সন্তান! আমার পিতা-মাতা আপনার জন্যে উৎসর্গ হোক,
দয়া করে বলবেন,
আল্লাহর মা’রিফাত-এর অর্থ কী?”
🌹 *ইমাম বলেনঃ*
“আল্লাহর মা’রিফাত-এর অর্থ নিজ নিজ যামানার ইমামের মা’রিফাত হাসিল করা= নিজ নিজ যামানার ইমামকে গভীরভাবে চেনা, যাঁর আনুগত্য করা তাদের জন্যে ফরজ করা হয়েছে।”👁👁
📚ইলালুশ শারায়ি’, খণ্ড ১, বাব ইল্লাতি খালক্বিল খালক্ব ওয়া ইখতিলাফি আহওয়ালিহিম… ,পৃঃ নং ৯।

🔳 ইমাম হুসাইন(আ.):
“তোমার প্রতি মানুষের মুখোপেক্ষীতা আল্লাহর নেয়ামতগুলোর অন্যতম। এ নেয়ামতের ব্যাপারে বিরাগভাজন হয়ো না।”
📚বিহারুল আনওয়ার, খণ্ড ৭৪, পৃ নং ২০৫

✅একদা জনৈক ব্যক্তি ইমাম হুসাইনের কাছে দুনিয়া ও আখেরাতের মঙ্গল ও কল্যাণকর কাজ সম্পর্কে লিখার জন্যে আরজ পেশ করলে তিনি উত্তরে লিখেনঃ “আল্লাহর নামে, যিনি অতিশয় দয়ালু ও মেহেরবান। তারপর এই যে, যে ব্যক্তি মানুষের ক্রোধের প্রতি ভ্রক্ষেপ না করে আল্লাহর সন্তুষ্টি কামনায় কাজ করে
যায় আল্লাহ মানুষের সাথে সংশ্লিষ্ট কার্যাবলীর ব্যাপারে তার সকল সমস্যার সমাধান করে দেবেন। আর যে ব্যক্তি মানুষকে সন্তুষ্ট করতে গিয়ে আল্লাহকে রাগাম্বিত করে তোলে আল্লাহ তাকে মানুষের মাঝেই ছেড়ে দেন, ওয়াসসালাম।”
।📚(আমালী; সাদুক্ব, পৃঃ নং ১২১)

✅জনৈক ব্যক্তি ইমাম হুসাইনের (আ.) কাছে আরজ করলো, ইয়া ইবনা রাসুলুল্লাহ্,
আমি গুনাহর মধ্যে জর্জরিত। আমার এ অবাধ্যতা থেকে পালানোর কোন পথ নেই। আমাকে আপনি উপদেশ দিন। তখন ইমাম বলেনঃ “পাচঁটি কাজ আঞ্জাম দেয়ার পর তুমি যত ইচ্ছা পাপ করে যাও। প্রথমটি হচ্ছেঃ “আল্লাহর রিযিক ভক্ষন করো না অতঃপর যত খুশী গোনাহ্ করো।” দ্বিতীয়ঃ “আল্লাহর কর্তৃত্ব থেকে বেরিয়ে যাও তারপর যত পার গোনাহ্ কর।” তৃতীয়ঃ “এমন স্থানে চলে যাও যেখানে আল্লাহ্ তোমাকে দেখবেন না, অতঃপর যত পার গোনাহ্ কর।” চতুর্থঃ “যখন মালাকুল মৌত (মৃত্যুর ফেরেস্তা) তোমার রুহ্ কবজ করতে আসবে তখন যদি তুমি নিজেকে রক্ষা করতে পার তাহলে যত খুশী গোনাহ কর।” পঞ্চমঃ “যখন আজাবের ফেরেস্তা তোমাকে আগুনে নিক্ষেপ করবে তখন যদি তা থেকে বাচঁতে পার তাহলে যত ইচ্ছা পাপ করে যাও।”
(বিহারুল আনওয়ার, খন্ড ৭৮, পৃঃ নং ১২৬)।
✅ইমাম হুসাইন (আ.): “হে মানুষ, তোমার পুঁজি তোমার আয়ুষ্কাল। তোমার আয়ু থেকে যতদিন চলে যাচ্ছে ততই তোমার মূলধন সমাপ্তির দিকে ধাবিত হচ্ছে।”
(বালাগ্বাতুল হুসাইন, পৃঃ নং ৮৭।)📚

✅ইমাম হুসাইন(আ.): “জান্নাত ব্যতীত অন্য কিছুতে তোমাদের কোন মূল্য হয় না। সুতরাং জান্নাত ছাড়া অন্য কিছুর মোকাবিলায় নিজেকে বিক্রি করে দিও না। যে ব্যক্তি দুনিয়া পেয়েই সন্তুষ্ট হয়ে যায় সে সর্বনিকৃষ্ট জিনিষ নিয়েই সন্তুষ্ট হয়।”
(বালাগ্বাতুল হুসাইন, পৃঃ নং ৩০৮)।
✅ইমাম হুসাইন (আ.): “হক্বের অনুসরণ ব্যতীত আক্বলের পরিপূর্ণতা আসে না।”
(বালাগ্বাতুল হুসাইন, পৃঃ নং ৩০৭)।
✅ইমাম হুসাইন(আ.): “অতীত অনুগ্রহের কৃতজ্ঞতা আল্লাহর পক্ষ থেকে নতুন নেয়ামত ডেকে আনে।”
(বালাগ্বাতুল হুসাইন, পৃঃ নং ২৯৩)।
😭✅ইমাম হুসাইন(আ.):  “যে ব্যক্তি আল্লাহকে ভয় পায় তাকে ছাড়া অন্য কাউকে বিশ্বাস করো না।”
(বালাগ্বাতুল হুসাইন, পৃঃ নং ২৯২)।
😭✅ইমাম হুসাইন(আ.)-কে প্রশ্ন করা হলো যে, মর্যাদা কিসে হয়? তিনি বলেনঃ “জিহ্বার মালিক হলে (অর্থাৎ যে কথায় আল্লাহ অসন্তুষ্ট হবেন সে কথা থেকে
বিরত থাকলে) এবং দয়া পরবশ হলে (অর্থাৎ আল্লাহর বান্দাদের প্রতি দয়া ও
অনুগ্রহ করলে)।”
(বালাগ্বাতুল হুসাইন, পৃঃ নং ৩৩২)।📚😭

 

Related Post

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *