স্মৃতিতে মহররম
– আশিক পারভেজ মিনার
মহররম নিয়ে লিখতে বসেছি
কি লিখবো মহররম নিয়ে
আমার কলম স্থির, স্তব্ধ, নির্বাক।
বার বার আমার স্মৃতির ঘোড়া ছুটে যায় কারবালার প্রান্তরে
ঐ যে ইমাম হুসাইন বসে আছেন তাবুর ভিতরে বেদনার্ত নয়নে
ঐ যে দেখা যায় এযিদের বাহিনী
শোনা যায় হুংকার আহবান যুদ্ধের।
কাসেম তৈরী, গায়ে তার যুদ্ধের সাজ
ইমাম হুসাইন তাকান
হে পুত্র ভাতিজা কাসেমের পানে
মনে পড়ে যায় তার, গত রাতে বলা কাসেমের কথা
ইমাম হুসাইন বলেছিলেন গতরাতে
সংগীদের নিবেদিত প্রশ্নের উত্তরে
আগামীকাল আমার সবাই শহীদ হবো যুদ্ধের ময়দানে।
শোনে মাত্র কথা
তের বছরের বালক প্রশ্ন করেছিলেন
হে চাচাজান! আমিও কি আগামীকাল শহীদদের মধ্যে আছি?
জবাবে চাচাজি বলেছিলেনঃ
বলতো ভাতিজা, হে কাসেম!
মৃত্যুর স্বাদ তোমার কাছে কেমন লাগে?
জবাবে বলেছিলেন কাসেম,
চাচাজি! আমার কাছে এ স্বাদ
মধুর চেয়েও মিষ্টি লাগে।
আমি মহররম নিয়ে লিখতে বসেছি
কি লিখবো মহররম নিয়ে
আমার কলম স্থির, স্তব্ধ, নির্বাক।
ঐ যে শোনা যায় যুদ্ধের বাজনা কারবালায়
এযিদের বাহিনীর হুংকার
যুদ্ধের আহবান।
আলী আকবর তৈরী, গায়ে তার যুদ্ধের সাজ
আলী আকবর তাকান তার পিতার দিকে
বলেনঃ আমাকে এবার অনুমতি দিন
যুদ্ধে গিয়ে নিজের জীবনকে কুরবানি দিতে চাই
ইমাম হুসাইন হাত তুলেন আকাশে
বললেন তিনিঃ হে আল্লাহ্! তুমি সাক্ষী থেকো
আমি এমন এক যুবককে পাঠালাম যুদ্ধে
ঠেলে দিলাম মৃত্যুর দিকে
যে ছিল সকল দিক থেকে
মহানবী(সাঃ)- এর মতো।
অবশেষে আলী আকবর চলে গেলেন যুদ্ধে
শত্রু নিধনের এক পর্যায়ে ফিরে আসলেন তিনি
বললেনঃ আব্বাজান! পিপাসার জ্বালায় মরে গেলাম আমি
যদি থাকে তবে এক ফোটা পানি দিন
প্রতিত্তোরে বললেন ইমাম,
যাও, যুদ্ধ করো, বিলম্ব হবে না
খুব শিঘ্রই তোমার পিতৃপুরুষের কাছে গিয়ে
পানি পান করে তৃপ্ত হবে।
মহররম নিয়ে লিখতে বসেছি
কি লিখবো মহররম নিয়ে
আমার কলম স্থির, স্তব্ধ, নির্বাক।
ঐ যে যয়নব দৌড়ায়
প্রাণপ্রিয় ভাইপোর শিয়রের কাছে
সজোরে ধ্বনি তোলেন তিনি
হে আমার প্রাণপ্রিয় ভাইপো!
ইয়া রাসুলাল্লাহ! এই তো আলী আকবর
তোমার হুসাইন, তোমার প্রিয়জন, তোমার দেহের অংশ।
মহররম নিয়ে লিখতে বসেছি
কি লিখবো মহররম নিয়ে
আমার কলম স্থির, স্তব্ধ, নির্বাক।
ঐ যে উবায়দুল্লাহর দুত দৌড়ায়
ইমাম হুসাইনের কাছে,
এবার করতেই হবে আত্নসমর্পন ইমাম হুসাইনকে।
বললেন ইমামঃ
আল্লাহ আমার নত হওয়াকে পছন্দ করেন না
পছন্দ করেন না তার রাসুল,
এমনকি অনাগত কালের মুমিনরা
চায় না ইমাম হুসাইন অন্যায়ের কাছে করুক নতি স্বীকার।
আমি হুসাইন! আমি নতি স্বীকার করি না
আমি শেরে খোদা আলীর কোলে বড় হয়েছি
আমি রাসুলের কন্যা ফাতিমার বুকের দুধ খেয়েছি
আমি নতি স্বীকার করি না
আমি এ বিপ্লবের বানীকে লিখে যেতে চাই
চির অমর করে
আমার বুকের তাজা রক্ত দিয়ে
যতদিন এ স্রোত ফোরাতে বহমান
ততদিন হুসাইনের স্মৃতি থাকবে অম্লান।
হে হুসাইন ইমাম!
অবশেষে তোমাকে জানাই সালাম, সালাম