সূরা “আল ক্বোরাইশ” সম্পর্কে সামগ্রিক কিছু তথ্য

754 0

(আমি) আল্লাহর নামে (শুরু করছি), যিনি রাহমান (পরম করুণাময় সকল সৃষ্টির জন্যে), যিনি রাহিম (অসীম দয়াবান কিছু বিশেষ ব্যক্তিদের জন্যে)।

১। কোরআনের বর্তমান উসমানী মুসহাফ এর ক্রমিক নম্বর অনুসারে এ সূরাটি একশত ছয়তম।
২। নাযিল হওয়ার ধারাবাহিকতা অনুসারে এ সূরাটি উনত্রিশ নম্বরে অবস্থিত।
৩। নাযিলের স্থানটি হচ্ছে পবিত্র মক্কা নগরী।
৪। আয়াতের সংখ্যা ৪।
৫। এ সূরাটির অভ্যন্তরে অবস্থিত শব্দ সংখ্যা ১৭।
৬। এ সূরাটির অভ্যন্তরে মোট বর্ণ ব্যবহৃত হয়েছে ৭৬ টি।
৭। এ সূরাটির অভ্যন্তরে “আল্ল-হ” শব্দটি ব্যবহৃত হয়েছে ১ বার।
৮। “সূরা আল ক্বুরাইশ” ক্বুরাইশ গোত্রের ব্যাপারে অবতীর্ণ হয়েছে।
৯। সূরাটির অন্য নামঃ এ সূরার আরেকটি নাম হচ্ছে “ইলাফ”। এ শব্দটি “উলফাত” শব্দ থেকে নেয়া হয়েছে। যার অর্থ হচ্ছে, মানুষের অন্তরে মহব্বত ও বন্ধুত্ব সৃষ্টি করা।
 

১০। সূরাটির বৈশিষ্ট্য:

“হস্তী আরোহীদের” শায়েস্তা করার কারণে ক্বুরাইশদের মাঝে ঐক্য ও পারস্পরিক ভালবাসা সৃষ্টি হয়েছিল। ফলে তাদের সামষ্টিক জীবন আরো বেশী বেগবান হয়।
 
১১। সামগ্রিকভাবে সূরা “আল ক্বুরাইশ”-এ ক্বুরাইশদেরকে খোদায়ী অনুগ্রহ ও নেয়ামতসমূহ দানের বিষয়টি পূনরাবৃত্তি করা হয়েছে।”
 

১২। সূরা “আল ক্বুরাইশ”-এর তিলাওয়াতের ফযিলত:

হাযরাত রাসূল(সা.): “যে ব্যক্তি সূরা আল ক্বুরাইশ তিলাওয়াত করবে আল্লাহ তায়ালা তাকে প্রতি বার সূরা আল ক্বুরাইশ তিলাওয়াতের বিনিময়ে মসজিদুল হারামে তোওয়াফকারী ও ইতেকাফে অংশগ্রহণকারীদের সংখ্যার দশ গুণ বেশী নেকী
প্রদান করবেন।” (তাফসীর আল মাজমাউল বায়ান, খন্ড ১০, পৃঃ নং ৪৪১)।
 
হাযরাত ইমাম জা’ফার ইবনে মুহাম্মাদ আস্ সাদিক্ব (সালামুল্লাহি আলাইহি):
“যে ব্যক্তি সূরা আল ক্বুরাইশ বেশী বেশী তিলাওয়াত করবে সে ক্বিয়ামতের দিন এমনভাবে উত্থিত হবে যে, সে বেহেস্তী ঘোড়াতে আরোহন করে নূরানী খাবারের দস্তরখানায় আসন গ্রহণ করবে।” (সাওয়াবুল আ’মাল, পৃঃ নং ১২৬)।
 

১৩। সূরা “আল ক্বুরাইশ” -এর মাধ্যমে তদবীর:

হাযরাত রাসূলুল্লাহ (সা.): “যে খাবারের ব্যাপারে মানুষ ক্ষতির আশংকা নিয়ে ভীত সন্ত্রস্থ হয়েছে যদি কেউ সূরা আল ক্বুরাইশ পড়ে সেই খাবারের উপর ফু দেয় তাহলে সেই খাবারের মধ্যে শেফা ঢেলে দেয়া হয় এবং খাবার গ্রহণকারী ব্যক্তি কোন ক্ষতির সমুক্ষীন হবে না।” (তাফসীর আল বুরহান, খন্ড ৫, পৃঃ নং
৭৫৯)।
 
ইমাম জাফার সাদিক্ব (সালামুল্লাহি আলাইহি): “সূরা আল ক্বুরাইশ যদি কোন পানির মধ্যে ফু দিয়ে সেই পানি এমন হার্টের রুগীর উপরে ঢেলে দেয়া হয় যার রোগের কারণ অপরিচিত, তাহলে আল্লাহ তায়ালা সেই ব্যক্তির কাছ থেকে রোগ-বালাই দূর করে দিবেন।” (তাফসীর আল বুরহান, খন্ড ৫, পৃঃ নং ৭৫৯)।
 

প্রাচুর্য ও আয় রোজগার বৃদ্ধির জন্যে নিচের আমলটি ফলপ্রসূঃ

দুই রাকাত নামাজ পড়বে। প্রতি রাকাতে সূরা ফাতিহার পর পনের বার সূরা ক্বুরাইশ তিলাওয়াত করবে। অতঃপর সালাম পাঠের পর দশ বার মুহাম্মাদ ও আলে মুহাম্মাদের উপর দরুদ পাঠাবে। দরুদের পর সেজদায় গিয়ে বলবেঃ “আল্ল-হুম্মা আগ্বনিনি বি-ফাদ্বলিকা আ’ন খালক্বিক।” (বিহারুল আনওয়ার, খন্ড ৮৮, পৃঃ নং ৩৫৯)।

Related Post

সূরা আবাসা সম্পর্কে কিছু তথ্য

Posted by - August 22, 2020 0
(আমি) আল্লাহর নামে (শুরু করছি), যিনি রাহমান [=পরম করুণাময় সকল সৃষ্টির জন্যে], যিনি রাহিম [=অসীম দয়াবান কিছু বিশেষ ব্যক্তিদের জন্যে]।…

সূরা “আল ফাজর” সম্পর্কে সামগ্রিক কিছু তথ্য

Posted by - September 9, 2019 0
(আমি)আল্লাহর নামে(শুরু করছি), যিনি রাহমান(পরম করুণাময় সকল সৃষ্টির জন্যে), যিনি রাহিম(অসীম দয়াবান কিছু বিশেষ ব্যক্তিদের জন্যে)। ১। কোরআনের বর্তমান উসমানী…

মুসলমানদের জন্যে শহীদ হাজী সোলাইমানীর অবদান

Posted by - January 12, 2020 0
১০ই জানুয়ারি ২০২০ শুক্রবার “ইমামিয়া পাক দরবার শরীফ” আয়োজিত শোকসভায় ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরানের IRGC’র আল কুদস ব্রিগেডের কমান্ডার শহীদ জেনারেল…

ইমাম হুসাইন (আঃ) সম্পর্কে রাসূল (সাঃ)-এর কিছু হাদিস

Posted by - September 20, 2019 0
https://www.youtube.com/watch?v=U6u8UX19iAI ১. হযরত হুযাইফা বিন ইয়ামান রাদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহি ওয়া সাল্লামের কাছ থেকে বর্ণনা…

সূরা আবাসা-র অনুবাদ

Posted by - September 16, 2019 0
(আমি) আল্লাহর নামে (শুরু করছি), যিনি রাহমান [=পরম করুণাময় সকল সৃষ্টির জন্যে], যিনি রাহিম [=অসীম দয়াবান কিছু বিশেষ ব্যক্তিদের জন্যে]।…

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *