সুরা “সূরা আত্ব্ ত্বালাক্ব” সম্পর্কে সামগ্রিক কিছু তথ্য

877

(আমি)আল্লাহর নামে(শুরু করছি), যিনি রাহমান(পরম করুণাময় সকল সৃষ্টির জন্যে), যিনি রাহিম(অসীম দয়াবান কিছু বিশেষ ব্যক্তিদের জন্যে)।

১। কোরআনের বর্তমান উসমানী মুসহাফ এর ক্রমিক নম্বর অনুসারে এ সূরাটি পষট্টিতম।
২। নাযিল হওয়ার ধারাবাহিকতা অনুসারে এ সূরাটি নিরানব্বই নম্বরে অবস্থিত।
৩। নাযিলের স্থানটি হচ্ছে পবিত্র মদিনা নগরী।
৪। আয়াতের সংখ্যা ১২।
৫। এ সূরাটির অভ্যন্তরে অবস্থিত শব্দ সংখ্যা ২৮৯।
৬। এ সূরাটির অভ্যন্তরে মোট বর্ণ ব্যবহৃত হয়েছে ১২০৩ টি।
৭। এ সূরাটির অভ্যন্তরে “আল্ল-হ” শব্দটি ব্যবহৃত হয়েছে ২৫ বার।
৮। সূরাটির নামের অর্থ: পৃথক হওয়া।
৯। সূরা আত্ব্ ত্বালাক্বের অন্যান্য নামঃ “নিসা আল ক্বুসরা”, “নিসা আস সুগ্বরা”।
 

১০। এ সূরার বৈশিষ্টঃ

এ সূরাতে তালাক, তালাকের ইদ্দত পালন ও তালাকপ্রাপ্ত মহিলাদের বিষয়ে কিছু হুকুম-আহকামের বর্ণনা দেয়া হয়েছে।
 

১১। সামগ্রিকভাবে সূরা “আত্ব্ ত্বালাক্ব” -এর আলোচ্য বিষয়ঃ

✍️একঃ মহিলাদের জন্যে তালাকের ইদ্দত
✍️ দুইঃ গর্ভবতি নারীদের মাসলা-মাসায়িল
✍️তিনঃ দুধের শিশুর দুধ পান সংক্রান্ত মাসলা-মাসায়িল
✍️চারঃ নবী-রাসূলদের নবুয়্যাত ও রেসালত এবং আল্লাহর নিদের্শনাবলীর বর্ণনা
✍️পাঁচঃ আল্লাহর একত্ববাদ ও তাওহীদ
✍️ছয়ঃ পুনরূত্থান ও পরকাল
✍️সাতঃ তাক্বওয়া ও তার প্রভাব
✍️আটঃ ব্যক্তি ও সমাজ জীবনে তাক্বওয়ার প্রভাব।
 

🔷১২। সূরা “আত্ব্ ত্বালাক্ব” তিলাওয়াতের ফযিলত:

🌴•রাসূল (সা.): “যে ব্যক্তি সূরা আত্ তালাক্ব পাঠ করবে সে আমার সুন্নতের উপর প্রতিষ্ঠিত থেকে মৃত্যুবরণ করবে।”
📚(তাফসীর মাজমাউল বায়ান, খণ্ড ১০, পৃঃ নং ৩৬)।
 
🌴•ইমাম জাফার আস সাদিক্ব (আ.): “যে ব্যক্তি সূরা আত্ তাহরীম ও আত্ তালাক্ব ফরজ নামাজগুলোতে তিলাওয়াত করবে আল্লাহ রোজ ক্বিয়ামতে তাকে ভয়-ভীতি ও দুশ্চিন্তা থেকে নিরাপদে রাখবেন এবং আগুনের উষ্ণতা থেকে রেহাই দিবেন। আর তাকে এ দু’টি সূরা তিলাওয়াতের কারণে বেহেশ্তে প্রবেশ করাবেন। এ দুই সূরা তাকে রক্ষা করবে। কেননা, এ সূরাদ্বয় আল্লাহর রাসূলের সূরা হিসেবে পরিগণিত।”
📚(সাওয়াবুল আ’মাল, পৃঃ নং ১১৮)।
 

🔷১৩। সূরা “আত্ব্ ত্বালাক্ব” -এর মাধ্যমে তদবীর:

🌴• ক) বর্ণিত আছে যে, “সূরা আত্ তালাক্ব-এর তিলাওয়াত আরোগ্য লাভ ও ঋণ পরিশোধে খুবই উপকারী।” 📚(মুস্তাদরাক আল ওয়াসায়িল, খণ্ড ১৩, পৃঃ নং ২৯০)।
 
🌴• খ) “মহব্বত ও ভালবাসা সৃষ্টির লক্ষ্যে ২১ বার সূরা আত্ তালাক্ব তিলাওয়াত করলে উপকার হয়।” (দারমন ব কোরআন, পৃঃ নং ১২০)।
🌴• গ) “রিযিক বৃদ্ধির জন্যে তিনবার সূরা আত্ তালাক্ব তিলাওয়াত উপকার হবে।” (দারমন ব কোরআন, পৃঃ নং ১২০)।
 
🌴• ঘ) রিযিক বৃদ্ধি ও ধন-সম্পদ লাভের জন্যে সূরা আত্ তালাক্বের ২ ও ৩ নং আয়াত নিম্ন নিয়মে সম্পন্ন করতে হয়ঃ
 
“আমলটি শুক্রবার অথবা বৃহস্পতিবার শুরু করতে হবে। যদিও শুক্রবার উত্তম। চল্লিশ দিন এ আমলটি করতে হবে। প্রতিদিন ১৫৯ বার উপরোক্ত দুটি আয়াত তিলাওয়াত করতে হবে। তবে ফজরবাদ আমলটি করা উত্তম। শুধুমাত্র চল্লিশতম দিনে আয়াত দুটি ১৭৯ বার পড়তে হবে। আমলটি শুরুর প্রথম দিনে হাজত পূরণের লক্ষ্যে হাজতের গোসল সম্পন্ন করা জরুরী। অতঃপর দুই রাকাত নফল নামাজ পড়ে ১০০ বার দরুদ পাঠ করা উচিত। আর শেষের দিনে আমল শেষ করে ১০০ বার দরুদ পাঠ করা কর্তব্য। সন্দেহ করা যাবে না, নিরাশ হওয়া যাবে না। যদি প্রথমবার ফলাফল লাভ না করেন, আমলটি পুনরায় সম্পাদন করেন। ইনশাআল্লাহ্ আপনি আপনার ফলাফলে পৌছবেন।”
📚 (কোরআন দারমনীয়ে রুহী ভা জেসমী, পৃঃ নং ২৬০)।
 
🌴• ঙ) যে ব্যক্তি প্রতিদিন সূরা আত্ তালাক-এর দ্বিতীয় ও তৃতীয় আয়াত তিলাওয়াত করবে তার আটকে পড়া গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলো সমাধান হয়ে যাবে।”
📚 (কোরআন দারমনিয়ে রুহি ভা জেসমি, পৃঃ ২৬০)।
 
🌴• চ) বিপদ মুক্তির জন্যে নিচের আমলটি খুবই কার্যকরী। এক সপ্তাহ প্রতি রাত্রে ঈশার নামাজের পর দুই রাকাত নামাজ নিচের নিয়মে পড়বে। প্রথম রাকাতে সূরা ফাতিহার পর সূরা আত্ তালাক-এর দ্বিতীয় ও তৃতীয় আয়াত পঁচিশবার তিলাওয়াত করবে এবং দ্বিতীয় রাকাতে সূরা ফাতিহার পর যে কোন সূরা পড়বে।।”
📚 (দারমন ব কোরআন, পৃঃ ১২১)।
↯↻↯↻↯

Related Post

সূরা ইয়াসিন তিলাওয়াতকারীর মর্যাদা

Posted by - ফেব্রুয়ারি ১৫, ২০২২
হযরত মুহাম্মাদ মুস্তাফা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহি ওয়া সাল্লামঃ ✍️“সূরা ইয়াসিন তিলাওয়াতকারী আল্লাহর নিকট মর্যাদাবান আখ্যায়িত হয়ে থাকেন। সূরা ইয়াসিন…

সূরা আল ফালাক্ব

Posted by - আগস্ট ২৪, ২০১৯
📚সূরা “আল ফালাক্ব” সম্পর্কে সামগ্রিক কিছু তথ্য: ১। কোরআনের বর্তমান উসমানী মুসহাফ-এর ক্রমিক নম্বর অনুসারে এ সূরাটি একশত তেরতম। ২।…

সূরা “আল কাফিরুন”-এর অনুবাদ ও সামগ্রিক কিছু তথ্য

Posted by - ফেব্রুয়ারি ২৫, ২০২০
 بِسْمِ الّٰلهِ الرَّحْمٰنِ الرَحِيْمِ   (বলো! আমি) আল্লাহর নামে (শুরু করছি), যিনি রহমান (পরম করুণাময় সকল সৃষ্টির জন্যে), যিনি রহিম (অসীম…

সূরা “আল ক্ব-রিআ”-এর অনুবাদ ও সামগ্রিক কিছু তথ্য

Posted by - ফেব্রুয়ারি ২৭, ২০২০
 بِسْمِ الّٰلهِ الرَّحْمٰنِ الرَحِيْمِ  (বলো! আমি) আল্লাহর নামে (শুরু করছি), যিনি রহমান (পরম করুণাময় সকল সৃষ্টির জন্যে), যিনি রহিম (অসীম…

সূরা “আল ফিল” সম্পর্কে সামগ্রিক কিছু তথ্য

Posted by - সেপ্টেম্বর ২১, ২০১৯
(আমি) আল্লাহর নামে (শুরু করছি), যিনি রাহমান (পরম করুণাময় সকল সৃষ্টির জন্যে), যিনি রাহিম (অসীম দয়াবান কিছু বিশেষ ব্যক্তিদের জন্যে)।…

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Translate »