শহিদ হলেন কাসেম সোলাইমানি এবং হাশদ আশ-শাবির সেকেন্ড-ইন-কমান্ড

812 0

 

ইরানের ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনী বা আইআরজিসি’র কুদস বাহিনীর কমান্ডার লে. জেনারেল কাসেম সোলাইমানি এবং ইরাকের হাশদ আশ-শাবি বা পপুলার মোবিলাইজেশন ইউনিটস সংক্ষেপে পিএমইউ’র সেকেন্ড-ইন-কমান্ড আবু মাহদি আল-মুহানদিস মার্কিন বিমান হামলায় শাহাদত বরণ করেছেন।

আবু মাহদি আল-মুহানদিস

আজ শুক্রবার (ভোররাতে)  ইরাকের রাজধানী বাগদাদের আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে কাছে তাদেরকে বহনকারী গাড়ি লক্ষ্য করে এ বিমান হামলা চালানো হয় বলে হাশদ আশ-শাবির বরাত দিয়ে দেশটির সংবাদ মাধ্যম জানিয়েছে।

হাশদ আশ-শাবির মুখপাত্র আহমেদ আল-আসাদি এক বিবৃতিতে এ হত্যাকাণ্ডের জন্য আমেরিকা এবং ইহুদিবাদী ইসরাইলকে দায়ী করেছেন। এ হামলাকে ‘কাপুরুষোচিত মার্কিন বিমান হামলা’ বলে অভিহিত করেন তিনি।

ইরাকের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নিরাপত্তা সংক্রান্ত মিডিয়া সেল এর আগে এক বিবৃতিতে বলেছে, বিমান বন্দরের কার্গো টার্মিনালের কাছে রকেট হামলা হয়েছে। এতে দু’টি গাড়ি পুড়ে গেছে এবং কয়েকজন আহত হয়েছেন।হামলার পরপরই নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মার্কিন কর্মকর্তারা বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেন, বাগদাদে ইরানের সঙ্গে সম্পর্কিত দুই লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালানো হয়েছে। হামলার বিষয়ে বিস্তারিত বলতে অস্বীকার করেন তারা।

ইরানের ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনী বা আইআরজিসি’র কুদস ব্রিগেডের কমান্ডার লেঃ জেনারেল কাসেম সোলাইমানি ১৯৫৭ সালে ইরানের দক্ষিণাঞ্চলীয় কেরমান শহরের উপকণ্ঠে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৭৯ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি ইরানে ইসলামি বিপ্লবের বিজয়ের পর আইআরজিসি’তে যোগদান করেন।

১৯৮০ থেকে ১৯৮৮ সাল পর্যন্ত ইরানের ওপর ইরাকের চাপিয়ে দেয়া যুদ্ধে জেনারেল সোলাইমানি কেরমানের ৪১ ‘সারুল্লাহ’ ডিভিশনের নেতৃত্ব দেন। ওই যুদ্ধ শেষ হওয়ার পর তিনি ইরানের পূর্ব সীমান্তে মাদক চোরাচালান ও সন্ত্রাস বিরোধী অভিযানে কমান্ডারের দায়িত্ব পালন করে। ওই অভিযানে তিনি মাদক চোরাকারবারী ও সন্ত্রাসীদের হত্যা করার মাধ্যমে ইরানের পূর্ব সীমান্তের নিরাপত্তা পরিস্থিতির উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি ঘটান।

১৯৯৭ সালে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহিল উজমা খামেনেয়ী তাকে আইআরজিসি’র কুদস বাহিনীর কমান্ডার হিসেবে নিয়োগ দেন। সে সময় ইরানের পূর্ব সীমান্তে উগ্র জঙ্গি গোষ্ঠী তালেবান যে হুমকি সৃষ্টি করেছিল তার অবসান ঘটাতে সক্ষম হন।

২০১১ সালের ২৪ জানুয়ারি কাসেম সোলাইমানি মেজর জেনারেল পদে উন্নীত হন।

এ সময় ইরাক ও সিরিয়ায় উগ্র তাকফিরি সন্ত্রাসী গোষ্ঠী দায়েশ (আইএস) ব্যাপকভাবে বিস্তার লাভ করে এবং ভয়াবহ সব অপরাধযজ্ঞ সংঘটিত করে। জেনারেল সোলাইমানি কুদস বাহিনীর কমান্ডার হিসেবে এ সময় এই জঙ্গি গোষ্ঠীকে দমনের কাজে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। প্রায় ছয় বছরের প্রচেষ্টার পর ২০১৭ সালের ২১ নভেম্বর তিনি ইরানের সর্বোচ্চ নেতাকে লেখা এক চিঠিতে দায়েশের খেলাফতের পতন হওয়ার সংবাদ প্রদান করেন।

দায়েশ-বিরোধী যুদ্ধের দিনগুলোতে বহুবার এই সন্ত্রাসী গোষ্ঠী জেনারেল সোলাইমানিকে হত্যা করার ব্যর্থ চেষ্টা করেছে। তিনি নিজে যেমন শাহাদাতের আকাঙ্ক্ষা পোষণ করতেন তেমনি আয়াতুল্লাহিল উজমা খামেনেয়ী তাকে ‘জীবন্ত শহীদ’ বলে অভিহিত করতেন। #

পার্সটুডে/মূসা রেজা/এমএমআই/৩

Related Post

শহীদ লেঃ জেনারেল কাসেম সোলাইমানির সংক্ষিপ্ত বীরোচিত জীবন

Posted by - January 10, 2020 0
ইরানের ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনী বা আইআরজিসি’র কুদস ব্রিগেডের কমান্ডার লেঃ জেনারেল কাসেম সোলাইমানি ১৯৫৭ সালে ইরানের দক্ষিণাঞ্চলীয় কেরমান শহরের…

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *