আর বলবো না ,
বলবো না আমার পিপাসার কথা ,
চরম তৃষ্ণার্ততার কথা !
তৃষ্ণার্ততায় পানি বন্দি হয়ে কেঁদেছিল ফোরাতকুল ,
কেঁদেছিল স্বর্গ মর্ত্য !
পিপাসায় কলিজা ফেটে যাওয়া বাহাত্তরের আপোষহীন লড়াই ,
সত্যের ঝান্ডা বুকে ধরে চেতনার সে তীব্র নিনাদ ,
লা শারিকের ভূলুণ্ঠনের প্রতিবাদের তীব্রতা
আমাকে পিপাসার্ত থাকা শিখিয়েছে !
হায়েনাদের তান্ডবলীলায় হতবাক আরশ আসমান ,
সমুদ্রের তরঙ্গমালার বিস্ফোরিত গর্জন,
প্রকৃতির বোবাকান্নায় আমি জেনেছি সে তৃষ্ণার্ততার কথা !
তাই বলবো না সে পিপাসার কথা !
যখন মরুর তীব্র দাবদাহে দিনের পর দিন
পানিশূণ্য ফাতেমার দুলাল ও তাঁর স্বজন
একে একে বুক চিতিয়ে বিলিয়ে দিয়েছিল,
কুরবান করেছিল নিজেদের ইসলামের ঝান্ডা উঁচু করে
তখন থেকে বলবো না তৃষ্ণার্ততার কথা !
বলবো না আমি পিপাসার্ত !
যখন ছয় মাসের আলী আসগর দিনের পর দিন চরম পিপাসার যন্ত্রনায় দু’ফোটা পানি চাইতে গিয়ে
কচি গলায় ত্রিফলা তীর বিদ্ধ হয়ে আজন্ম পানির পিয়াস মিটিয়ে ছিল সেই থেকে আর বলবো না আমি তৃষ্ণার্ত !
ছোট্ট সাকিনার পিপাসা মিটাতে চাচা আব্বাসের কর্তিত দুটি হাত ও মশক মুখে তীর বিদ্ধতার অনুভূতিতে আর বলবো না আমি পিপাসার্ত !
তবুও হামাগুড়ি দিয়ে বয়ে যাওয়া মশকের অবশিষ্ঠ পানি নিয়ে সাকিনার পানে ছুটে চলার প্রাণান্ত চেষ্টার অভিপ্রায়ে বলবো না আমি তৃষ্ণার্ত!
আর বলবো না আমি পিপাসার্ত !
আমি তো আজন্ম পিয়াস মিটিয়েছি কারবালার রক্ত গঙ্গায়!
পবিত্র দেহের শোনিতের বাণে যখন বিমর্ষিত কান্নার রব চারদিকে ধ্বণিত হচ্ছে সেসব অনুরণনে !
শত শত তীর বর্শায় জর্জরিত মওলা হোসেইনের আমামা উড্ডীনে !
আমি তো মিটিয়েছি আমার পিয়াস আবাদ করা পবিত্র রক্তের সিন্চনে ,
চাচা আব্বাসের ফোরাতের বুকে নেমে অণ্জলীবদ্ধ করে নেওয়া পানি, ফেলে দেওয়া সেই দরিয়ার বুকে !
সেই পিয়াস তো মিটিয়েছি কচি কাচাসহ বাহাত্তরের ঢেলে দেওয়া তাজা রক্তের ঘ্রাণে ,
শুষে নেওয়া রক্তাক্ত মরুর বালির বুকে !!
___মাসুদ রানা তরুন।।