✍ “হুসাইন আমা থেকে আর আমি হুসাইন থেকে”
(আল মুসান্নাফ, ইবনে আবি শাইবাহ, খণ্ড ৬, পৃঃ নং ৩৮০; সুনান আত তিরমিযি, খণ্ড ৫, পৃঃ নং ৬৫৮; আল মুসতাদরাক আস সাহিহাইন, খণ্ড ৩, পৃঃ নং ১৯৪; সহিহ ইবনে হাব্বান, খণ্ড ১৫, পৃঃ নং ৪২৭)-
আল্লাহর রাসূলের(সা.) এ হাদিসে তাঁর ও ইমাম হুসাইনের শারিরীক দেহ মোবারকদ্বয়ের মধ্যে সম্পর্ক বুঝানো হয়নি। বরং “(ইমাম) হুসাইন রাসূল থেকে”-এর অর্থ হলো, ইমাম হুসাইনের জীবনাদর্শের সবটুকুই আল্লাহর রাসূল থেকে উজ্জিবিত আর “আমি হুসাইন থেকে”- কথাটির অর্থ হলো, রাসূলে মাকবুল খাতামুন নাবিয়্যিনের(সা.) দ্বীন ইসলামের বৃক্ষটিও ইমাম হুসাইনের আদর্শ, সংগ্রাম, সিরাত ও শাহাদাত থেকে নিঃসরিত ও ফলিত হয়েছে। দয়াল নবীর দ্বীন ইসলাম, খেলাফতের রাষ্ট্রীয় বেইনসাফী চাবুকের কষাঘাতে জর্জরিত হয়ে যখন কুখ্যাত, মদ্যপ ও প্রতারক মুয়াবিয়া (শত শত সাহাবী ও তাবেয়ীদের তাঁজা রক্তে রঞ্জিত যার হাত) নামক মানুষরূপী পশুর হাতে গিয়ে এ ইসলাম পতিত হয় তখন সুদ, ঘুষ, খুন, অত্যাচার, রাহাজানী ও প্রতারণার বেপরোয়া তরবারীর আঘাতে সেই ইসলাম মুমুর্ষ অবস্থায় পৌঁছে যায়। আর এই কুখ্যাত ব্যক্তিটি মৃতপ্রায় ইসলামকে শেষ আঘাত হেনে হত্যা করার জন্যে তার পাপিষ্ট ও নিকৃষ্ট সন্তান ইয়াযিদকে খেলাফত নামক ক্ষমতার মসনদে বসিয়ে যায়।
✍তাই, বাবার উপযুক্ত সন্তান ইয়াযিদও মরণাঘাত হানে কারবালার ময়দানে ইমাম হুসাইন, তার পরিবার ও সাথীদের উপর। কিন্তু কারবালার সন্মানিত শহীদদের দৃঢ়তা ও নিষ্ঠার কারণে এবং আল্লাহর উপর ভরসা, আল্লাহ, রাসূল ও তাদের যামানার ইমামের প্রতি প্রেমের মাধ্যমে কুফুর ও শেরকের বিরোদ্ধে সংগ্রামের ফলে উৎসর্গকৃত তাঁদের কোরবানীর পবিত্র রক্তে পুনর্জীবিত রাসূলের কলেমার পতাকা আজো মুসলমানদের ক্বলবে উড্ডীন আছে। আর তাই, কবি যথার্থই বলেছেনঃ “ইসলাম জিন্দা হোতা হ্যায় হার কারবালা কি বাদ”-* (প্রতিটি কারবালার পরেই ইসলাম জিন্দা হয়)। সুতরাং ইমাম হুসাইন ও কারবালার শহীদানের রক্তের মর্যাদা প্রদান ও তাঁদের স্মরণ ইসলামের স্মরণ ও মর্যাদারই নামান্তর। এ কারণে, ফোরাতকুলে হারিয়ে যাওয়া সেই হুসাইনী ইসলামকে পুনরায় বাংলার মুসলিম সমাজে প্রতিষ্ঠা করার লক্ষ্যে বেশী বেশী করে মজলুমের নেতা ও তাঁর সাথে শাহাদাত বরণকারীদের স্মরণ ও তাঁদের আদর্শ নিয়ে আলোচনা একান্ত দরকার।