হযরত ইব্রাহিম (আঃ) কাকে কোরবানি দিতে নিয়ে গিয়েছিলেন?

754 0
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
 
🔊 কোন কোন মুসলমান ইসলামের বিরোদ্ধে ইহুদীদের অপপ্রচারের ফলশ্রুতিতে এ কথা প্রচার করেন যে, হযরত ইব্রাহীম(আ.), হযরত ইসহাক(আ.)-কে কুরবানি দিতে নিয়ে গিয়েছিলেন। তাই, তাদের কথা অপনোদনের লক্ষ্যে আল কুরআন থেকে প্রমাণিত হয় যে, হযরত ইবরাহিম(আ.), হযরত ইসমাইল (আ.)- কে কুরবানি করতে নিয়ে গিয়েছিলেন, হযরত ইসহাক (আ.)-কে নয়। তার প্রমাণ নিম্নরূপঃ
 
[কোরআনের সূরা আস্ সাফফাতের ৯৯নং আয়াত থেকে ১১১ নং আয়াত পর্যন্ত আল্লাহ্ যে ক’টি বিষয়ের অবতারণা করেছেন তন্মোধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছেঃ
 
ক) নিজ পালনকর্তার দিকে হযরত ইবরাহিম(আ.)-এর যাত্রা এবং আল্লাহর হেদায়াত কামনা।
 
খ) আল্লাহর কাছে একটি নেক সন্তানের জন্যে প্রার্থনা।
 
গ) আল্লাহ্ তাকে এক ধৈর্যশীল সন্তানের সুসংবাদ দান করলেন।
 
ঘ) অত:পর হযরত ইবরাহিম(আ.) স্বপ্ন দেখলেন যে, তার পুত্রকে জবেহ্ করছেন আর তা অকপটে তার পুত্রকে বলেন এবং পুত্র বাবার কাজে সাহায্য করার প্রতিশ্রুতি দিলেন।
 
ঙ) অবশেষে হযরত ইবরাহিম(আ.) স্বীয় পুত্রের গলায় ছুরি চালালে আল্লাহ্ তার কুরবানি কবুল করেন এবং তার প্রশংসা করেন।
 
🌹কিন্তু উক্ত আয়াতসমূহে হযরত ইবরাহিমের পুত্রের কোন নাম উল্লেখ করা হয়নি। এ বিষয়টি ১১২ নং আয়াতে উল্লেখিত হযরত ইসহাক(আ.) সম্পর্কে বর্ণিত সুসংবাদের বিষয়টি এবং হযরত ইসহাকের নামটির সাথে সম্পর্কীত নয়। কেননা, ১০১ নং আয়াতে আল্লাহ্ একটি সুসংবাদ দিয়ে কুরবানির ঘটনার বর্ণনা শুরু করেছেন। যখন আরেকটি সুসংবাদ ১১২নং আয়াতে উল্লেখ করছেন, তখন এর অর্থ হচ্ছে পূর্বের বিষয়টির বর্ণনা সমাপ্ত হয়েছে এবং নতুন বিষয়ের অবতারণা হয়েছে। অর্থা‌ৎ পূর্বে বর্ণিত জবেহের ঘটনার সাথে পরের আয়াতে বর্ণিত হযরত ইসহাক(আ.)-এর কোন সম্পৃক্ততা নেই। আর এ আয়াতসমূহের ব্যাখ্যায় বিভিন্ন তফসিরকারক হযরত রাসূল(সা.) থেকে বিভিন্ন হাদিস বর্ণনা করেছেন, যেখানে হযরত ইসমাইলের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। রাসূল(সা.) বলেছেন: “আমি দুই জবেহকৃত ব্যক্তির সন্তান‌।” (তাফসির আত্ তাবারী, খন্ড ৬, পৃ: ১৫২৮)। এটা স্পষ্ট যে, রাসূল(সা.) ছিলেন হযরত ইসমাইলের বংশের ধারা থেকে এবং হযরত আবদুল্লাহর সন্তান। আর মুসলিম ঐতিহাসিকগণ তাদের স্ব স্ব গ্রন্থে তাই বলেছেন। হযরত ইসমাইল হযরত ইসহাকের চেয়ে বয়সে বড় এবং ইবরাহিম(আ.)-এর প্রথম সন্তান ছিলেন। তাই, ইবরাহিম(আ.) ৮৬ ব‍‍ৎসর বয়সে আল্লাহর কাছে যে পুত্র সন্তানের প্রার্থনা করেছিলেন তিনি হলেন ইসমাইল (আ.)। আর ইসহাক (আ.) যখন জন্মগ্রহণ করেন তখন ইবরাহিম (আ.)-এর বয়স ছিলো ৯৯। তাই স্বভাবত:ই ইবরাহিম (আ.) তার প্রথম সন্তানকে আল্লাহর রাহে কুরবান করার জন্যে নিয়ে যান।
📚তাফসিরে ইবনে কাসির, খন্ড, ৭, পৃ:২৩।] 
 
↯↻↯↻↯ 

Related Post

অত্যাবশ্যকীয় আদব

Posted by - August 12, 2019 0
🌹ইমামিয়া পাক দরবার শরীফের সন্মানিত সকল ভক্ত, আশেকান, মুরিদান ও মুহিব্বিনে আহলু বাইতিন নাবী(সা.)-এর খেদমতে দরবার শরীফের অভ্যন্তরে পালনীয় কতিপয়…

হাফেজ্জী হুজুরের শেষ ওসিয়ত

Posted by - August 23, 2019 0
গত কয়েক দশক ( সত্তর-নব্বই) ধরে বাংলাদেশের সকল সুন্নীপন্থি আলেমদের শিরমনি ছিলেন দেওবন্দী আলেম হযরত মাওলানা মোহাম্মদুল্লাহ হাফেজ্জী হুজুর। তিনি…

অ্যালকোহলের ব্যবহার

Posted by - August 11, 2019 0
👁👁 অনেকে বলেন, অ্যালকোহল যুক্ত বডি-স্প্রে বা পারফিউম ব্যবহার করা হারাম! অথচ অ্যালকোহল খাওয়া আর অ্যালকোহল ব্যবহার করা দুটি সম্পূর্ণ…

মৃত্যু কামনা!?

Posted by - January 15, 2020 0
🌷 জনৈক ব্যক্তি হযরত মুহাম্মাদ মুস্তাফা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহি ওয়া সাল্লাম-এর খেদমতে আরজ করলো, ইয়া রাসূলুল্লাহ! আমাকে কী অনুমতি…

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *