(আমি) আল্লাহর নামে (শুরু করছি), যিনি রাহমান (পরম করুণাময় সকল সৃষ্টির জন্যে), যিনি রাহিম (অসীম দয়াবান কিছু বিশেষ ব্যক্তিদের জন্যে)।
১। কোরআনের বর্তমান উসমানী মুসহাফ এর ক্রমিক নম্বর অনুসারে এ সূরাটি একশত পাঁচতম।
২। নাযিল হওয়ার ধারাবাহিকতা অনুসারে এ সূরাটি উনিশ নম্বরে অবস্থিত।
৩। নাযিলের স্থানটি হচ্ছে পবিত্র মক্কা নগরী।
৪। আয়াতের সংখ্যা ৫।
৫। এ সূরাটির অভ্যন্তরে অবস্থিত শব্দ সংখ্যা ২৩।
৬। এ সূরাটির অভ্যন্তরে মোট বর্ণ ব্যবহৃত হয়েছে ৯৭ টি।
৭। এ সূরাটির অভ্যন্তরে “আল্ল-হ” শব্দটি ব্যবহৃত হয়েছে ১ বার।
৮। সূরাটির নামের অর্থ: “আল ফিল” আরাবী ভাষায় একটি পশুর নাম যা বাংলায় “হাতি” নামে আখ্যায়িত। এ সূরার আরেকটি নাম হচ্ছে, “আলাম তারা” যার অর্থ “তুমি কি দেখোনি”।
৯। সূরাটির বৈশিষ্ট্য:
এ সূরা ইতিহাস সম্বলিত সূরাগুলোর অন্যতম যার আয়াতগুলো সংক্ষিপ্ত অথচ অত্যন্ত দৃঢ়। আর তার মধ্যে “হস্তী আরোহীদের ঘটনা” নামে একটি গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহাসিক ঘটনা ব্যক্ত হয়েছে যা আমাদের জন্যে বড় ধরনের একটি শিক্ষামূলক পাঠ হিসেবে গণ্য।
১০। সামগ্রিকভাবে সূরা “আল ফিল”-এর মূল আলোচ্য বিষয়: “আবরাহা, হস্তী আরোহী ও আবাবীল সম্পর্কে বিস্তারিত ঘটনা পরিপূর্ণভাবে বর্ণনা করা।”
১১। সূরা “আল ফিল”-এর তিলাওয়াতের ফযিলত:
হাযরাত ইমাম জা’ফার ইবনে মুহাম্মাদ আস্ সাদিক্ব (সালামুল্লাহি
আলাইহি): “যে ব্যক্তি সূরা আল ফিল ফরজ নামাজগুলোতে তিলাওয়াত করবে ক্বিয়ামতের দিন সকল মরুভুমি ও পাহাড় পর্বত সাক্ষ্য প্রদান করবে যে, সে নামাজীদের অন্তর্ভুক্ত ছিল। মহাপ্রভু আওয়াজ তুলবেনঃ “সত্য বলেছো! আমি তোমাদের সাক্ষ্য গ্রহণ করলাম। হে আমার ফেরেস্তারা! আমার এই বান্দাকে বেহেস্তে নিয়ে যাও, আমি তাকে এবং তার আমলকে ভালবাসি।” (সাওয়াবুল আ’মাল, পৃঃ নং ১২৬)।
আহলে বাইতের আদর্শের আলেমরা বলেছেনঃ “শুধুমাত্র সূরা আল ফিল এককভাবে নামাজে তিলাওয়াত করা জায়েয নয় বরং সূরা আল ক্বুরাইশ-এর সাথে যোগ করে পুরোটা মিলিয়ে একটি সূরা হিসেবে পড়তে হবে।” (সাওয়াবুল আ’মাল, পৃঃ নং ১২৬)।
১২। সূরা “আল ফিল” -এর মাধ্যমে তদবীর:
হাযরাত রাসূলুল্লাহ(সা.): “যে ব্যক্তি সূরা আল ফিল তিলাওয়াত করবে আল্লাহ তায়ালা জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত তাকে পানিতে ডুবে যাওয়া এবং সে অবস্থায় চেহারার বিকৃতি থেকে রক্ষা করবেন।” (তাফসীর আল মাজমাউল বায়ান, খন্ড ১০, পৃঃ নং ৪৪১)।
ইমাম জাফার সাদিক্ব(সালামুল্লাহি আলাইহি)-এর কাছ থেকে বর্ণিত হয়েছে যে, “সূরা আল ফিল শত্রুর মুখোমুখী অবস্থায় তিলাওয়াত করলে উপকারে আসে।” তদ্রুপ আরো বর্ণিত আছে যে, তিনি বলেছেনঃ “বুধবার সূরা আল ফিল আটানব্বই বার পড়ে তোমার দুশমনের দিকে ফু দাও, দেখবে সে পরাজিত হয়ে গেছে।” (দারমন ব কোরআন, পৃঃ নং ১৬৫)।