(আমি) আল্লাহর নামে (শুরু করছি), যিনি রাহমান [=পরম করুণাময় সকল সৃষ্টির জন্যে], যিনি রাহিম [=অসীম দয়াবান কিছু বিশেষ ব্যক্তিদের জন্যে]।
তার [=নবীর সাথে আলাপরত ব্যক্তিটির] চেহারার মধ্যে রিবক্তিভাব ফুটে উঠলো এবং (আগন্তুকের কাছ থেকে) মুখ ফিরিয়ে নিলো,(১)
যেহেতু তাঁর [=নবীর] নিকট এক অন্ধ আগমন করেছিল।(২)
(হে নবী!) তুমি কি জানো যে, সে [=অন্ধ ব্যক্তিটি] হয়তো (ইসলামের আলোকে কলুষতা থেকে) পরিশুদ্ধ হতে পারে,(৩)
অথবা হয়তোবা সে (প্রকৃত সত্য উপলব্ধির বিষয়টিকে) স্মরণে আনবে, যা তার উপকারে আসবে।(৪)
পক্ষান্তরে যে ব্যক্তি নিজেকে অমুখোপেক্ষী ও বিত্তবান হিসেবে প্রদর্শন করে,(৫)
(হে নবী!) তুমি তার প্রতি মনোযোগ দিয়েছো,(৬)
অথচ সে যদি নিজে (আচরণগত ও অন্তরের কলুষতা থেকে) পরিশুদ্ধ হতে না চায় তাহলে (তার ব্যাপারে) তোমার কোন কিছু করার নেই।(৭)
অন্য দিকে যে (অন্ধ) ব্যক্তিটি তোমার নিকট ছুটে এলো (৮)
সে তো (তার প্রভুর শাস্তিকে) ভয় করে। (৯)
তুমি তাকে অবজ্ঞা করলে (আর উপস্থিত অন্যদের সাথে আলাপ করেই যাচ্ছিলে)! (১০)
(এ ধরনের অবজ্ঞা) অনুচিত, নি:সন্দেহে (কোরআনের আয়াত) তোমাকে উপদেশ প্রদান করে।(১১)
“যে ব্যক্তি ইচ্ছা করবে সে এই (কোরআন) থেকে উপদেশ গ্রহণ করতে পারবে,(১২)
আর তা আছে মর্যাদাময় পুস্তিকাসমূহে,(১৩)
যা সুউচ্চ ও পবিত্র মর্যাদার অধিকারী(১৪)
(এবং) তা আছে (আল্লাহর) দূতদের হাতে,(১৫)
যারা সন্মানিত ও নেককার।(১৬)
ধ্বংস হোক! যে অত্যন্ত অকৃতজ্ঞ ও কাফের!(১৭)
তিনি [=আল্লাহ] তাকে [=মানুষকে] কোন বস্তু থেকে সৃষ্টি করেছেন?(১৮)
(অতি অল্প ও মূলহীন) শুক্র বিন্দু হতে তিনি তাকে [=মানুষকে] সৃষ্টি করেছেন, অত:পর (সত্তাগত, গুণগত ও অবকাঠামোগতভাবে) তাকে পরিমিত বিকশিত করেছেন,(১৯)
এর পর তার জন্য (হেদায়েত, সৌভাগ্য, কল্যাণ ও আনুগত্যের) পথকে সহজ করে দিয়েছেন,(২০)
অবশেষে তিনি [=আল্লাহ] তার [=মানুষের] মৃত্যু ঘটান এবং তাকে কবরস্থ করেন।(২১)
আবার যখন তিনি ইচ্ছা করবেন তখন তিনি তাকে পুনরুজ্জীবিত করবেন।(২২)
(মানুষকে এতসব নেয়ামত দেয়ার পরও) এরকমটি নয় যে, (সবাই তাদের কর্তব্য পালন করতে পেরেছে), তিনি তাদেরকে যে আদেশ করেছেন, তারা তো (সবাই) তা পালন করেনি।(২৩)
মানুষ যেনো তার খাদ্যের প্রতি ভাল করে লক্ষ্য করে।(২৪)
যে আমিই (আসমান থেকে) প্রচুর বারি বর্ষণ করে থাকি।(২৫)
অতঃপর ভূমিকে (উপকারী ও লাভজনকভাবে) বিদীর্ণ করেছি(২৬)
এবং সেখানে আমি বীজ বপন করেছি,(২৭)
(সেই বীজগুলোর মধ্যে কিছু হচ্ছে) আঙ্গুর ও শাক-সবজি,(২৮)
জলপাই ও খেজুর।(২৯)
(এ ভুমিতে আরো আছে) বহু শক্তিশালী ও প্রকান্ড বৃক্ষবিশিষ্ট উদ্যান,(৩০)
ফল-ফলাদি ও গবাদি পশুর জন্যে চারণভুমি।(৩১)
এগুলো (সব) তোমাদের এবং তোমাদের চতুষ্পদ জন্তুগুলোর জন্যে জীবনোপকরণ হিসেবে (সৃষ্টি করা হয়েছে)।(৩২)
অবশেষে যখন ঐ গগন ফাঁটা ও ভয়ংকর ধ্বনি এসে পড়বে,(৩৩)
যেদিন মানুষ পালাতে থাকবে তার ভাইয়ের কাছ থেকে(৩৪)
এবং তার মাতা-পিতার (কাছ থেকে),(৩৫)
তার স্ত্রী ও সন্তানের (কাছ থেকে),(৩৬)
সেদিন প্রত্যেকের এমন গুরুতর অবস্থা হবে যে, তারা নিজেদেরকে নিয়েই সম্পূর্ণরূপে ব্যতিব্যস্ত থাকবে (অন্যদিকে চিন্তা করারও সামান্যতম অবকাশ থাকবে না),(৩৭)
সেদিন অনেকের মুখমন্ডল আলোকজ্জ্বল ও দীপ্তিমান থাকবে,(৩৮)
(তাদের মুখমন্ডল) হাস্যোজ্জ্বল ও প্রফুল্লময় (হবে)।(৩৯)
(অপরপক্ষে) আবার অনেকের মুখমন্ডল সেদিন ধূলি ধূসরিত (বিষন্নতায় আচ্ছন্ন) থাকবে।(৪০)
(সেই চেহারাগুলো হবে) অন্ধকারাচ্ছন্ন ও কালিমামাখা।(৪১)
তারাই হবে সেই কাফির ও পাপাচারী ব্যক্তিবর্গ।(৪২)