আল্লাহ মানুষসহ পুরো সৃষ্টি জগতের সৃষ্টিকর্তা। তিনিই ভাল জানবেন, কোন কাজে মানুষের মঙ্গল আর কোনটা মানুষের জন্যে অমঙ্গল। আজ থেকে চৌদ্দ শতাব্দী আগে কুরআনুল কারিম মানুষের মঙ্গলের জন্যেই রোজার বিধান ব্যক্ত করেছে। আর সেখানেই বলা হয়েছে যে, এর আগেও রোজার বিধান ছিল। (সূরা আল বাক্বারা, সূরা নং ০২, আয়াত নং ১৮৩)।
হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রিষ্টানদের মধ্যেও না খাওয়ার বিধান আছে। তবে তাদের মতে সেটা হচ্ছে উপবাস অথবা ফাস্টিং।
আর ইদানিং চিকিৎসা শাস্ত্র মতে একজন মানুষের উপবাসকে বলা হচ্ছে অটোফেজি (Autophagy)। খুব বেশি দিন হয়নি চিকিৎসা শাস্ত্র অটোফেজি -এর সাথে পরিচিত হয়েছে। ২০১৬ সালে নোবেল কমিটি জাপানবাসী চিকিৎসক ওশিনরি ওসুমি (Yoshinori Ohsumi)-কে অটোফেজি আবিষ্কারের জন্যে পুরষ্কার দেন।
এরপর থেকে আধুনিক মানুষেরা ব্যাপকভাবে উপবাস করতে শুরু করেন।
Autophagy শব্দটি একটি গ্রিক শব্দ ।
Auto অর্থ নিজে নিজে এবং Phagy অর্থ খাওয়া । সুতরাং অটোফেজি মানে নিজে নিজেকে খাওয়া ।
অর্থাৎ শরীরের কোষগুলো বাইরে থেকে কোনো খাবার না পেলে নিজেই নিজের অসুস্থ কোষগুলোকে খেয়ে ফেলে। আমাদের ঘরে যেমন ডাষ্টবিন থাকে অথবা আমাদের কম্পিউটারে যেমন রিসাইকেল বিন থাকে তেমনি আমাদের শরীরের প্রতিটি কোষের মাঝেও একটি করে ডাষ্টবিন আছে।
সারা বছর শরীরের কোষগুলো খুব ব্যস্ত থাকার কারণে ডাষ্টবিন পরিষ্কার করার সময় পায় না সেগুলো। ফলে কোষগুলোতে অনেক আবর্জনা ও ময়লা জমে যায়।
শরীরের কোষগুলো যদি নিয়মিত তাদের ডাষ্টবিন পরিষ্কার করতে না পারে তাহলে কোষগুলো এক সময় নিষ্ক্রিয় হয়ে শরীরে বিভিন্ন প্রকার রোগের উৎপন্ন করে।ক্যান্সার বা ডায়াবেটিসের ন্যায় অনেক বড় বড় রোগ শুরু হয় এখান থেকেই। মানুষ যখন খালি পেটে থাকে তখন শরীরের কোষগুলো ভিতরের আবর্জনা ও ময়লাগুলো পরিষ্কারের সূযোগ পায়। কোষগুলোর আমাদের মত আবর্জনা ফেলার জায়গা নেই বলে তারা নিজেদের আবর্জনা নিজেরাই খেয়ে ফেলে। চিকিৎসা শাস্ত্রে এই পদ্ধতিকে বলা হয় অটোফেজি।
অতএব, আল্লাহর হুকুম মেনে রোজা রাখুন। আপনার আখেরাতের পুঁজি বৃদ্ধির পাশাপাশি দুনিয়াতেও সুস্থভাবে বেঁচে থাকার সুযোগ পাবেন ইনশাআল্লাহ।
↯↻↯↻↯