যমযম কুপের সংক্ষিপ্ত পরিচিতি

720 0
রাহমাতুল্লিল আলামীনের পবিত্র জন্মের ২৫৭২ বছর পূর্বে যমযম কুয়ার আবির্ভাব হয়। এই হিসেব অনুযায়ী এখন থেকে প্রায় চার হাজার বার বছর আগে এই যমযম কুয়ার উৎপত্তি হয়। যমযম কুপ, আল্লাহ পাকের কুদরতের এক অপূর্ব নিদর্শন। মক্কার পবিত্র কাবা ঘরের পূর্ব পাশে এ কুপ অবস্থিত। চাহিদা অনুযায়ী পানি উত্তোলিত হচ্ছে, কোন কমতি নেই। হজ্বের মৌসুমে প্রতিদিন লক্ষ লক্ষ মানুষ পান করছেন, সারা বৎসর ব্যাপী মক্কা-মদিনার জনসাধারণ ও অগণিত তীর্থযাত্রী এ পানি পান করে চলেছেন এবং সঙ্গে নিয়ে যাচ্ছেন, কিন্তু পানির স্তর একই রকম, একটুও কমছে না। আল্লাহ পাকের কী অসীম করুণাধারা!
হজরত ইব্রাহীম (আঃ) তাঁর প্রাণপ্রিয় শিশুপুত্র হজরত ইসমাঈল (আঃ)সহ বিবি হাজেরাকে ঊষ্ণ প্রস্তরময় পাহাড়-পর্বতসঙ্কুল জনমানবহীন মক্কার এক উপত্যকায় আল্লাহ পাকের নির্দেশ অনুসারে রেখে গেলেন। সেখানে কোন লোকালয় এমনকি লোক চলাচলও ছিল না। না ছিল আহার্যের কোন ব্যবস্থা, না ছিল পানীয়জলের কোন ব্যবস্থা। আল্লাহ পাকের প্রতি তাদের ভালবাসা যে কত গভীরে প্রোথিত ছিল তা আমাদের ধারণারও অতীত। আল্লাহ পাকের কাছে নিজেদেরকে একান্তভাবে সমর্পন করতে পেরেছিলেন বলেই তো সৃষ্টির শেষ পর্যন্ত আল্লাহ পাক তাঁদের ত্যাগের মহিমাকে আদর্শ করে রেখেছেন আমাদের জন্য। ত্যাগের মহিমায় চির ভাস্বর হয়ে আছেন হজরত ইব্রাহীম (আ:), বিবি হাজেরা ও হজরত ইসমাঈল (আঃ)।
পিপাসায় কাতর বিবি হাজেরা, প্রাণ ওষ্ঠাগত, দুগ্ধপোষ্য শিশুপুত্র হজরত ইসমাঈল (আঃ)-এর জীবন সংশয়, দুশ্চিন্তায় অধীর হয়ে আল্লাহ পাকের উপর ভরসা রেখে পানির অন্বেষনে বের হলেন বিবি হাজেরা এবং ঐ ছাফা ও মারওয়া দুই পাহাড়ে সাত বার দৌঁড়াদৌঁড়ি করেন। এক সময় তিনি অদৃশ্য আওয়াজ পেলেন শিশুর কাছে যাওয়ার জন্য। দেখতে পেলেন ইসমাঈলের পাদদেশে পানি। বিবি হাজেরা তাড়াতাড়ি দৌঁড়ে গেলেন শিশুপুত্রের কাছে। অবশেষে শিশুর কাছে গিয়ে দেখতে পেলেন তার পায়ের কাছে পানির ফোয়ারা বের হচ্ছে। তিনি প্রথমে তাঁর মশ্ক ভরে নিলেন পানি দিয়ে, তারপর বালু বা পাথর দিয়ে পানির চতুপার্শ্বে আটকিয়ে দিলেন। সেই থেকে শুরু করে এই বেহেশতি ঝর্ণা আজো প্রবাহিত হচ্ছে এবং কিয়ামত পর্যন্ত তা বইতে থাকবে।💐
 
↯↻↯↻↯

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *