[হযরত শাক্বিক বালখী (রহঃ) হিজরী দ্বিতীয় শতাব্দি ও আব্বাসীয় শাষক হারুন-আর-রাশীদের সমসাময়িক কালের একজন স্বনামধন্য সুফী ও আরেফ ছিলেন। তার শিষ্যদের জন্যে তার সবচে গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা ছিল তাওয়াক্কুল (আল্লাহর উপর ভরসা)।]
কথিত আছে যে, একদিন হযরত শাক্বিক (রহঃ) হজ্বব্রত পালনের উদ্দেশ্যে বলখ থেকে যাত্রা করেন। পথিমধ্যে তিনি বাগদাদে যাত্রবিরতি করেন। বাদশাহ্ হারুন-আর-রাশিদ তাকে দরবারে ডেকে আনলেন। যখন শাক্বিক বালখী (রহঃ) বাদশাহর নিকট পৌঁছালেন তখন বাদশাহ্ হারুন- আর-রাশিদ জিজ্ঞেস করেনঃ “তুমিই কি সেই শাক্বিক যাহেদ (দুনিয়াত্যাগী)?”
দরবেশ উত্তর দিলেন : “হ্যাঁ, আমি শাক্বিক। কিন্তু যাহেদ নই।”
বাদশাহ্ : “আমাকে উপদেশ দাও।”
দরবেশ : “যদি তুমি উত্তপ্ত মরুভূমিতে পিপাসার্ত হও আর সে কারণে তুমি বাধ্য হও মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়তে, তখন সেই মুহূর্তে যদি কেউ তোমার সামনে পানি এনে উপস্থিত হয়, সে পানি তুমি কত দিনারে কিনবে?”
বাদশাহ্ : “বিক্রেতা যে পরিমান অর্থে সন্তুষ্ট হয়।”
দরবেশ : “যদি তোমার বাদশাহীর অর্ধেক ছাড়া সন্তুষ্ট না হয় তখন কি করবে?”
বাদশাহ্ : “বাদশাহীর অর্ধাংশ তাকে দিয়ে দেবো। বিনিময়ে তার কাছ থেকে পানি নিয়ে তা দিয়ে মরুভূমিতে আমার প্রাণ রক্ষা করবো।”
দরবেশ : “যদি তাতেও তোমার তৃষ্ণা নিবারণ না হয় তখন তুমি কি করবে?”
বাদশাহ্ : “আমার দেশের সকল চিকিৎসকদের ডেকে এনে চিকিৎসা করাবো।”
দরবেশ : “কিন্তু তাতেও যদি কোন কাজ না হয়? শুধুমাত্র একজন চিকিৎসক তোমার অর্ধ বাদশাহীর বিনিময়ে তোমাকে আরোগ্য দান করতে ইচ্ছুক হয় তখন কি করবে?”
বাদশাহ্ : “মৃত্যু থেকে পরিত্রানের জন্যে তার চিকিৎসা বাবদ অর্ধ বাদশাহী দিতে রাজী আছি।”
দরবেশ : “হে হারুন! কিসের জন্যে এতসব বড়াই! যে বাদশাহীর মূল্য এক ঢোক পানি -যা পান করার পর পুনরায় বাইরে নির্গত হয়ে যায় ?” একথা শুনে বাদশাহ্ হারুন-আর-রাশিদ মাথা নত করে রইলেন। (প্রাগুক্ত; তায্কিরাতুল আওলিয়া, পৃঃ নং ২৩৫)।
