পূর্ণতা

666 0
একটি অসম্পূর্ণ ইতিহাসের কথা বলবো আজ
যাকে পূর্ণতা দেয়ার প্রয়াসে অগনিত প্রান বলিদান দেয়া হয়েছে
ত্যাগের উপর ত্যাগের অবাধ্য ঢেউ এসে
যেখানে একটি শক্তিশালি ভূমির ভিত্তি স্থাপন করা হয়েছে।
হ্যাঁ! আমি কারবালারই কথা বলছি!
যে জমিনকে উর্বর করা হয়েছিলো রক্তের সঞ্চালনে
বিরামহীন অশ্রুপাতের স্রোত ধারায় যাকে বলিষ্ঠ করা হয়েছিলো
আর শক্তি দেয়া হয়েছিলো প্রান উজাড় করা প্রেম দিয়ে।
আজ সেই অসম্পূর্ণ ইতিহাসের কথাই বলবো
যাকে প্রান দেয়ার লক্ষ্যে
দুধের বদলে মায়েরা অশ্রু পান করাতেন সন্তানদের
ঘুম পাড়ানি গানের বদলে শুনানো হতো
সেইদিনের সাহসি ভোরের গল্প!
হ্যাঁ! এমন সাহসি ভোর শুধু কারবালারই আছে
খুন রাঙা পথ থেকেই যেখানে সেদিন জন্মেছিলো
হাজারো বিপ্লবীদের বিজয়ের পালা
সেই অসম্পূর্ণ ইতিহাসের কথাই বলবো আজ
যেখানে অকৃত্রিম কিছু আত্মা
নিজেদের বিলিয়ে দিয়েছিলো প্রেমের চরণতলে।
শাতাব্দির পর শতাব্দি পেরিয়ে
আবারও গর্জে উঠেছে ইতিহাস!
ভূলুণ্ঠিত মস্তকগুলো আবারও হয়েছে আকাশচুম্বী!
আবারও লাব্বাইক ইয়া হুসাইন! ধ্বনিতে মুখরিত হয়েছে চারদিক!!
তোমার পতাকা উচ্চকিত হওয়ার সময় এসে গেছে হুসাইন!
তোমার পতাকা উচ্চকিত হওয়ার সময় এসে গেছে,
একটিবার চেয়ে দেখো!
জাগরণের স্রোতে, প্রতিবাদের শ্লোগানে
বাঁধ ভাঙ্গা জনতার ঢল শুধু তোমারি পানে।
অদম্য উদ্দীপনার সয়লাবের মাঝেও
আমার অবস্থানে আজও হতাশ আমি
নিস্তেজ বোধের আকাশে বুঝি
অধরাই থেকে গেলো তোমার যিয়ারতের স্বপ্ন!
দুঃস্বপ্নের আতঙ্কে প্রতিনিয়তই আমি শঙ্কিত এখন
তবুও কামনার প্রতি ক্ষণে আমাকে বলতেই হয়ঃ
‘আর কতদূর তোমার পথ!
আর কতোটা কণ্টকের মাঝে পা টেনে চলতে হবে আমায়!
আর কতো দূর! আর কতো দূর!! আর কতো দূর!!!’

তবুও আমরা বলেই যাবো
যতদিন নব্য মুয়াবিয়ার জন্ম না হয়
যতদিন আল মাদানির হিজাব ছেড়ে
প্রকাশিত না হয়, লম্পটের অবয়ব।
বানর নাচের জলশা ঘরে
জন্ম নেয়া বেজন্মার দুঃশাসনের
যাঁতাকলে পিষ্ট হওয়ার পরও আমরা বলেই যাবো,
হে আলী! তুমিই মহান!

টুটি চেপে ধরুক রোধ করুক কণ্ঠ স্বর
বানোয়াট সত্যায়নের উদ্যম বাজারে বলুক আমায় মিথ্যাবাদী
তবুও আমি চিৎকার করে বলেই যাবো
তুমি সত্য! শুধু তুমিই সত্য হে মহিয়ান!!!

সবাই আমায় পাগল বলুক
তায়েফের মতো বর্ষিত হোক পাথরের তীব্র বৃষ্টি,
ললাটের রক্তে জমাট বেঁধে যেতে পারে পায়ের জুতা
তবুও আমি চুপ থাকবো না।
হতে পারে কোন এক মুয়াবিয়া
তোমার নাম নেয়ার দায়ে আমার জিহ্বা কেটে নিবে,
অথবা তোমার স্মরণে অশ্রুপাতের অপরাধে উপড়ে ফেলা হবে আমার চোখ
তোমায় নিয়ে লিখার অপরাধে বিচ্ছিন্ন করা হতে পারে হাত
অথবা তোমার যিয়ারাতে যাওয়ার অপরাধে কাটা হবে আমার পা।

এমন হাজ্জাজের জন্ম হতেই পারে,
বিন যিয়াদের জন্ম আবারও হবে
তবুও আমি চিৎকার করে অবলিলায় দুনিয়াবাসীকে বলেই যাবো
হে আলী! তুমি মহিয়ান! তুমি গরিয়ান!

Related Post

আশুরার বিপ্লবে নারীদের গৌরবজ্জ্বোল ভুমিকা

Posted by - August 25, 2020 0
ইসলাম নারী ও পুরুষের সন্মিলিত ইতিহাস। ইসলাম গ্রহণকারী প্রথম ব্যাক্তি ছিলেন একজন নারী তথা উন্মুল মুমিনিন হযরত খাদিজা (সা.আ.)। প্রায়…

প্রিয় হে বার্তাবাহক মুস‌লিম !!

Posted by - September 5, 2019 0
ডা‌কি‌ছে আমায় ক‌রি‌তে বায়াত বস‌তি জন ঐ কুফায়, ‌বিশ্বাস না‌হি লয় ম‌নে জা‌গে কেবলই সংশয় শংকায়! ইমাম‌বিহীন না‌হি জা‌গে প্রাণ…

আশুরার পূর্ব রাত

Posted by - August 29, 2020 0
একষট্টি হিজরীর নবম মহররমের দিবাগত রাত আজ আশুরার পূর্ব রাত। যেন মহাপ্রলয়ের পূর্ব রাত। কারবালা প্রান্তরের বাতাসেও আজ শোকের পূর্বাভাস।…

আযর কি হযরত ইবরাহীমের পিতা ছি‌লেন?

Posted by - September 6, 2019 0
বিসমিল্লা‌হির রাহমা‌নির রা‌হিম আল্লাহ তায়ালা সৃ‌ষ্টির এই দু‌নিয়া‌তে তাঁর প্র‌তি‌নি‌ধি স্বরুপ মানব জা‌তি‌কে সৃ‌ষ্টি ক‌রে‌ছেন আশরাফুল মাখলুকাত তথা সৃ‌ষ্টির সেরা জীব…

ক’ফোটা জল !!

Posted by - August 29, 2020 0
বি‌কেল গ‌ড়ি‌য়ে সন্ধ্যা প্রায়। কোথাও যেন খুঁজে পাওয়া যা‌চ্ছে না। হন্য হ‌য়ে খুঁজ‌ছে সবাই। নাহ… কোথাও নেই? কিন্তু সংখ্যাটা যে…

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *