পবিত্র মাথা মুবারকগুলোর সাথে রক্ত পিপাসুরা…

618 0

আশুরার দিনে ইয়াযিদ (লানাতুল্লাহি আলাহি) ও ইয়াযিদী (লানাতুল্লাহি আলাহি) বাহিনী, রাসূলের পবিত্র আহলে বাইত ও তাঁদের খাস অনুসারীদেরকে নির্মমভাবে খুন করার পর দয়াল ইমাম সাইয়্যেদুশ শুহাদা হুসাইন ইবনে আলী(আ:)-এর দেহ মুবারক ঘোড়ার খুড়ে পিষ্ট ও ছিন্ন ভিন্ন করে দেয়। অতঃপর সকল শহীদানের পবিত্র মাথাগুলো বর্শার আগায় বিদ্ধ করে আহলে বাইতের পরিবারের বেঁচে যাওয়া নারী ও শিশুদেরকে হাত পা বেঁধে কুফা শহরের প্রধান বাজারের উপর দিয়ে নিয়ে গিয়ে অবশেষে কুখ্যাত ও অভিশপ্ত উবাইদুল্লাহ ইবনে যিয়াদ (লানাতুল্লাহি আলাহি)- এর প্রাসাদে উপস্থিত করানো হয়। সেই প্রাসাদে উবাইদুল্লাহ ইবনে যিয়াদ (লানাতুল্লাহি আলাহি) ছাড়াও তার বিশিষ্ট সমর্থক ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিল। সেই অনুষ্ঠানে সুযোগ বুঝে শেরে খোদার কন্যা হযরত যাইনাব (সালামুল্লাহি আলাইহা) এক জ্বলাময়ী সচেতনমূলক বক্তব্য দান করেন। মা যাইনাবের এই গঠনমূলক ও পরিচিতিমূলক বক্তব্যের কারণে প্রাসাদে উপস্থিত অনেকের চেতনা ফিরে আসে। তারা তাদের জঘন্য ভুল বুঝতে পারে। তাদের অনেকের ক্রন্দন ও গগন ফাঁটা আত্মচিৎকার দ্রুত জনগণের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে। মা যাইনাবের এই বক্তব্যের পর জনগণের রোষানল ও প্রতিবাদের ভয়ে আর নিজের মাকড়সা ও তাসের ঘরের ন্যায় শক্তি ও দাপটের মহড়া প্রদর্শনের লক্ষ্যে রক্ত পিপাসু কুখ্যাত ইয়াযিদের নিয়োগকৃত গভর্নর উবাইদুল্লাহ ইবনে যিয়াদ (লানাতুল্লাহি আলাহি), সাইয়্যেদুশ শুহাদা ইমাম হুসাইন (আলাইহিস সালাম) ও অন্যান্য শহীদানের পবিত্র মাথাগুলোকে কুফা নগরীর অলি গলিতে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে প্রদর্শনের নির্দেশ প্রদান করে।

❥✦ইবনে যিয়াদের মজলিসে উপস্থিত ছিল নবীর এক সাহাবী। তার নাম যাইদ ইবনে আরক্বাম। তিনি বলেনঃ
[আমি আমার গৃহে বিশ্রাম নিচ্ছিলাম। সেখান থেকে দেখতে পেলাম যে, বর্শার আগায় বিদ্ধ হুসাইনের কর্তিত মস্তক বিভিন্ন গলিতে ঘুরানো হচ্ছে।…আমি শুনতে পাচ্ছিলাম, হুসাইনের কর্তিত মস্তক সূরা ক্বাহফ (১৮নং সূরা)-এর ৯নং আয়াতটি তিলাওয়াত করছে, যেখানে আল্লাহ বলেছেনঃ

أَمْ حَسِبْتَ أَنَّ أَصْحَابَ الْكَهْفِ وَ الرَّقِيمِ كَانُوا مِنْ آيَاتِنَا عَجَبًا

উচ্চারণঃ
“আম হাসিব্-তা আন্না আস্-হাবাল কাহ্‍-ফি ওয়ার রাক্বিমি কা-নু মিন আ-ইয়া-তিনা আ’জাবা।”
অর্থঃ
“(হে নবী!) তুমি কি মনে করো যে, আসহাবে কাহফ ও রাকীমের অধিবাসীরা আমার নিদর্শনাবলীর মধ্যে একটি বিস্ময়কর বিষয়?”
✌🏼এই আয়াতটি হুসাইনের কর্তিত মস্তকের কাছ থেকে শুনে আমার গায়ের লোম খাড়া হয়ে গিয়েছিল। তখন আমার অজান্তেই আমি ফরিয়াদ তুলিঃ “হে রাসূলের পুত্র! তোমার কর্তিত মাথা থেকে কথার শব্দ বের হওয়া আসহাবে কাহফের পুনরায় জীবিত হওয়া থেকেও বেশী বিষ্ময়কর!!!]
📚বিহারুল আনওয়ার, খণ্ড ৪৫, পৃঃ নং ১২১।

Related Post

মহররমের দশ রাত এবং শামে গারীবার প্রোগ্রাম

Posted by - August 30, 2019 0
আসসালামু আ’লাইকুম। বছর ঘুরে আবারো আমাদের সামনে আরো একটি মহররম। মাওলা হুসাইনের উসিলায় আবারো কিছু দ্বীনি ভাই-বোনদের সমাবেশ, মাওলার স্মরণ,…

মহররমের শোক-কথা (২য় পর্ব)

Posted by - August 1, 2022 0
আজ কেবল ইতিহাস থেকে একটি সুত্র দিতে চাই, তাদের জান্নাতপ্রাপ্তির বিশ্বাস তো এমন দৃঢ় ছিল তারা দুনিয়াতেই নিজেদের জন্য জান্নাতের…

ক’ফোটা জল !!

Posted by - August 29, 2020 0
বি‌কেল গ‌ড়ি‌য়ে সন্ধ্যা প্রায়। কোথাও যেন খুঁজে পাওয়া যা‌চ্ছে না। হন্য হ‌য়ে খুঁজ‌ছে সবাই। নাহ… কোথাও নেই? কিন্তু সংখ্যাটা যে…

ইয়াজিদ কর্তৃক ইমাম হুসাইনকে (আ.) হত্যার প্রমান

Posted by - September 10, 2022 0
১. কুখ্যাত ইয়াজিদ ক্ষমতায় বসেই মদিনার গভর্নর ওলিদকে চিঠি লেখে তাতেই ইমাম হুসাইন(আ:)-কে হত্যার নির্দেশ দেয়া হয়েছিল। ইয়াজিদের চিঠির অংশ…

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Translate »