📘 ক্বোরআনের মুজিযা ও বার ইমাম👇
🌹ইমাম শব্দ নিচের আয়াতসমূহে উল্লেখিত হয়েছেঃ
✅ আরো দেখুনঃ👇
✅ আরেকটি দৃষ্টান্ত লক্ষ্য করুনঃ👇
🌷🌹“বার ইমাম” সম্পর্কে আরো আলোচনাঃ🌷🌹
পবিত্র আল কোরআনে আল্লাহ বলেনঃ
“ক্বিয়ামতের দিবসে প্রত্যেক জনগোষ্ঠীকে তাদের ইমামের সাথে ডাকা হবে।” (আল ইসরা, আয়াত নং ৭১)।
মহাপ্রভু আমাদের ইহলৌকিক শান্তি ও কল্যাণ এবং পারলৌকিক চিরস্থায়ী মুক্তির জন্যে এমন অবলম্বন ও নেতৃত্বের সন্ধান দিবেন যারা সমস্ত পাপ পঙ্কিলতা থেকে থাকবেন মুক্ত, ঐশ্বরিক গুণাবলিতে হবেন পরিপূর্ণ এটাই তো প্রভূত্বের দাবী। আর তাই তিনি তাঁর বান্দাদের সঠিক পথে পরিচালনার জন্যে আদি পিতা হযরত আদম (আঃ) থেকে শেষ নবী হযরত মুহাম্মাদ (সাঃ) পর্যন্ত মহাপুরুষদের প্রেরন করেছেন বিভিন্ন সময়ে। তিনি আল কোরআনে বলেন,
“নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ সমগ্র বিশ্বের বুকে আদম ও নূহ এবং ইবরাহীমের বংশধর ও ইমরানের বংশধরকে নির্বাচিত করেছেন।”
(আলে ইমরান, আয়াত নং ৩৩)
ইসলামের ইমারত শেষ নবীর মাধ্যমে পরিপূর্ণতা লাভ করেছে। তিনিই পরিপূর্ণ দ্বীন ইসলামের প্রবর্তক। আল্লাহর কৃপা ও অনুগ্রহের কারণেই মানুষ মহানবীর ন্যায় পরশ পাথরের ছোয়া পেয়ে ধন্য হয়েছিল। তার অন্তর্ধানের পর কোন মতে এ দয়া ও অনুগ্রহ বিচ্ছিন্ন হয়ে যেতে পারে না মানবজাতির মধ্য থেকে, এটাও মহানুভব প্রভূত্বের দাবী।
নবুয়্যত ও রেসালতের ধারা হযরত মোহাম্মাদ (সা.) এর মাধ্যমে পরিসমাপ্তি ঘটেছে। মহান আল্লাহর এ মনোনিত দ্বীন ক্বিয়ামত অবধি অব্যাহত থাকবে। এ ব্যাপারে সমস্ত মুসলমান ঐক্যমত পোষন করে থাকেন। তাই স্বভাবতঃ প্রশ্ন জাগে, নবী(সা.) যে দ্বীনের প্রবর্তন ও প্রতিষ্ঠা করলেন অক্লান্ত পরিশ্রম, চরম আত্মত্যাগ ও জেহাদ এবং বহু শহীদের প্রাণের বিনিময়ে, তার সংরক্ষণের জন্যে কি এমন কাউকে দায়িত্ব দিয়ে যাবেন না? যিনি অবিকল তার মতই হবেন সমস্ত নেক গুণাবলীতে, যিনি মুহাম্মাদী ব্যাখ্যা ও বিশ্লেষণসহ সংরক্ষণ করে রাখবেন দ্বীন ইসলাম ও কোরআনকে?
নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিন তাঁর পবিত্র দ্বীন ইসলাম সংরক্ষণের জন্যে এমন ব্যক্তিবর্গকে নিয়োজিত রেখেছেন যারা আল্ কোরআনের ন্যায় পবিত্র, যাদেরকে মহান আল্লাহ নিজেই সমস্ত রকমের পাপ পঙ্কিলতা থেকে মুক্ত রেখেছেন।
ইতিপূর্বে উল্লেখিত হয়েছে যে, আল্ কোরআনে আল্লাহ বলেন, ‘ক্বিয়ামতের ময়দানে প্রত্যেককে তার ইমামের সাথে পুনরুত্থিত করা হবে।’ আর এটা নিঃসন্দেহে সত্য যে রাসূল (সাঃ) এর পরলোকগমনের পর মুসলমানদের মধ্যে বিভিন্ন পথ ও মতের উদ্ভব হয়েছে। আর ন্যায়সঙ্গত কারনেই প্রত্যেক জনগোষ্ঠীকে তার অনুসৃত নেতৃত্বের সাথে ক্বিয়ামতের দিবসে পুনরুত্থিত করা হবে। সে কারনে ইসলাম ও ইসলামী উম্মতকে সঠিক খাতে প্রবাহিত এবং সকল প্রকার বিচ্যুতি থেকে সংরক্ষিত রাখার জন্যে ইমামদের গুরুত্ব অতুলনীয়। প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মাদ মোস্তফা (সাঃ) বলেছেন,
“ইসলাম প্রিয়পাত্র হবে না যতক্ষন না পর্যন্ত বার জন খলিফা অতিবাহিত হবে।” (সহিহ মুসলিম, খন্ডঃ ৬, পৃঃ ৩)।
মহানবী (সাঃ) এর অন্তর্ধানের পর ইসলামে বার জন খলিফা আগমন করবেন, এ ব্যাপারে বিভিন্ন হাদীস ও ইতিহাস গ্রন্থে দু’ধরনের হাদীস পরিলক্ষিত হয়।
একঃ এমন সব হাদীস যেখানে শুধুমাত্র বার জন খলিফার আগমন বার্তা দেওয়া হয়েছে যে তারা সকলে কুরাইশ বংশ থেকে হবেন। দৃষ্টান্ত স্বরুপঃ “আল্ বুখারী জাবির বিন সামরাহ থেকে বর্ণনা করছেন যে তিনি বলেছেন আমি আল্লাহর রাসূলের কাছ থেকে শুনেছি যে তিনি বলেছেনঃ বার জন নেতা (আমার পরে) আগমন করবে। অতঃপর একটি শব্দ উচ্চারন করলেন, আমি শুনতে পাই নি। আমার পিতা বলেন, তিনি বলেছেন, তারা সকলে কুরাইশ বংশ থেকে হবেন।” (সহিহ বুখারী, খন্ডঃ ৯, পৃঃ ১০১, কিতাবুল আহকাম, বাব নং ৫১, বাবুল ইসতিখলাফ)।
মুসলিম তার সহিহাতে জাবির বিন সামিরাহ থেকে নিম্নলিখিতভাবে বর্ণনা করেছেন, জাবির বিন সামিরাহ বলেনঃ
আমি আমার পিতার সাথে নবী (সাঃ) এর খেদমতে উপস্থিত হলাম। অতঃপর আমি শুনতে পেলাম যে তিনি বলেছেনঃ যতক্ষন পর্যন্ত বার জন খলিফা আগমন না করছেন ততক্ষন পর্যন্ত মুসলমানদের ক্রিয়া কর্ম সুস্পষ্টভাবে সম্পন্ন হবে না। তিনি (জাবির) বলেন, নবী (সাঃ) কি যে বললেন আমি তা বুঝতে পারি নি। তিনি বলেন আমি আমার বাবাকে বললাম, তিনি কী বলেছেন? উত্তরে আমার পিতা বলেন, তিনি বলেছেনঃ তারা সবাই কুরাইশ বংশ থেকে হবেন। (সহিহ মুসলিম, খন্ডঃ ৬, পৃঃ ৩ ও ৪, মিসর প্রিন্ট, তিনি ৮০ টা সনদ সহ বিভিন্ন শব্দেরতারতম্যের মাধ্যমে উক্ত বিষয়ে হাদীস বর্ণনা করেছেন)।
🌷হযরত মুসলিম নিশাবুরী অন্যত্র আরও হাদীস বর্ণনা করেছেন। তিনি উল্লেখ করেন যে নবী (সাঃ) বলেছেনঃ “যতক্ষন পর্যন্ত বার জন খলিফা মানুষের উপর কর্তৃত্ব না করছেন ততক্ষন পর্যন্ত তাদের কাজ কর্ম সঠিকভাবে সম্পন্ন হবে না। অতঃপর নবী (সাঃ) কী যেন উচ্চারন করলেন আমি তা বুঝতে পারি নি। আমি আমার পিতাকে জিজ্ঞেস করলাম, নবী (সাঃ) কী বলেছেন? তিনি বলেন নবী (সাঃ) বলেছেন, তারা সকলে কুরাইশ গোত্রের অন্তর্ভূক্ত।”
🌷আবু দাউদ জাবির বিন সামিরাহ থেকে বর্ণনা করছেন যে, তিনি বলেছেনঃ
“আমি রাসূলুল্লাহর কাছ থেকে শুনেছি, তিনি বলেছেন, বার জন পর্যন্ত এ দ্বীন পৃথিবীর বুকে সম্মানিত থাকবে। অতঃপর জনগনের তকবীর ধ্বনীতে কোলাহলের সৃষ্টি হল। পরে তিনি কী যেন একটা শব্দ করলেন। আমি আমার পিতাকে জিজ্ঞেস করলাম, হে পিতা তিনি কী বলেছেন? পিতা বললেন, তিনি বলেছেনঃ তারা সকলে কুরাইশ বংশ থেকে আসবেন।“ 📚সহিহ আবি দাউদ, খন্ডঃ ২, পৃঃ ২০৭, কিতাব আল্ মাহদী।
🌷তিরমিযি তার সহিহাতে এভাবে উল্লেখ করেছেনঃ “জাবির বিন সামিরাহ বলেছেন যে রাসূল (সাঃ) বলেছেনঃ আমার পরবর্তীতে বার জন আমীর আগমন করবেন। অতঃপর তিনি কিছু বললেন যা আমার বোধগম্য হয় নি। আমি আমার পেছনে উপবিষ্ট ব্যক্তিকে জিজ্ঞেস করলাম যে তিনি কী বলেছেন? তিনি বললেন, রাসূল (সাঃ) বলেছেনঃ তারা সবাই কুরাইশ বংশদ্ভূত হবেন।”
📚সহি তিরমিযি, খন্ডঃ ২, পৃঃ ৪৫ [১৩৪২ হিঃ সনে প্রিন্ট]
🌷জনাব তিরমিযি উক্ত হাদীসটিকে সহিহ ও হাসান বলে আখ্যায়িত করেছেন। তিনি একই রকম আরও অনেক হাদীস জাবির বিন সামিরাহ থেকে বর্ণনা করেছেন।
বার জন খলিফা সংক্রান্ত বিষয়ে মুসনাদে আহমাদের গ্রন্থকার, জাবির বিন সামিরাহ থেকে নিম্নলিখিতরূপে বর্ণনা করেছেন।
তিনি বলেছেন, আমি নবী (সাঃ) এর কাছ থেকে শুনেছি যে, তিনি বলেছেনঃ “আমার উম্মতের জন্যে বার জন খলিফা আগমন করবেন।” লেখক মোট ৩৪ টি সূত্রে একই ধরনের হাদীস তার গ্রন্থে লিপিবদ্ধ করেছেন।
📚মসনাদে আহমাদ, খন্ডঃ ১, পৃঃ ৩৯৮, খন্ডঃ ৫, পৃঃ ৮৬- ১০৮।
🌷আল্ হাকেম নিশাবুরী তার বিখ্যাত গ্রন্থ ‘আল্ মুসতাদরাক আস্ সাহিহাইন ফি মারিফাত আসসাহাবা’ তে আঊন বিন জাহিফা থেকে উপরোক্ত হাদীস সমূহের ন্যায় আরও অনেক হাদীস বর্ণনা করেছেন এবং বলেছেন এগুলো তার পিতার কাছ থেকে শুনেছেন।
📚আল্ মুসতাদরাক আসসাহিহাইন ফি মারিফাত আস্ সাহাবা, খন্ডঃ ৩, পৃঃ ৬১৭, ৬১৮ ভারত প্রিন্ট।
তাছাড়াও আরো বহু ইতিহাস ও হাদীস গ্রন্থে এ ধরনের হাদীস বর্ণিত আছে।
📚তারিখে বাগদাদ, খণ্ড ১৪, পৃঃ নং ৩৫৩, হাদীস নং ৭৬৭৩; মুনতাখাব কানযুল উম্মাল, খণ্ড ৫, পৃঃ নং ৩১২।
🌷উপরোক্ত বিষয় সম্পর্কে সুন্নী বিশ্বের বিশিষ্ট ইসলামী চিন্তাবিদ আল্লামা জালালুদ্দিন সুয়ুতি তার সুপরিচিত গ্রন্থ ‘তারিখ আল খোলাফা’-তে নিম্নলিখিতরূপে লিপিবদ্ধ করেছেনঃ
“আহমাদ ও আল্ বাযযার উত্তম সনদের ভিত্তিতে ইবনে মাসউদ থেকে বর্ণনা করেছেন যে তাকে জিজ্ঞেস করা হল, কত জন খলিফা এ উম্মতের উপর শাষন চালাবেন? তিনি বললেন আমরা এ প্রসঙ্গে নবী (সাঃ) কে প্রশ্ন করেছিলাম। তিনি বলেছেনঃ তারা বনি ইসরাইলের বার জন নকীবের সমান সংখ্যক হবেন।
📚তারিখ আল্ খুলাফা, পৃঃ নং ১০।
🌷ইবনে হাজার তার স্বীয় গ্রন্থে এভাবে বর্ণনা দিচ্ছেনঃ
“তাবারানী জাবির বিন সামিরাহ থেকে বর্ণনা দিচ্ছেন যে নবী (সাঃ) বলেছেনঃ আমার পরে বার জন নেতা আগমন করবে, তারা সকলে কুরাইশ বংশের হবেন।”
📚আসসাওয়ায়েক আল্ মুহরেক্বা, পৃঃ ১৮৯।
🌷আমরা এই প্রথম প্রকার হাদীসসমূহ থেকে এ সিদ্ধান্তে উপনীত হতে পারি যে, মুসলিম উম্মতের কাজ কর্ম সঠিকভাবে পরিচালনার জন্যে, ইসলামকে সম্মানের আসনে অধিষ্ট করার লক্ষ্যে নবী (সাঃ) এর বংশ কুরাইশ থেকে তার অন্তর্ধানের পর পর্যায়ক্রমে ইমাম বা খলিফা হিসেবে বার জন সুমহান ব্যক্তি আগমন করবেন।
🌷দুইঃ এমন সব হাদীস যেখানে স্পষ্ট করে বার ইমামের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। অনেক সুন্নী গ্রন্থাকার তাদের প্রত্যেকের নাম তাদের বর্ণীত হাদীসসমূহে উল্লেখ করেছেন। তারা বলেছেনঃ বার ইমামের প্রথম হচ্ছেন আলী ইবনে আবি তালিব। অতঃপর তাঁর জ্যেষ্ঠ পুত্র হাসান, তার পরে হুসাইন। অতঃপর হুসাইনের বংশ থেকে নয়জন ইমাম আসবেন যার শেষ জন হবেন মাহদী মওউদ।
🌷ইউনাবীয় আল্ মাওয়াদদা গ্রন্থে এভাবে বর্ণিত আছেঃ
আতাল নামক এক জন ইয়াহুদী মহানবী (সাঃ)- এর খেদমতে উপস্থিত হয়ে আরজ পেশ করলোঃ
“হে মুহাম্মাদ, কয়েকটা প্রশ্ন আমি আপনাকে করতে চাই, যা কিছু দিন থেকে আমার মানসপটে আন্দোলিত হচেছ। যদি আপনি এর উত্তর আমাকে প্রদান করেন তাহলে আমি আপনার হস্তে ইসলাম গ্রহন করবো।
নবী পাক (সাঃ) বললেন, হে আবু আম্মারা, তুমি প্রশ্ন করে যাও, কোন অসুবিধা নেই। ঐ ব্যক্তি কয়েকটি প্রশ্ন করলো এবং প্রতিবারেই আপনি সত্য বলেছেন বলে সম্মতি প্রকাশ করলো। লোকটি জিজ্ঞেস করলোঃ
আমাকে বলে দিন, আপনার উত্তরাধিকারী কে? কেননা কোন নবীই উত্তরাধিকারী না রেখে দুনিয়া ত্যাগ করেন নি। আমাদের নবী হযরত মূসা (আঃ) বলে গেছেন তাঁর অবর্তমানে হযরত ইউশায়’ বিন নুন হলেন আল্লাহর নবী। নবী করিম (সাঃ) ইয়াহুদী লোকটির প্রশ্নের উত্তরে বললেনঃ
“আমার উত্তরাধিকারী হল আলী বিন আবি তালিব এবং তাঁর পরে আমার দুই সন্তান হাসান ও হুসাইন। অতঃপর অবশিষ্ট নয় জন ইমাম, হুসাইনের বংশ থেকে আগমন করবেন।”
“হে মুহাম্মাদ, দয়া করে তাঁদের নাম বলে দিন” লোকটি বললো। নবী (সাঃ) বললেনঃ হুসাইনের পরলোকগমনের পর তাঁর পুত্র আলী, তাঁর অন্তর্ধানের পর স্বীয় পুত্র মুহাম্মাদ, তাঁর ইন্তেকালের পর জা’ফর, আর জা’ফরের তিরোধানের পর তদীয় পুত্র মূসা, মূসার ইহলোক ত্যাগের পর তাঁর ছেলে আলী, আলীর পর তদীয় পুত্র মুহাম্মাদ আর মুহাম্মাদের পর তদীয় পুত্র আলী, আলীর ইন্তেকালের পর তদীয় ছেলে হাসান এবং হাসানের পর তদীয় সন্তান মুহাম্মাদ মাহ্দী পর্যায়ক্রমে ইমাম হবেন। তাঁরা আল্লাহর হুজ্জাত বা যমিনের বুকে অকাট্য দলীল।”
পরক্ষণেই ইয়াহুদী লোকটি ইসলাম গ্রহন করলেন। তিনি সঠিক পথ নির্দেশনা পেয়ে আল্লাহর অশেষ প্রশংসা করে বিদায় নিলেন।
📚ইউনাবিউল মাওয়াদদা, ক্বানদুয়ী হানাফী, পৃঃ নং ৪৪১; ফারায়েদ আসসিমতাইন হামভিনি, খণ্ড ২, পৃঃ নং ১৩৩, হাদীস নং ৪৩০, ৪৩১।
🌷আরও একটা হাদীসে জাবির বিন আব্দুল্লাহ আনসারী থেকে বর্ণিত আছে যে তিনি বলেছেনঃ
“তোমরা আল্লাহকে অনুসরণ করো, অনুসরণ ও আনুগত্য কর রাসূলের এবং তোমাদের মধ্যে ‘উলুল আমর’ – এর।
যখন আয়াতটি অবতীর্ণ হয় তখন আমি রাসূলে খোদা (সাঃ) কে জিজ্ঞেস করলামঃ হে আল্লাহর রাসূল, আমরা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলকে চিনেছি। এখানে উক্ত আয়াত অনুযায়ী ‘উলুল আমর’ কে চেনা আমাদের জন্যে একান্ত প্রয়োজন যাদেরকে অনুসরন করা, যাদের আনুগত্য করা আমাদের জন্যে ফরজ করা হয়েছে। অনুগ্রহ করে আপনি আমাদের জন্যে উলুল আমরের উদ্দেশ্য বলে দিন।
🌷রাসূলে আকরাম (সাঃ) উত্তরে বললেনঃ
“হে জাবির, তাঁরা আমার উত্তরাধীকারী এবং আমার পরবর্তী কালের ইমাম। তাঁদের প্রথম জন আলী ইবনে আবি তালিব। অতঃপর পর্যায়ক্রমে হাসান, হুসাইন, আলী বিন হুসাইন এবং মুহাম্মাদ বিন আলী। তৌরাতে এই শেষোক্ত ইমামের নাম বাক্বির হিসাবে প্রসিদ্ধ। তুমি বৃদ্ধ বয়সে মুহাম্মাদ বিন আলীর সাক্ষাত লাভ করবে তাকে আমার সালাম পৌঁছিয়ে দিও।
অতঃপর তদীয় পুত্র জা’ফর, জাফরের ছেলে মূসা, তাঁর পুত্র আলী, আলীর পুত্র মুহাম্মাদ, মুহাম্মাদের পুত্র আলী এবং তদীয় পুত্র হাসান অতঃপর হাসানের পুত্রের আসল নাম ও ডাক নাম আমার আষল নাম ও ডাক নাম একই হবে। আল্লাহ তাঁকে সমগ্র বিশ্বেও বুকে প্রতিষ্ঠিত করবেন। তিনি লোক চক্ষুর অন্তরালে গমন করবেন। তাঁর অদৃশ্যতার সময় সীমা দীর্ঘ হবে, যাদের ঈমান শক্তিশালী তারাই শুধু তাঁর নেতৃত্বের উপর অটল থাকবেন।”
📚কিফায়া আল্ আসার, পৃঃ নং ৭, পুরানো প্রিন্ট; কিফায়া আল্ আসার, পৃঃ নং ৫৩- ৬৯, প্রিন্ট ক্বোম, ১৪০১ হিঃ।
🌷অন্যত্র এভাবে উল্লেখ আছে, রাসূলুল্লাহ বলেছেনঃ
“আমি নবীদের সর্দার আর আলী বিন আবি তালিব হচ্ছেন উত্তরাধীকারীদের নেতা। নিশ্চয়ই আমার পরে বার জন উত্তরাধীকারী হবেন। তাঁদের সর্বপ্রধান ও সর্ব প্রথম হচ্ছেন আলী বিন আবি তালিব। তার পর হাসান, হাসানের পর তাঁরই সহোদর ভ্রাতা হুসাইন এবং হুসাইনের পর পর্যায়ক্রমে আলী বিন হুসাইন, মুহাম্মাদ বিন আলী, জাফর বিন মুহাম্মাদ, মুসা বিন জা’ফর, আলী ইবনে মুসা, মুহাম্মাাদ ইবনে আলী, আলী ইবনে মুহাম্মাদ, হাসান ইবনে আলী এবং সর্বশেষ ইমাম হচ্ছেন আল্ মাহ্দী।” 📚ফারায়েদ আস সিমতাইন, খন্ডঃ ২, পৃঃ ৩১২, হাদীস নং ৫৬২।
🌷মুসলিম তার সহিহাতে নিম্নলিখিতভাবে এ হাদীসটি উল্লেখ করেছেনঃ
“আল্লাহর রাসূল (সাঃ) বলেছেন, দ্বীন ইসলাম ধ্বংস হবে না ক্বিয়ামত পর্যন্ত, অথবা বার জন খলিফার আগমন পর্যন্ত, তাঁদের মধ্যে সর্ব প্রথম ইমাম হচ্ছেন আলী ইবনে আবি তালিব, অতঃপর হাসান, তারপর হুসাইন, তারপর আলী ইবনে হুসাইন……….. তাঁদের সর্বশেষ হচ্ছেন আল্ মাহ্দী।”
🌷জনাব বুখারীও তার সহীহাতে এ হাদীসটি উল্লেখ করেছেন। ‘ইউনাবিউল মাওয়াদদা’ গ্রন্থে উক্ত হাদীসটির মধ্যে অতিরিক্ত আরো কয়েকটি কথা সংযুক্ত করা হয়েছে। গ্রন্থকার অর্থাৎ সর্বশেষ আল্ মাহ্দী কথাটি বর্ণনা করার পর লিখছেনঃ
(নবী (সাঃ) বলেছেন) তাঁরা হচ্ছেন পবিত্র মা’সুম ইমাম এবং আমার পরবর্তীতে আমার খলিফা। ”
📚সহীহ মুসলিম, খন্ডঃ ৬, পৃঃ ৩, ৪
📚সহীহ আল্ বুখারী, খন্ডঃ ৪, পৃঃ ১৬৫
📚ইউনাবীয় আল্ মাওয়াদদা, খন্ডঃ ১, পৃঃ ৩৪৯, খন্ডঃ ২, পৃঃ ৩১৬, খন্ডঃ ৩, পৃঃ ২০৭, ২৯১
📚সহীহ আততিরমিযি, খন্ডঃ ৩, পৃঃ ৩৪২, হাদীস নং ২৩৩০
📚সুনানে আবি দাউদ, খন্ডঃ ৩, পৃঃ ৩০২, হাদীস নং ৪২৫২
📚কানযুল উম্মাল, খন্ডঃ ১২, পৃঃ ১৬৫, হাদীস নং ৩৪৫০১।
📚মাওয়াদদা আল্ কোববা, পৃঃ ২৯
📚মাক্বতাল আল্ হুসাইন লি খাওয়ারেযমী, পৃঃ ১৪৬, হাদীস নং ৩২০
📚তারিখে দামেস্ক, খন্ডঃ ৭, পৃঃ ১০৩
📚উসুদুল গা’বা, খন্ডঃ ৫, পৃঃ ৫৭৪
https://www.facebook.com/1518184255136224/posts/2581443785476927/