একটি ধাঁধার উত্তর!

854 0

মুসলমান হিসেবে আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মাদ মুস্তাফা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহি ওয়া সাল্লামের সকল সাহাবী কেরামের প্রতি আমাদের পরিপূর্ণ সম্মান ও শ্রদ্ধা আছে। আর “কোন সাহাবীর সমালোচনা করা যাবে না”- কথাটির সাথেও আমরা একমত। কিন্তু এখনো পর্যন্ত আমাদের জানাই হলো না যে, সাহাবীর সংজ্ঞা কী? এবং কী গুণ থাকলে নবীজীর আমলের একজন মুসলমানকে সাহাবী বলা যায়? তাই, সবার আগে সাহাবীদের লিষ্ট সামনে আসা প্রয়োজন। তাহলে বুঝা যাবে, কারা সাহাবী আর কারা সাহাবী না। সমালোচনা তো পরের ধাপ।

কোরআনের আয়াত ও রাসূলের হাদীসে সাহাবীদের ভাল ভাল কাজের জন্যে তাদের প্রশংসা করা হয়েছে। তাদের উপর আল্লাহ সন্তুষ্ট হয়েছেন আর তারাও আল্লাহর উপর সন্তুষ্ট। কিন্তু যদি কোন চোর, বাটপার, আসামী, দাগী অপরাধী, যিনাকার, প্রতারক, মদখোর, উৎকোচ দানকারী, খুনী, ইসলামী খেলাফতের বিরোদ্ধে অস্ত্র ধারনকারী এবং নবীর আহলে বাইতের বিরোদ্ধে গালাগালির রেওয়াজ চালুকারীর উপর সম্মানিত “সাহাবী” শব্দটি আরোপ করা হয়, তাহলে তো সেই ব্যক্তি সাহাবী হয়ে যায় না। কেননা, রাসূলের সাথে সম্পর্ক জুড়িয়ে দিলে এবং আল্লাহর রাসূলের সাথী হবার ঘোষণা দিলে অবশ্যই তাকে রাসূলের সিরাতে ও আদর্শে চলতে হবে, তাহলেই সে হবে সাহাবী।

আমরা যদি রাসূলের আমলের কোন মুসলমানের জীবনে ইসলাম গ্রহণ করার পর আল্লাহ, রাসূল ও কোরআন বিরোধী কোন কাজ দেখতে পাই, তারপরো কী সেই মুসলমানকে সাহাবী নামে আখ্যায়িত করা যাবে?

ধরুন, আপনি নবীজীর আমলের কোন এক নির্দিষ্ট মুসলমানকে সাহাবী বলে মানছেন। আরবদের লেখা এবং হিজরী দ্বিতীয় শতাব্দি থেকে এ পর্যন্ত সকল ইতিহাসের কিতাবে লেখা তার জীবনী পড়ে দেখা গেল, তার জীবনে অনেক ভুল কাজ, গর্হিত ও অন্যায় কাজ রয়েছে। সাথে সাথে সাহাবীদের প্রশংসা করে আল্লাহর আয়াত ও নবীজীর হাদিসও পড়েছেন। এখন আপনি সেই নির্দিষ্ট মুসলমান সম্পর্কে কি মতামত রাখবেন? আপনি কী বলবেন যে, সাহাবীদের কোন ভুল ধরা যাবে না, তাদের সমালোচনা করা যাবে না ইত্যাদি? আপনি কী ঐ ব্যক্তির ত্রুটি ও অন্যায় জানার পরো চোখ বন্ধ রেখে বলবেন যে, সে কোন ভুল ও অন্যায় করে নাই? এরকমটি করলে তো আপনি ধ্রুব সত্যকেই আড়াল করলেন। তাছাড়াও আপনার মতে সেই সাহাবী মুসলমানের অন্যায় কাজকে মেনে নিলে আল্লাহর রাসূল(সা.) ও কোরআনকেই অবমাননা করা হয়। কেননা, আল্লাহ ও তাঁর রাসূল তাদের উপর সন্তুষ্ট হয়েছেন। আপনি দুই দিকেই বিপদে পড়েছেন ভাবছেন? আবার যদি তার ভুল ও অন্যায়-অপরাধের কথা অকপটে বলে দেন তাহলে মনে করবেন “সাহাবীদের সমালোচনা করা যাবে না” কথাটির বিপরীত হয়ে যাচ্ছে, তাহলে এখন আপনি কী করবেন?

আসলে এই ধাঁধার উত্তর খুবই সহজ। তবে এর জন্যে আপনার মন ও চিন্তাকে নিরপেক্ষ অবস্থানে রাখতে হবে। আপনি যাকে সাহাবী মানছেন, তার অন্যায় ও অপরাধ দেখে যদি আপনি তাকে সাহাবী শব্দে ভুষিত না করেন তাহলেই কিন্তু সব সমস্যার সমাধান হয়ে যায়। কিছু হাদিস ও ইতিহাসের কিতাবে বর্ণিত আছেঃ “নবীজীর আমলের সব মুসলমানরা ভাল”, এ কথার সাথে তাদের অনেকের আমলের কোন মিল নেই।” এ জন্যে নিশ্চয় বলতে হবে, “নবীর আমলের সকল মুসলমানরা ভাল ও তারা সবাই তারকা সদৃশ্য”-এ কথাটি নবীর নামে জাল করা হয়েছে। আর তা না হলে এই ধাঁধার উত্তর আপনি মিলাতে পারবেন না কখনো।‎

Related Post

খালেদ বিন ওয়ালিদ

Posted by - January 21, 2020 0
হযরত খালেদ বিন ওয়ালিদ সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত কিছু তথ্যঃ নাম: খালেদ বিন ওয়ালিদ পিতা: মুগিরা মাখযুমি ইসলাম গ্রহণ: হুদাইবিয়া সন্ধির পর,…

হযরত খালেদ বিন ওয়ালিদ

Posted by - January 21, 2020 0
হযরত খালেদ বিন ওয়ালিদ সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত কিছু তথ্যঃ নাম: খালেদ বিন ওয়ালিদ পিতা: মুগিরা মাখযুমি ইসলাম গ্রহণ: হুদাইবিয়া সন্ধির পর,…

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *