➡️ইরান যে কারণে সিরিয়া কে সমর্থন দিচ্ছে⬅️
👉ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহিল উজমা খামেনেয়ি বলেছেন, “সিরিয়া বর্তমানে প্রতিরোধ সংগ্রামের ফ্রন্ট লাইনে রয়েছে। সুতরাং সিরিয়ার প্রতি সমর্থন জানানো আমাদের সবারই কর্তব্য।” তিনি বলেন, “সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আসাদ একজন মহান প্রতিরোধ সংগ্রামী হিসেবে সামনে এসেছেন এবং কোনো ধরনের সন্দেহে না পড়ে তিনি দৃঢ় থেকেছেন। এটা একটি জাতির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
ইরানের সর্বোচ্চ নেতা (গতকাল) তেহরানে সিরিয়ার ওয়াক্ফ বিষয়ক মন্ত্রী মোহাম্মাদ আব্দুস সাত্তার আস-সাইয়্যেদের নেতৃত্বে সেদেশের আলেমদের একটি প্রতিনিধিদলকে দেয়া সাক্ষাতে এসব কথা বলেছেন। তিনি আরও বলেন, “আপনারা আজ যেসব মুসলিম জাতিকে অপমানের মধ্যে জীবনযাপন করতে দেখছেন এর জন্য দায়ী হচ্ছেন তাদের নেতারা। কোনো জাতির মাঝে ইসলাম ধর্ম ও নিজস্ব পরিচিতির প্রতি শ্রদ্ধাশীল নেতা থাকলে সেই জাতি সম্মানিত হয় এবং শত্রুরা এ ধরণের জাতির কোনো ক্ষতি করতে পারে না।”
পর্যবেক্ষকরা বলছেন, ২০১১ সালের মার্চ থেকে উত্তর আফ্রিকাসহ গোটা মধ্যপ্রাচ্যে ইসলামি গণজাগরণ শুরুর একই সময়ে শত্রুরা সিরিয়ার জনগণের প্রতি সমর্থন দেয়ার অজুহাতে ওই দেশটির বিরুদ্ধে কঠিন ষড়যন্ত্র শুরু করে। সিরিয়ার বিরুদ্ধে পাশ্চাত্যসহ কয়েকটি আরব দেশের ক্ষোভ ও অসন্তোষের একটি বড় কারণ হচ্ছে দখলদার ইসরাইলের বিরুদ্ধে কঠোর প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে দামেস্ক। সিরিয়া ইসরাইলি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ সংগ্রামের ফ্রন্ট লাইনে থাকায় এবং আমেরিকা ও তার মিত্রদের বৃহৎ মধ্যপ্রাচ্য গঠনের পরিকল্পনা ব্যর্থ করে দেয়ায় শত্রুরা দামেস্ক সরকারের পতন ঘটানোর জন্য সন্ত্রাসীদের লেলিয়ে দিয়ে কঠিন ষড়যন্ত্র শুরু করে। এ লক্ষ্যে শত্রুরা বিভিন্ন দেশ থেকে সন্ত্রাসীদের এনে সিরিয়ায় মোতায়েন করে এবং তাদেরকে অর্থ ও অস্ত্র দিয়ে সহযোগিতা করে।
সিরিয়ার জনগণ ও প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদ চলমান প্রক্সিযুদ্ধে ভাড়াটে সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থান নিয়েছেন। তাদের দৃঢ় অবস্থানের কারণে পাশ্চাত্যের বৃহৎ শক্তি ও তাদের মিত্ররা এ অঞ্চলে তাদের কোনো লক্ষ্যই বাস্তবায়ন করতে পারেনি। সিরিয়া ইসরাইলের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ সংগ্রামের ফ্রন্ট লাইনে থাকার কারণেই ইসলামি ইরান বাশার আল আসাদ সরকারের প্রতি সর্বাত্মক সমর্থ জানিয়েছে। শত্রুদের উদ্দেশ্য ছিল এ অঞ্চলে সিরিয়া সরকারের পতন ঘটিয়ে এবং দেশটিকে খণ্ড বিখণ্ড করে সিরিয়াকে দুর্বল করে দেয়া যাতে দখলদার ইসরাইলের নিরাপত্তা নিশ্চিত হয়। কিন্তু সে লক্ষ্য তারা আজো বাস্তবায়ন করতে পারেনি।
পর্যবেক্ষকরা বলছেন, প্রতিরোধ সংগ্রাম দুর্বল করার জন্য শত্রুদের ব্যর্থতা থেকে প্রমাণিত হয়েছে, জাতীগুলোর নেতারা যদি স্বাধীন, আত্মসম্মানবোধ সম্পন্ন এবং সংগ্রামী চেতনায় উজ্জীবিত থাকে তাহলে শত্রুর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে তারা বিজয়ী হবেই। এসব বৈশিষ্ট্যের কারণে বর্তমানে সিরিয়ার জনগণ ও নেতৃবৃন্দ শত্রুর কঠিন ষড়যন্ত্র মোকাবেলায় সক্ষম হয়েছে। শত্রুরা বুঝতে পেরেছে নিজেদের পরিচয় সম্পর্কে সচেতন সিরিয়ার জনগণকে পরাজিত করা সহজ কাজ হবে না।
স্বাধীন নীতি, আত্মসম্মানবোধ ও সংগ্রামী চেতনার কারণেই ৪০ বছর পরও ইরানের ইসলামি বিপ্লব টিকে আছে। ইরানে ইসলামি বিপ্লবের শুরু থেকেই আমেরিকা, সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়ন, ন্যাটো জোট ও এ অঞ্চলের রাজতন্ত্র শাসিত আরব দেশগুলো ইরানের ইসলামি বিপ্লবকে ধ্বংস করার জন্য ব্যাপক চেষ্টা চালিয়ে আসছে। কিন্তু আজ পর্যন্ত তারা সফল হয়নি। #
পার্সটুডে/রেজওয়ান হোসেন/২