✍️[হযরত বারায়া ইবনে আযিব(রাঃ) বলেন, আমি আমিরুল মুমিনিন আলী (সালাওয়াতুল্লাহি আলাইহি)-এর খেদমতে আল্লাহর কসম দিয়ে আরজ করলাম, আমাকে আল্লাহর ইসমে আযম শিখিয়ে দিন, যা দয়াল প্রভু হযরত জিবরাঈলকে দিয়ে তাঁর রাসূল(সা.)-কে শিক্ষা দিয়েছেন এবং তিঁনি আপনাকে বলে দিয়েছেন। আল্লাহর প্রিয় ওলী ইমাম আলী বললেন-
🔊“হে রারায়া ইবনে আযিব! যদি তুমি প্রশ্ন না করতে তাহলে আমি এই তথ্য সাথে করে কবরে চলে যেতাম। শুনে রাখো! যখন আল্লাহকে তাঁর ইসমে আযম দিয়ে ডাকতে ইচ্ছা পোষন করবে তখন সূরা আল হাদীদ (সূরা নং ৫৭)-এর প্রথম ছয় আয়াত অর্থাৎ «بِسمِ اللهِ الرَُّحمنِ الرَّحیم» সহ
«وَهُوَ عَلیمٌ بِذاتِ الصُّدُورِ»
পর্যন্ত এবং সূরা আল হাশর (সূরা নং ৫৯)-এর শেষের তিন আয়াত অর্থাৎ هُوَ الَّذی لَا إِلهَ إِلَّا هُو থেকে সূরার শেষ পর্যন্ত পড়বে। অতঃপর বলবে, হে যিনি উক্ত আয়াতসমূহে উল্লেখিত গুণাবলীতে গুনান্বিত, তুমি আমাকে এরকম করে দাও…….
আল্লাহর কসম! যদি কোন হতভাগার জন্যেও পড়, এর মাধ্যমে সে সৌভাগবান হয়ে যাবে।”
হযরত বারায়া ইবনে আযিব বললেন, আমি এই আয়াতগুলো দুনিয়ার জন্যে পড়বো না।
ইমাম আমিরুল মুমিনিন বললেনঃ “এটাও সাওয়াবের কাজ।” আল্লাহর রাসূল(সা.) আমাকে অসিয়ত করেছেন, আমি যেনো মহা কষ্টের কাজে আল্লাহকে এই নামগুলো বলে ডাকি।]💐
📚রিসালাহ নূরুন আ’লা নূর, পৃঃ নং ২৯।
বিসমিল্লাহ সহ সূরা আল হাদীদ (সূরা নং ৫৭)-এর প্রথম ছয় আয়াতঃ
بِسْمِ اللَّهِ ٱلرَّحْمـٰنِ ٱلرَّحِيمِ
سَبَّحَ لِلَّهِ مَا فِى ٱلسَّمَاوَاتِ وَٱلأَرْضِ وَهُوَ ٱلْعَزِيزُ ٱلْحَكِيمُ. لَهُ مُلْكُ ٱلسَّمَاوَاتِ وَٱلأَرْضِ يُحْيِـى وَيُمِيتُ وَهُوَ عَلَىٰ كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ. هُوَ ٱلأَوَّلُ وَٱلآخِرُ وَٱلظَّاهِرُ وَٱلْبَاطِنُ وَهُوَ بِكُلِّ شَيْءٍ عَلِيمٌ. هُوَ ٱلَّذِى خَلَقَ ٱلسَّمَاوَاتِ وَٱلأَرْضَ فِى سِتَّةِ أَيَّامٍ ثُمَّ ٱسْتَوَىٰ عَلَى ٱلْعَرْشِ يَعْلَمُ مَا يَلِجُ فِى ٱلأَرْضِ وَمَا يَخْرُجُ مِنْهَا وَمَا يَنزِلُ مِنَ ٱلسَّمَآءِ وَمَا يَعْرُجُ فِيهَا وَهُوَ مَعَكُمْ أَيْنَ مَا كُنتُمْ وَٱللَّهُ بِمَا تَعْمَلُونَ بَصِيرٌ. لَّهُ مُلْكُ ٱلسَّمَاوَاتِ وَٱلأَرْضِ وَإِلَى ٱللَّهِ تُرْجَعُ ٱلأُمُورُ. يُولِجُ ٱلْلَّيْلَ فِى ٱلنَّهَارِ وَيُولِجُ ٱلنَّهَارَ فِى ٱلْلَّيْلِ وَهُوَ عَلِيمٌ بِذَاتِ ٱلصُّدُورِ
অনুবাদঃ “(বলো! আমি) আল্লাহর নামে (শুরু করছি), যিনি রহমান (পরম করুণাময় সকল সৃষ্টির জন্যে), যিনি রাহিম (অসীম দয়াবান কিছু বিশেষ ব্যক্তির জন্যে)।
আসমানসমূহ ও যমিনে যা কিছু আছে তার সবই আল্লাহর তসবীহ পাঠ করে এবং তিনি পরাক্রমশালী ও প্রজ্ঞাময়।(১)
আসমানসমূহ ও যমিনের সার্বভৌমত্ব তাঁর জন্যেই নির্ধারিত। তিনি জীবন দান করেন ও মৃত্যু ঘটান। তিনি সর্ব বিষয়ে সর্বশক্তিমান।(২)
তিনিই আদি, তিনিই অন্ত; তিনিই প্রকাশ্য, তিনিই গুপ্ত এবং তিনি সর্ব বিষয়ে সম্যক অবহিত।(৩)
তিনিই ছয় দিনে [=ছয় পর্যায়ে] আসমানসমূহ ও যমিন সৃষ্টি করেছেন। অতঃপর ক্ষমতার আসনে সমাসীন হয়েছেন (এবং এ বিশ্ব ভ্রমান্ড পরিচালনা করছেন)। যা কিছু মাটির অভ্যন্তরে প্রবেশ করে এবং যা কিছু তা থেকে বের হয়ে আসে, আর যা কিছু আসমান থেকে অবতীর্ণ হয় এবং যা কিছু তার দিকে উর্দ্ধগমন করে সেগুলো তিনি জানেন । আর তোমরা যেখানেই থাক না কেন তিনি তোমাদের সঙ্গেই আছেন, তোমরা যা কিছু করো আল্লাহ তা দেখেন।(৪)
আসমানসমূহ ও যমিনের সার্বভৌমত্ব তাঁরই এবং সব কিছু আল্লাহরই দিকে প্রত্যাবর্তিত হবে।(৫)
রাতকে তিনি দিনের (সোনালী আলোর) মধ্যে লুকিয়ে রাখেন এবং দিনকে তিনি রাতের (আধারের) মধ্যে গোপন করে দেন। আর তিনি অন্তরসমূহে লুকায়িত সকল ব্যাপারে সম্যক জ্ঞান রাখেন।(৬)”
এবং সূরা আল হাশর (সূরা নং ৫৯)-এর শেষের তিন আয়াতঃ
هُوَ ٱللَّهُ ٱلَّذِى لاَ إِلَـٰهَ إِلاَّ هُوَ عَالِمُ ٱلْغَيْبِ وَٱلشَّهَادَةِ هُوَ ٱلرَّحْمَـٰنُ ٱلرَّحِيمُ. هُوَ ٱللَّهُ ٱلَّذِى لاَ إِلَـٰهَ إِلاَّ هُوَ ٱلْمَلِكُ ٱلْقُدُّوسُ ٱلسَّلاَمُ ٱلْمُؤْمِنُ ٱلْمُهَيْمِنُ ٱلْعَزِيزُ ٱلْجَبَّارُ ٱلْمُتَكَبِّرُ سُبْحَانَ ٱللَّهِ عَمَّا يُشْرِكُونَ. هُوَ ٱللَّهُ ٱلْخَالِقُ ٱلْبَارِئُ ٱلْمُصَوِّرُ لَهُ ٱلأَسْمَآءُ ٱلْحُسْنَىٰ يُسَبِّحُ لَهُ مَا فِى ٱلسَّمَاوَاتِ وَٱلأَرْضِ وَهُوَ ٱلْعَزِيزُ ٱلْحَكِيمُ
অনুবাদঃ “তিনি সে-ই আল্লাহ, যিনি ছাড়া অন্য কোন ইলাহ নেই। তিনি অদৃশ্য এবং দৃশ্যের পরিজ্ঞাতা, তিনি রহমান (পরম করুণাময় সকল সৃষ্টির জন্যে), তিনি রাহিম (অসীম দয়াবান কিছু বিশেষ ব্যক্তির জন্যে)।(২২)
তিনি সে-ই আল্লাহ, যিনি ছাড়া আর কোন ইলাহ নেই। তিনিই অধিপতি, তিনিই পবিত্র, তিনিই শান্তি, তিনিই নিরাপত্তা বিধায়ক, তিনিই রক্ষক, তিনিই পরাক্রমশালী, তিনিই প্রবলভাবে সকল কিছুর সংশোধনকারী, তিনিই অতীব মহিমান্বিত। তারা [=মুশরিকরা] তাঁর জন্যে যে সমকক্ষ নির্ধারন করে তা থেকে আল্লাহ মুক্ত ও পুত-পবিত্র।(২৩)
তিনিই আল্লাহ, (তিনি) সৃষ্টিকর্তা, উদ্ভাবক, রূপদাতা। সকল সুন্দর সুন্দর নাম তাঁর জন্যেই নির্দিষ্ট। আসমান ও যমিনে যা কিছু আছে সবকিছু তাঁর তসবিহ ও গুণগান করে এবং তিনি পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়।(২৪)”