এক নজরে ইমাম রিদ্বা আলাইহিস সালাম

 নামঃ আলী ইবনে মুসা (আঃ)
 ডাক নামঃ আবুল হাসান
 উপাধিঃ আর রিদ্বা, গারিবুল গুরাবা, মুঈনুয যুআফা ওয়াল ফুকারা
 পিতার নামঃ মুসা ইবনে জা’ফার(আঃ)
 মাতার নামঃ নাজমা খাতুন
 জন্ম তারিখঃ হিজরী ১৬৪ সনের ১১ ই জিলক্বাদ
 জন্ম স্থানঃ মদিনা
 ইমামতের সময়কালঃ বিশ বৎসর
 শাহাদাতের তারিখঃ ৩০ শে সফর/সফর মাসের শেষ তারিখ ২০৩ হিজরী
 শাহাদাতের স্থানঃ বাদশাহ্ মামুনের খেলাফতের রাজধানী *মারভ* শহর
 সমাধি স্থলঃ বর্তমান ইরানের খোরাসান প্রদেশের *মাশহাদ* নগরী
 শাহাদাতের কারণঃ *আব্বাসীয় খলিফা মামুনুর রাশিদ* ইমামকে বিষ প্রয়োগে হত্যা করে।

???? ইমাম রিদ্বা(আ.)-এর চরিত্রের কিছু দিকঃ

 আমাদের পবিত্র ইমামরা (আ.) মানুষের মাঝে ও মানুষের সাথে জীবন যাপন করতেন এবং কার্যতঃ তাঁরা মানুষকে জীবনের পবিত্রতা ও কল্যাণের শিক্ষা দিতেন তাঁরা ছিলেন অপরের আদর্শ। যদিও ইমামতের সমুন্নত মর্যাদা তাঁদেরকে অন্য সকলের চেয়ে স্বতন্ত্র করেছে। তাঁরা আল্লাহর নির্বাচিত প্রতিনিধি ও পৃথিবীতে আল্লাহর হুজ্জাত ছিলেন। তথাপি সমাজে তাঁরা নিজেদেরকে আলাদা করে দেখতেন না এবং মানুষের সংস্পর্শ থেকে নিজেদেরকে দূরে রাখতেন না। কিংবা স্বৈরাচারী ও স্বেচ্ছাচারীদের মত নিজেদের জন্য কোন বিশেষত্ব ও স্বাতন্ত্রিকতা বজায় রাখতেন না এবং কখনোই মানুষকে দাসত্ব ও নিকৃষ্ট অবস্থার দিকে ঠেলে দিতেন না। আর তাঁরা মানুষকে কখনো অসম্মান করতেন না।

 হযরত ইব্রাহীম ইবনে আব্বাস (রহ.) বলেনঃ “কখনোই দেখিনি যে, ইমাম রিদ্বা(আ.) তাঁর বক্তব্যে কারো প্রতি বিদ্রুপ করেছেন। অনুরূপ, দেখিনি কখনো তিনি কারো বক্তব্য শেষ না হতেই তার কথায় বিঘ্ন সৃষ্টি করেছেন। তিনি কখনোই অন্যের উপস্থিতিতে তাঁর পা মোবারক ছড়িয়ে দিতেন না। কখনোই তার খাদেম বা গোলামকে ভর্ৎসনা করতেন না। কখনো অট্টহাঁসি দিতেন না, বরং স্মিত হাঁসতেন। খাবারের সময় তার দস্তরখানায় গৃহের সকলকে এমনকি দ্বাররক্ষীকেও ডেকে বসাতেন এবং তাদের সাথে একত্রে আহার করতেন। তিনি রাতে কম ঘুমাতেন এবং অধিক জাগ্রত থাকতেন। তিঁনি অধিকাংশ রাত-ই ভোর পর্যন্ত আল্লাহর উপাসনায় মশগুল থাকতেন। তিঁিন বেশী বেশী রোযা রাখতেন, বিশেষ করে প্রতি মাসের তিনটি রোযা কখনোই ত্যাগ করতেন না।” (সম্ভবতঃ মাসের প্রথম বৃহস্পতিবার, মাসের মধ্যবর্তী বুধ বার এবং মাসের শেষ বৃহস্পতিবারের রোযার কথা বলা হয়েছে।

 আমাদের পবিত্র ইমামরা (আ.) বলেছেন, যারা রমযান ব্যতীত প্রতি মাসে এ তিনটি রোযা রাখে তারা যেন সারা বছর রোযা রাখল)। “তিঁনি প্রচুর পরিমাণে কল্যাণ কর্ম ও গোপনে দান করতেন এবং অধিকাংশ সময়ই রাতের অন্ধকারে লোক চক্ষুর আড়ালে দরিদ্রদেরকে সাহায্য করতেন।” (আ’লামূল ওয়ারা, পৃঃ নং ৩১৪)।

 হযরত মুহম্মদ ইবনে আবি ইবাদ বলেনঃ “হযরতের(আ.) বিছানা গৃষ্মকালে ছিল মাদুর আর শীতকালে ছিল চট। তাঁর পোশাক (গৃহাভ্যন্তরে) ছিল মোটা ও রুক্ষ। কিন্তু যখন কোন সাধারণ সভায় যেতেন তখন খুব পরিপাটি হয়ে যেতেন (সুন্দর ও প্রচলিত পরিধেয় পরিধান করতেন)।” (আ’লামূল ওয়ারা, পৃঃ নং ৩১৫)।

 এক রাতে ইমামের গৃহে অতিথি ছিল। কথপোকথনের সময় একটি প্রদীপে সমস্যা দেখা দিল। অতিথি প্রদীপটিকে সমস্যামুক্ত করার জন্য উদ্যত হল। কিন্তু ইমাম তাকে অনুমতি দেননি। ইমাম স্বয়ং এ কাজটি সম্পাদন করেছিলেন এবং বলেছিলেনঃ “আমরা এমন এক সমষ্টি, যারা অতিথিদের দিয়ে কাজ আদায় করায় না।” (আল কাফি, খণ্ড ৬,
পৃঃ নং ২৮৩)।