বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
গুনাহ্ দুই ভাগে বিভক্ত। ছোট ছোট গুনাহকে বলা হয় সগীরা গুনাহ। আর বড় বড় গুনাহকে বলে কবীরা গুনাহ। ছোট গুনাহ্ ইচ্ছাকৃতভাবে করলে আল্লাহর অবাধ্যতা করা হয়। এতে তাওবা(আর গুনাহ্ না করার অঙ্গীকার) ছাড়া আল্লাহ্ ক্ষমা করবেন না। কিন্তু কবীরা গুনাহর কারণে মানুষ ইসলাম থেকে খারিজ হয়ে যায়। বারযাখে কঠিন শাস্তি হয়। কোন নবি এবং ইমামের শাফায়াত লাভ করা যায় না। এর ক্ষতি পূরণের জন্যে আল্লাহর কাছে তাওবার অঙ্গীকারের পাশাপাশি কান্নাকাটিও করতে হয়। আর তা না হলে আল্লাহর কাছে ক্ষমা পাওয়া যায় না। সকল ধরনের গুনাহ্ থেকে আল্লাহর কাছে পানাহ্ চাই। চোখের অশ্রু দিয়ে আল্লাহর কাছে ক্ষমা ভিক্ষা চাই। রাহমানুর রাহিম হয়তোবা করুনা করতে পারেন। যে কোন দোয়ার পূর্বে তিনবার দরুদ পড়ে নিলে দোয়া কবুল হওয়ার সম্ভাবনা বেশী থাকে।
নিম্নে ৫০ টি কবিরা গুনাহ্ উল্লেখ করা হলো ।
১। আল্লাহর সাথে শরিক করা ।
২। আল্লাহর রহমত থেকে হতাশ হওয়া ।
৩। আল্লাহর রহমত থেকে হতাশা প্রকাশ করা ।
৪। আল্লাহর প্রতিশোধ গ্রহণ থেকে নিজেকে নিরাপদ মনে করা ।
৫। মানুষ হত্যা করা ।
৬। পিতামাতার অবাধ্যতা(ভাল কাজে) ।
৭। আত্মীয়ের সাথে সম্পর্কচ্ছেদ করা ।
৮। ইয়াতিমের মাল ভক্ষন করা ।
৯। সুদ (রেবা)খাওয়া ।
১০। যিনা ও ব্যাভিচার করা ।
১১। সমকামিতা ।
১২। কারো সতিত্বের উপর অপবাদ দেয়া ।
১৩। মদ্যপান করা ।
১৪। জুয়া খেলা ।
১৫। অর্থহীন শব্দ ও বাদ্যে মনযোগ দেয়া ।
১৬। অবৈধ গান রচনা ও কন্ঠ দেয়া ।
১৭। মিথ্যা কথা বলা ।
১৮। মিথ্যা শপথ করা ।
১৯। মিথ্যা সাক্ষ্য দেয়া ।
২০। সত্য সাক্ষ্য না দেয়া ।
২১। প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করা ।
২২। বিশ্বাষঘাতকতা ।
২৩। বাচালতা।
২৪। ওজনে কম দেয়া ।
২৫। হারাম মাল খাওয়া ।
২৬। অন্যের অধিকার(মানুষের অধিকার, পিতা-মাতার অধিকার, স্বামী-স্ত্রীর অধিকার ইত্যাদি) আদায় না করা ।
২৭। জিহাদের ময়দান থেকে পলায়ন করা ।
২৮। সন্দেহপ্রবনতা(কোন মুসলমানের ব্যাপারে)।
২৯। অসহায় ও অত্যাচারিত মানুষকে সাহায্য না করা ।
৩০। অপব্যায় করা ।
৩১। স্পর্শকাতরতা(মানুষের কোন কথা শুনেই ভাবা, না জানি আমাকে তিরস্কার করে বল্লো, না জানি আমাকে অপমান করছে ইত্যাদি ধরনের মনোভাব অথবা কোন ভাল কথা বললেও বা ভাল কথা শুনলেও মাইন্ড করে ফেলা ইত্যাদি)।
৩২। অহংকার করা(অহংকার আর গর্বের মধ্যে সুক্ষ্য পার্থক্য আছে)।
৩৩। মুসলমানদের সাথে যুদ্ধ করা ।
৩৪। হারাম খাবার যেমন মৃত প্রাণী ও শুকরের মাংস ভক্ষন করা ।
৩৫। হজ্বের গুরুত্ব না দেয়া।
৩৬। ইচ্ছাকৃতভাবে ফরজ তরক করা(শুধু নামাজই নয়, যে কোন ফরজ কাজ, যেমন পর্দা না করা একটি ফরজ তরক। যারা এই ফরজ তরক করছেন তারা হর হামেশা কবিরা গুনাহতে লিপ্ত আছেন।)
৩৭। গুনাহ্ করার ব্যাপারে পিড়াপীড়ি করা ।
৩৮। গিবত(অপরের দোষ নিয়ে পিছনে পিছনে বলাবলি করা) করা এবং শোনা।
৩৯। মিথ্যা গুজব রটানো ।
৪০। মুমিনের সম্মান নষ্ট করা(একজন মুমিনকে হত্যা করার চেয়েও বড় গুনাহ)।
৪১। যাদু-টোনা করা।
৪২। অত্যাচারিকে সহযোগিতা করা ।
৪৩। চুরি করা ।
৪৪। না- মাহরাম মেয়ে বা মহিলার কোন অঙ্গের প্রতি দৃষ্টি দেয়া।
৪৫। অন্যায়কে ঘৃণা না করা।
৪৬। কোন হারাম কাজে সহযোগীতা করা।
৪৭। না-মাহরামের সাথে নিরিবিলি অবস্থান করা(এখন আধুনিক বর্বরতার যুগে এই গুনাহর পরিধি অনেক বেড়েছে, এটা আধুনিকতার অশ্লীল পুরুস্কার। তাই যে কোন না- মাহরাম মেয়ের সাথে চ্যাটে বসাও নিরিবিলি বসার মধ্যে গণ্য হতে পারে)।
৪৮। অশ্লীল বাক্য, গালি ও দূর্ণাম করা।
৪৯। আল্লাহ্, নবী-রাসূল ও ইমামদের নামে মিথ্যা কসম কাটা।
৫০। আল্লাহ্, নবী-রাসূল ও ইমামদের উপর মিথ্যা আরোপ করা।
[বি.দ্র. যেসব গুনাহ অন্য কোন মানুষের সাথে সম্পর্কীত সেগুলোর জন্যে সেই মানুষের কাছ থেকেই ক্ষমা নিতে হবে। কেননা, বান্দার হক্ব নষ্ট করলে আল্লাহ্ নিজেও মাফ করবেন না।]