[আবু আব্দুল্লাহ মুহাম্মাদ ইব্নে খাফিফ সিরাজী ছিলেন সোরা পীর সুপরিচিত। তিনি ছিলেন হিজরী চতুর্থ শতাব্দির আধ্যাত্মিক মহা সাধকদের অন্যতম। তিনি দীর্ঘায়ু লাভ করেছিলেন। তাঁর বক্তৃতামালা ও বর্ণিত আলোচনা ও কথোপকথন আধ্যাত্মিক সাধকদের জন্যে অত্যন্ত গুরুত্ব বহন করে আসছে। তিনি সব সময় ভ্রমনে কাটাতেন। তাঁর পিতা কিছুকাল পারস্যের ‘ফারস’ প্রদেশে বাদশাহী করেছেন। তিনি হিজরী ৩৭১-১৪ সনে পরলোকগমন করেন। ইরানের সিরাজ নগরীর এক ময়দানে তাঁর মাজার অবস্থিত।]
জনশ্রুতি আছে যে তাঁর এমন দু’জন মুরীদ ছিল যাদের দু’জনেরই নাম ছিল ‘আহমাদ’। তাই তিনি একজনকে ডাকতেন ‘বড় আহমাদ’ আর অপরজনকে ডাকতেন ‘ছোট আহমাদ’ বলে। তিনি ছোট আহমাদ-এর প্রতি বিশেষ দৃষ্টি রাখতেন এবং তাকে বড় আহমাদের চেয়ে বেশী মহব্বত করতেন। মুরীদদের অনেকেই হুজুরের এই অতি স্নেহ এবং দু’জনের প্রতি তাঁর বৈষম্য ব্যবহারে অসন্তুষ্ট ছিলো।
একদিন তারা পীরের-এর নিকট আরজ করে বসলো : “হুজুর! বড় আহমাদ তো অনেক কঠোর কৃচ্ছসাধনা করেছে এবং আধ্যাত্মিক সাধনার পরিভ্রমনে অনেক ধাপ অতিক্রম করেছে। কেন আপনি তাকে ছোট আহমাদের চেয়ে বেশী ভালবাসছেন না?”
সেদিন শেইখ শুধু এতটুকুই বলেন : “ঠিক আছে, আমি তোমাদের সামনে ওদের দু’জনের পরীক্ষা নেব। তবেই তো তাদের উভয়ের মর্যাদা ও মাক্বামের স্থান পরিস্কার হবে।” উপস্থিত মুরীদরা মাথা নেড়ে পীরের কথায় সম্মতি জানালো।
একদিন শেইখ বড় আহমাদকে বল্লেন : “আহমাদ! এই উটকে আমাদের ছাদের উপরে নিয়ে যাও।”
বড় আহমাদ বলো : “ইয়া শেখ! উটকে কিভাবে ছাদের উপরে নেয়া সম্ভব?”
শেখ বল্লেন : “আচ্ছা,ওটাকে রেখে দাও। তুমি ঠিকই বলেছো।”
অতঃপর তিনি ছোট আহমাদকে বল্লেন : “এই উটকে আমাদের ছাদের উপর নিয়ে যাও।” ছোট আহমাদ হুজুরের এই হুকুম পেয়ে তৎক্ষনাৎ কোমরে কাছা বাঁধলো। জামার আস্তিন উপরে তুললো। অতঃপর উটের পেটের নিচে গিয়ে তাকে কাঁধে নেওয়ার অনেক চেষ্টা করলো। উটকে ছাদে নিতে পারলো না সে। তার সকল চেষ্টাই ব্যর্থতায় পর্যবসিত হলো। এ অবস্থা দেখে আল্লাহর অলী, সাধক বড় পীর ছোট আহমাদকে হুকুম দিলেন আর চেষ্টা না করতে।
অতঃপর তিনি উপস্থিত মুরিদদের সম্বোধন করে বল্লেন : “যা চেয়েছিলাম তা পরিষ্কার হয়ে গেছে।” মুরিদান সকলে বললো : “যা হুজুরের কাছে পরিষ্কার, তা আমাদের কাছে এখনো অস্পষ্ট।”
শেখ বললেন : “ওদের দু’জনের মধ্যে একজন তার শক্তি ও সামর্থের প্রতি দৃষ্টি দিয়েছে, আমাদের হুকুমের প্রতি নয়। অন্যজন আমাদের হুকুমের ব্যাপারে খেয়াল রেখেছে, নিজের সামর্থের দিকে নয়।
একজন মানুষকে অবশ্যই তার কর্তব্যের প্রতি দৃষ্টি দেয়া উচিৎ এবং তা সম্পাদন করার জন্যে আত্মনিয়োগ করা বান্দার একান্ত দায়িত্ব। মনিবের হুকুম পালনে কষ্ট ও অসুবিধার কথা চিন্তা করা অনুচিত। আল্লাহ তাঁর বান্দাদের কাছ থেকে এটাই চান যে তারা যেন কর্তব্য পালনের ক্ষেত্রে দ্বিধাহীন চিত্তে তা আঞ্জাম দেয়ার জন্য উঠে পড়ে লেগে যায়। আর বান্দা যখনি কর্তব্য ও দায়িত্ব পালনের জন্যে মনোনিবেশ করে তখনি তাঁর নির্দেশ পালন করা হয়ে যায়, যদিও তা সম্পাদন করতে অপারগ হয়।
তবে মনে রাখা দরকার আল্লাহ মানুষের জন্যে কোন অসম্ভব কাজের হুকুম জারী করেন না।”(।
- হোম
- এক নজর
- আল কোরআন
- আল হাদিস
- রাসূলুল্লাহ (সাঃ)
- আহলে বাইত (আঃ)
- হযরত ফাতিমা আয্ যাহরা (আঃ)
- আলী ইবনে আবি তালিব (আঃ)
- ইমাম হাসান ইবনে আলী (আঃ)
- ইমাম হুসাইন ইবনে আলী (আঃ)
- ইমাম যাইনুল আবিদিন (আঃ)
- মুহাম্মাদ আল্ বাক্বির (আঃ)
- জা’ফার আস্ সাদিক্ব (আঃ)
- মুসা আল্ কাযিম (আঃ)
- আলী আর রিদ্বা (আঃ)
- মুহাম্মাদ আত্-তাক্বি (আঃ)
- আলী আল্ হাদী (আঃ)
- হাসান আল্ আসকারী (আঃ)
- মুহাম্মাদ আল মাহদী (আঃ)
- বিষয় ভিত্তিক হাদিস
- নাহজুল বালাঘা
- প্রসিদ্ধ হাদীস গ্রন্থ
- অমিয় বাণী
- দ্বীনের উসুল
- আমল
- আর্টিকেল ও গ্যালারি
- স্বাস্থ্য বিধান
- আর্কাইভ
- ফোরাম
- প্রশ্ন করুন