হঠাৎ অজ্ঞান হয়ে গেলে কী করবেন

1298 0

বাড়িতে বা অফিসে হঠাৎ কেউ অজ্ঞান হয়ে পড়লে রীতিমতো হুলুস্থুল শুরু হয়ে যায়। কেউ মাথায় পানি ঢালতে থাকে, কেউ পায়ের তালুতে তেল ঘষে, কেউ মুখের ভেতর কিছু দিয়ে মুখ খোলার চেষ্টা করে। আসলে জানা উচিত, এই মুহূর্তে কীভাবে আশপাশের লোকজন দায়িত্বশীল আচরণ করবেন।

এক. প্রথম কাজ হবে জরুরি সেবাদানকারীকে ফোন করা। এখন বাংলাদেশেও ৯৯৯ নম্বরে কল করে জরুরি সেবাদানকারীদের ডাকার ব্যবস্থা চালু হয়েছে। এ ছাড়া অনেক অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস আছে যাদের ফোন করলে দ্রুত বাড়ি পৌঁছে যায়। প্রথমেই এই কাজ করে ফেললে সেবাদানকারী এসে পৌঁছানো পর্যন্ত বাকি কাজগুলো করার সময় পাওয়া যাবে।

দুই. অজ্ঞান ব্যক্তিকে ভালোভাবে শুইয়ে দিন। ধারালো বস্তু, রান্নাঘর, আগুনের উৎস ইত্যাদি বিপজ্জনক জিনিস থেকে দূরে সরিয়ে আনুন। সম্ভব হলে এক দিকে কাত করে দিন, যাতে মুখে, গলায় যে লালা বা নিঃসরণ আছে, তা বেরিয়ে আসতে পারে।

তিন. বুকের ওঠানামা থেকে লক্ষ করুন রোগী শ্বাসপ্রশ্বাস নিচ্ছে কি না। যদি বাড়িতে বা আশপাশে কারও জানা থাকে কীভাবে মুখে মুখ লাগিয়ে শ্বাস চালু করতে হয়, তবে তাঁকে ডাকুন।

চার. আজকাল প্রায় সব বাড়িতেই রক্তচাপ মাপার যন্ত্র থাকে। রক্তচাপ খুব কম হলে বা পাওয়া না গেলেও পায়ের দিকটা একটু উঁচু করে দিন বা পায়ের নিচে বালিশ দিন।

পাঁচ. ডায়াবেটিসের রোগী হলে গ্লুকোমিটার দিয়ে পরীক্ষা করে দেখুন রক্তে শর্করা কমে গেছে কি না। যদি যন্ত্র না-ও থাকে, তবু মুখের ভেতর একটু চিনি দিয়ে দেওয়া ভালো। কিন্তু অজ্ঞান রোগীকে কোনো শরবত বা খাবার গেলানোর চেষ্টা করবেন না, এতে সেই খাবার পানি ফুসফুসে চলে যাওয়ার ঝুঁকি থাকে।

ছয়. রোগীর খিঁচুনি শুরু হলে আতঙ্কিত না হয়ে খিঁচুনি থামতে দিন, তারপর এক পাশে কাত করে দিন। মুখে কোনো চামচ বা এ জাতীয় জিনিস ঢোকানোর চেষ্টা করবেন না। জোর করে ধরে খিঁচুনি থামানো বা নাকের কাছে বিভিন্ন জিনিস শোঁকানোর চেষ্টা করে লাভ নেই।

সাত. অযথা ভিড় বাড়িয়ে ও চেঁচামেচি করে লাভ নেই। বরং এটি অনিয়মিত হৃৎস্পন্দনের কারণে হয়ে থাকলে রোগীর সমস্যা আরও বাড়তে পারে।

সবশেষ কথা, নানা কারণেই একজন সুস্থ-সবল মানুষ হঠাৎ অজ্ঞান হয়ে পড়তে পারেন। যে কারণেই হোক, জ্ঞান ফিরে আসুক আর না আসুক তাকে প্রাথমিক পরিচর্যার পর যেকোনো হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে যেতে হবে।

ডা. কানিজ ফাতেমা, সহযোগী অধ্যাপক, ক্রিটিক্যাল কেয়ার মেডিসিন, বারডেম হাসপাতাল
সূত্র – প্রথম আলো, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০১৮

Related Post

সুস্থ থাকার ছয়টি সুত্রঃ

Posted by - September 6, 2019 0
🔴সুস্থ থাকার ছয়টি সুত্রঃ 🔺খাবারে থাকবে লবন কম < সির্কা থাকবে বেশী। 🔺খাবারের লোকমা ছোট হবে < চাবাতে হবে বেশীক্ষণ।…

খেজুরের উপকারিতা

Posted by - August 17, 2019 0
ভাত খাওয়ার পর খেজুর খান! 👈ভাত ঠান্ডা প্রভাবজনিত বৈশিষ্ট্যের কারণে ভক্ষনকারী ব্যক্তি MS ও পার্কিনেশন-এর ন্যায় বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হতে…

রোজার কিছু জরুরী টিপস

Posted by - March 19, 2023 0
*এই গরমে রোজাঃ কী খাবেন, ✍️ কী খাবেন না* 🕌 আজকে পবিত্র মাহে রমজানের প্রথম রোজা। এবারের রোজায় গরম যেমন…

শাষ কষ্টের চিকিৎসা

Posted by - August 27, 2019 0
❖ শাষ কষ্ট অথবা এলার্জি দূর করার জন্যে (নিয়ত করে) প্রতিদিন সূরা ফুরক্বানের ১১নং আয়াত তিলাওয়াত করুন। ইনশাআল্লাহ ভাল হয়ে…

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *