(আমি)আল্লাহর নামে(শুরু করছি), যিনি রাহমান(পরম করুণাময় সকল সৃষ্টির জন্যে), যিনি রাহিম(অসীম দয়াবান কিছু বিশেষ ব্যক্তিদের জন্যে)।
১। কোরআনের বর্তমান উসমানী মুসহাফ এর ক্রমিক নম্বর অনুসারে এ সূরাটি উনানব্বইতম।
২। নাযিল হওয়ার ধারাবাহিকতা অনুসারে এ সূরাটি দশ নম্বরে অবস্থিত।
৩। নাযিলের স্থানটি হচ্ছে পবিত্র মক্কা নগরী।
৪। আয়াতের সংখ্যা ৩০।
৫। এ সূরাটির অভ্যন্তরে অবস্থিত শব্দ সংখ্যা ১৩৯।
৬। এ সূরাটির অভ্যন্তরে মোট বর্ণ ব্যবহৃত হয়েছে ৫৮৪ টি।
৭। এ সূরাটির অভ্যন্তরে “আল্ল-হ” শব্দটি ব্যবহৃত হয়েছে ১ বার।
৮। সূরাটির নামের অর্থ: “আল ফাজর” অর্থ ঊষার, প্রভাত, ভোর, সকাল ইত্যাদি।
৯। সূরাটির বৈশিষ্ট্য:
আল্লাহর ত্রোধ ও খোদায়ী আযাব যে শুধুমাত্র অপরাধী ও অনাচারী আ’দ ও সামুদ গোত্রদ্বয় এবং খোদাদ্রোহী ফির’আউন-এর উপরেই নির্দিষ্ট নয়, বরং আল্লাহর আযাব যে সকল তাগুতী শক্তি, অত্যাচারী ও ষড়যন্ত্রকারীদের উপর অবতীর্ণ হবে এ সূরাতে তা বর্ণনা করা হয়েছে।
১০। সামগ্রিকভাবে এ সূরাটির আলোচ্য বিষয় হচ্ছে নিম্নরূপ:
• ফাজর তথা পার্থিব ও ঐশ্বী আলো।
• তাগুতী ও জুলুমবাজদের অশুভ পরিণতি এবং তাদের ব্যাপারে খোদায়ী কঠিন প্রতিশোধের বিধান।
• মানুষের জন্যে বিভিন্ন প্রকার পরীক্ষা।
• ক্বিয়ামতের দিন অপরাধী ও কাফিরদের শাস্তি।
• আখেরাতে প্রশান্ত চিত্তের অধিকারীদের প্রশান্তি ও প্রফুল্লতার নিশ্চয়তা প্রদান।
১১। সূরা “আল ফজর” তিলাওয়াতের ফযিলত:
• হাযরাত রাসূলে আকরাম (সা.): “যে ব্যক্তি এ সূরা জিলহজ্ব মাসের প্রথম দশ দিন তিলাওয়াত করবে আল্লাহ্ তায়ালা তাকে ক্ষমা করে দিবেন এবং যে ব্যক্তি অন্যান্য দিনে এই সূরা পাঠ করবে ক্বিয়ামতের দিন সেই ব্যক্তির সামনে এ সূরা নূর হিসেবে উদয় হবে।” (তাফসীর মাজমাউল বায়ান, খন্ড ১০, পৃ: নং ৩৪১)।
• ইমাম জাফার সাদিক্ব (আ.): “সূরা “আল ফাজর” ফরজ অথবা নফল নামাজগুলোতে তিলাওয়াত করো, কেননা, এ সূরাকে বলা হয় ইমাম হুসাইনের সূরা। যে ব্যক্তি এ সূরা তিলাওয়াত করবে সে বেহেস্তে ইমাম হুসাইনের সাথে অবস্থান করবে।(সাওয়াবুল আ’মাল, পৃ: নং ১২৩)।
১২। সূরা “আল ফাজর”-এর মাধ্যমে তদবীর:
• যে ব্যক্তি সূরা আল ফাজর তিলাওয়াত করবে আল্লাহ তাকে এমন সন্তান দান করবেন যে, সেই সন্তান তার চোখের জ্যোতি হিসেবে ভুমিষ্ট হবে। যে ব্যক্তি সূরা আল ফাজর লিখে নিজের সঙ্গে রেখে স্বামী বা স্ত্রীর সাথে বিছানায় গমন করে আল্লাহ তাকে এমন সন্তান দান করবেন যে তাদের চোখের জ্যোতি হিসেবে পরিগণিত হবে। (তাফসীর আল বুরহান, খন্ড ৫, পৃ: নং ৬৪৯)।
• বর্ণিত আছে যে, সূরা ফাজর এগার বার তিলাওয়াত করে সহবাস করার ফলে যে সন্তান গর্ভে ধারন করবে তা হবে পুত্র সন্তান। (আল মিসবাহ কাফআমী, পৃ: নং ৪৬০)।
• ইমাম জাফার সাদিক্ব(আ.): “যে ব্যক্তি সূর্যদোয়ের সময় সূরা আল ফাজর তিলাওয়াত করবে সে আগামীকাল ভোর পর্যন্ত আল্লাহর নিরাপদ আশ্রয়ে অবস্থান করবে।” (আল মিসবাহ কাফআমী, পৃ: নং ৪৬০)।