সূরা “আল কাফিরুন” সম্পর্কে সামগ্রিক কিছু তথ্য
১। কোরআনের বর্তমান উসমানী মুসহাফ এর ক্রমিক নম্বর অনুসারে এ সূরাটি একশত নয়তম।
২। নাযিল হওয়ার ধারাবাহিকতা অনুসারে এ সূরাটি আঠার নম্বরে অবস্থিত।
৩। নাযিলের স্থানটি হচ্ছে পবিত্র মক্কা নগরী।
৪। আয়াতের সংখ্যা ৬।
৫। এ সূরাটির অভ্যন্তরে অবস্থিত শব্দ সংখ্যা ২৭।
৬। এ সূরাটির অভ্যন্তরে মোট বর্ণ ব্যবহৃত হয়েছে ৯৯ টি।
৭। এ সূরাটির অভ্যন্তরে “আল্ল-হ” শব্দটি ব্যবহৃত হয়েছে ১ বার।
৮। সূরাটির নামের অর্থ: “আল কাফিরুন”-এর অর্থ হচ্ছে কাফের ব্যক্তিরা। অর্থাৎ যারা আল্লাহর অস্তিত্বকে অস্বীকার করে।
৯। সুরাটির অন্য নামঃ “জাহদ” (দারমন ব কোরআন, পৃঃ নং ১৬৭)।
১০। সূরাটির বৈশিষ্ট্য:
ক) রাসূল (সা.) বলেছেন, সূরা আল কাফিরুন পুরো কোরআনের এক চতুর্থাংশ। (সাওয়াবুল আমাল, পৃঃ নং ১২৭)।
খ) স্পষ্টভাবে সরাসরী গাইরুল্লাহকে অস্বীকার করার কারণে একজন মানুষ শেরক ও নিফাক থেকে রক্ষা পায় এবং পবিত্র হয়।
১১। সামগ্রিকভাবে সূরা “আল কাফিরুন”-এর আলোচ্য বিষয় হচ্ছে নিম্নরূপ:
👉• মূর্তি পুজারকদের পরিচয় দান।
👉• আল্লাহর সামনে খোদা পুজারী ও মুমিন ব্যক্তিদের নমনীয়তা।
১২। সূরা “আল কাফিরুন” তিলাওয়াতের ফযিলত:
🌴• রাসূল(সা.): “যে ব্যক্তি সূরা আল কাফিরুন তিলাওয়াত করবে শয়তান তার কাছ থেকে দূরে চলে যাবে এবং ক্বিয়ামতের দিনের বৃহৎ কষ্ট থেকে মুক্তি পাবে।” (তাফসীরু মাজমাউল বায়ান, খন্ড ১০, পৃঃ নং ৫৫২)।
🌴• “জনৈক ব্যক্তি একদা মহানবী(সা.)-এর কাছে আরজ করলো, ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমাকে এমন কিছু শিক্ষা দিন যা আমি ঘুমানোর পূর্বে পড়তে পারি। আল্লাহর রাসূল বললেন, যখন তুমি ঘুমুতে ইচ্ছা করো সূরা আল কাফিরুন পাঠ করে ঘুমাও, যা তোমাকে শেরক থেকে নিরাপদে রাখবে। (তাফসীরু মাজমাউল বায়ান, খন্ড ১০, পৃঃ নং ৫৫০)।
🌴• হাযরাত ইমাম জা’ফার ইবনে মুহাম্মাদ আস্ সাদিক্ব (সালামুল্লাহি আলাইহি): “যে ব্যক্তি সূরা আল কাফিরুন ফরজ ও নফল নামাজগুলোতে তিলাওয়াত করবে আল্লাহ তায়ালা তাকে এবং তার পিতা-মাতা ও সন্তানদেরকে ক্ষমা করে দিবেন। তারা যদি দূর্ভাগ্যবান হয়ে থাকে তাদেরকে সেখান থেকে উদ্ধার করে সৌভাগ্যবানদের অন্তর্ভুক্ত করবেন। আর তিলাওয়াতকারী ব্যক্তিকে দুনিয়ার জীবনে সৌভাগ্যবান করবেন এবং তাকে শহীদ অবস্থায় মৃত্যু দিবেন আর শহীদ অবস্থায় উত্থিত করবেন।” (সাওয়াবুল আ’মাল, পৃঃ নং ১২৭)।
🌴• ইমাম আস সাদিক্ব (সালামুল্লাহি আলাইহি): “যে ব্যক্তি ঘুমানোর পূর্বে সূরা আল কাফিরুন ও সূরা ইখলাস তিলাওয়াত করবে আল্লাহ তাকে শেরক থেকে রক্ষা করবেন।” (আল কাফি, খন্ড ২, পৃঃ নং ৬২৬)।
🌴• ইমাম জাফার আস সাদিক্ব (সালামুল্লাহি আলাইহি): “ফজর নামাজের দুই রাকাতে যে সূরা-ই পড়তে চাও পড়, তবে আমি সূরা ইখলাস ও সূরা আল কাফিরুন পড়তে পছন্দ করি।” (তাহযিবুল আহকাম, খন্ড ২, পৃঃ নং ১৩৬)।
🌴• ইমাম জাফার আস সাদিক (সালামুল্লাহি আলাইহি): “সূরা আল কাফিরুন ফরজ ও নফল নামাজে তিলাওয়াত করো।” (মুসতাদরাকুল ওয়াসায়িল, খন্ড ৪, পৃঃ নং ১৯১)।
১৩। সূরা “আল কাফিরুন” -এর মাধ্যমে তদবীর:
🍎• রাসূল(সা.): “যে ব্যক্তি সূর্য উদয়ের সময় দশ বার সূরা আল কাফিরুন পাঠ করে দোয়া করবে তার দোয়া কবুল হবে।” (আল মিসবাহ, কাফহামী আমেলী, পৃঃ নং ৪৬১)।
🍎• ইমাম জাফার সাদিক্ব (সালামুল্লাহি আলাইহি): “যে ব্যক্তি সূরা আল কাফিরুন বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে একশত বার পাঠ করবে সে স্বপ্নে আল্লাহর রাসূল (সা.)-কে দেখতে পাবে।” (মুসতাদরাকুল ওয়াসায়িল, খন্ড ৪, পৃঃ নং ৩৭১)।