সূরা “আল কাওসার” সম্পর্কে সামগ্রিক কিছু তথ্য

1031 0
১। কোরআনের বর্তমান উসমানী মুসহাফ এর ক্রমিক নম্বর অনুসারে এ সূরাটি একশত আটতম।
২। নাযিল হওয়ার ধারাবাহিকতা অনুসারে এ সূরাটি পনের নম্বরে অবস্থিত।
৩। নাযিলের স্থানটি হচ্ছে পবিত্র মক্কা নগরী।
৪। আয়াতের সংখ্যা ৩।
৫। এ সূরাটির অভ্যন্তরে অবস্থিত শব্দ সংখ্যা ১০।
৬। এ সূরাটির অভ্যন্তরে মোট বর্ণ ব্যবহৃত হয়েছে ৪৩ টি।
৭। এ সূরাটির অভ্যন্তরে “আল্ল-হ” শব্দটি ব্যবহৃত হয়েছে ১ বার।
৮। সূরাটির নামের অর্থ: “আল কাওসার” শব্দটি “মুবালিগ্বা”-র সিগ্বাতে ব্যবহৃত হয়েছে, যা “অত্যন্ত বেশী বা প্রচুর” অর্থ বহন করে। এর মূল শব্দটি হচ্ছে “কাসরাতুন”, যার অর্থ প্রচুর।
৯। সুরাটির আরেকটি নাম হচ্ছেঃ “ইন্না আ’তাইনা”।

১০। সূরাটির বৈশিষ্ট্য:

ক) সবচেয়ে ছোট সূরাগুলোর অন্যতম।
খ) পাঁচটি বিষয়ের ভবিষ্যতবাণীঃ
১) রাসূলের বংশের লোকসংখ্যার অধিক্য।
২) রাসূলের অনুসারীদের আধিক্য।
৩) দ্বীন ইসলামের চীর বিদ্যমানতা।
৪) রাসূলের শত্রুদের সকল বিরোধীতার নিষ্ফলতা।
৫) রাসূলের শত্রুদের নির্বংশ হওয়া।

১১। সামগ্রিকভাবে এ সূরাটির আলোচ্য বিষয় হচ্ছে নিম্নরূপ:

👉• আল্লাহর পক্ষ থেকে আগত হাযরাত মুহাম্মাদ(সা.)-এর প্রতি অফুরন্ত মঙ্গল ও বরকত।
👉• গুরুত্বপূর্ণ কিছু ভবিষ্যতবাণী।
👉• অভাবীদের জন্যে পশু কুরবানী করা।
👉• ইসলামের দুশমনদের ধ্বংস ও নিঃশেষ হবার রায় ঘোষনা।

১২। সূরা “আল কাওসার” তিলাওয়াতের ফযিলত:

🌴• হাযরাত ইমাম জা’ফার ইবনে মুহাম্মাদ আস্ সাদিক্ব (সালামুল্লাহি আলাইহি): “যে ব্যক্তি সূরা আল কাওসার ফরজ ও নফল নামাজগুলোতে বেশী বেশী তিলাওয়াত করবে আল্লাহ তায়ালা ক্বিয়ামতের দিনে তাকে হাউযে কাওসার থেকে পানি পান করাবেন এবং তাকে তুবা বৃক্ষের ছায়াতলে ও রাসূল(সা.)- এর পাশে স্থান দান করবেন। (সাওয়াবুল আ’মাল, পৃঃ নং ১২৬)।
 
🌴• তাফসীরকারকরা বলেছেনঃ “এ সূরা হাযরাত ফাতিমা (আলাইহাস সালাম)- এর মর্যাদা সম্পর্কে নাযিল হয়েছে।” (বিহারুল আনওয়ার, খন্ড ৮, পৃঃ নং ১৬)।
 
🌴• একদিন মুসলমানরা রাসূল (সা.)-কে মুচকী হাসি অবস্থায় দেখে জিজ্ঞেস করলোঃ “ইয়া রাসূলাল্লাহ! আপনার হাসির কারণ কী জানতে পারি?” তিনি বলেনঃ “আমার উপর একটি সূরা নাযিল হয়েছে।” অতঃপর তিনি সূরা আল কাওসার তিলাওয়াত করে শুনালেন। তিনি মুসলমানদের জিজ্ঞেস করলেনঃ “তোমরা জানো কী, কাওসার-এর অর্থ কী?” তারা বলেনঃ “আল্লাহ ও তাঁর রাসূলই ভাল জানেন।” রাসূল (সা.) বলেনঃ “কাওসার বেহেস্তের একটি নদী, যার মাধ্যমে আল্লাহ আমাকে প্রচুর মঙ্গল ও বরকত দানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। এটা আমার হাউজ যার পাশে আমার উম্মত আমার সাথে সাক্ষাত করবে।” (মুনতাখাবুল কালাম ফি তাফসীরিল আহকাম, খন্ড ১, পৃঃ নং ৭৪)।

১৩। সূরা “আল কাওসার” -এর মাধ্যমে তদবীর:

🍎• হাযরাত রাসূলে আকরাম (সা.) থেকে বর্ণিত হয়েছে যে, “যদি কোন ব্যক্তি বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে সূরা আল কাওসার একশত বার তিলাওয়াত করে সে ঘুমের মধ্যে আল্লাহর রাসূল (সা.)-কে দেখতে পাবে।” (মুনতাখাবুল কালাম ফি তাফসীরিল আহকাম, খন্ড ১, পৃঃ নং ৭৪)।
 
🍎• ইমাম জাফার সাদিক্ব(সালামুল্লাহি আলাইহি): “যে ব্যক্তি বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে তাহাজ্জুদ নামাজ শেষে সূরা আল কাওসার একশত বার তিলাওয়াত করবে সে আল্লাহর অনুমতিতে স্বপ্নে আল্লাহর রাসূল (সা.)-কে দেখতে পাবে।” (রাওদ্বুল জিনান ওয়া রাওহুল জিনান, খন্ড ২০, পৃঃ নং ৪২১)।
 
🍎• “যদি কাউকে আপনার কাছ থেকে দূরে সরাতে চান তাহলে নয় বার তার দিকে সূরা “আল কাওসার” পড়ে ফু দিন। দেখবেন, সে নিজ থেকেই সরে গেছে।” (তা’তীরুল আনাম ফি তা’বিরিল মানাম, খন্ড ১, পৃঃ নং ৩৫৩)।
 
🍎• হাজত পূরণ ও ধনবান হবার নিয়ত করে বুধবারের দিন দুই রাকাত নামাজ আদায় করবে এবং প্রতি রাকাতে সূরা ফাতিহার পর চল্লিশ বার করে সূরা আল কাওসার তিলাওয়াত করবে। ইনশাআল্লাহ হাজত পূরণ ও অতি দ্রুত ধনী হয়ে যাবে। (দারমন ব কোরআন, পৃঃ নং ১৬৭)।
📖📚🌷

Related Post

সুরা “সূরা আত্ব্ ত্বালাক্ব” সম্পর্কে সামগ্রিক কিছু তথ্য

Posted by - September 24, 2019 0
(আমি)আল্লাহর নামে(শুরু করছি), যিনি রাহমান(পরম করুণাময় সকল সৃষ্টির জন্যে), যিনি রাহিম(অসীম দয়াবান কিছু বিশেষ ব্যক্তিদের জন্যে)। ✅১। কোরআনের বর্তমান উসমানী…

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Translate »