সূরা “আত তাগ্বা-বুন”

825

➡️ সূরা “আত তাগ্বা-বুন”–এর অনুবাদ🔻

✳️(বল! আমি) আল্লাহর নামে (শুরু করছি), যিনি রহমান (পরম করুণাময় সকল সৃষ্টির জন্যে), যিনি রাহিম (অসীম দয়াবান কিছু বিশেষ ব্যক্তির জন্যে)।
 
আসমানসমূহ ও ভুমন্ডলে যা কিছু আছে, সবই আল্লাহর পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা [=তাসবিহ] করে, সার্বভৌমত্ব তাঁরই এবং প্রশংসা তাঁরই। আর তিঁনি সর্ব বিষয়ে সর্বশক্তিমান।(১)
 
তিঁনিই তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন। অতঃপর তোমাদের মধ্যে কেউ কাফির এবং কেউ মু’মিন হয়েছে। তোমরা যা করে থাকো তা সমন্ধে আল্লাহ সম্যক ও গভীর দৃষ্টি রাখেন।(২)
 
তিঁনি যথাযথভাবে আসমানসমূহ ও ভুমন্ডল সৃষ্টি করেছেন এবং তোমাদেরকে আকৃতি দান করেছেন। তিঁনি তোমাদেরকে সুন্দর আকৃতিতে সুশোভিত করেছেন এবং তোমরা তাঁর দিকেই ফিরে আসবে।(৩)
 
আসমানসমূহ ও ভুমন্ডলে যা কিছু আছে সবই তিনি জানেন। তোমরা যা গোপন অথবা প্রকাশিত করো তার সবই তিঁনি অবহিত। আল্লাহ অন্তর্যামী।(৪)
 
তোমাদের নিকট কি পূর্ববর্তী কাফিরদের বৃত্তান্ত পৌঁছেনি? তারা (এ দুনিয়াতে) তাদের কর্মের মন্দফল আস্বাদন করেছিল এবং (আখেরাতে) তাদের জন্যে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি প্রস্তুত রয়েছে।(৫)
 
এই (আযাব ও শাস্তি) এ জন্যে হয়েছিল যে, তাদের নিকট যখন তাদের রাসূলগণ স্পষ্ট দলীল-প্রমাণসহ উপস্থিত হয়েছিল তখন তারা বলেছিলঃ “(আমাদের ন্যায়) একজন মানুষ আমাদেরকে হেদায়েত করবে?” আর এ কারণে তারা কাফের হয়ে গেলো এবং (সত্র থেকে) মুখ ফিরিয়ে নিলো। (হে মানুষ! জেনে রাখো) আল্লাহ (তাদের ঈমান ও আনুগত্যের) মুখোপেক্ষী নন। আল্লাহ অভাবমুক্ত ও প্রশংসার পাত্র।(৬)
💢কাফেররা মনে করেছে যে, তারা (মৃত্যুর পর আর) কখনও পুনরুত্থিত হবে না। (হে নবী! বলে দাও,) হ্যাঁ, (নিশ্চয়ই পুনরুত্থিত হবে), “আমার প্রতিপালকের শপথ! তোমরা অবশ্যই পুনরুত্থিত হবে। অতঃপর তোমাদের কর্মফল সম্বন্ধে তোমাদেরকে অবশ্যই অবহিত করা হবে। এ কাজ আল্লাহর জন্যে অত্যন্ত সহজ।”(৭)
 
💢যখন এরকমই অবস্থা! তখন তোমরা আল্লাহ, তাঁর রাসূল ও যে নূর [=যামানার ইমাম] আমি অবতীর্ণ করেছি তাতে ঈমান আনো। (মনে রেখো!) তোমাদের কৃতকর্ম সম্পর্কে আল্লাহ সবিশেষ অবহিত।(৮)
 
💢এটা সে-ই সময়, যখন তিঁনি তোমাদেরকে সম্মিলনের দিনে [=হাশরের দিনে] সমবেত করবেন, সেদিন হবে ক্ষয়ক্ষতি ও অনুতপ্ত হবার দিন। যে ব্যক্তি আল্লাহতে ঈমান আনবে এবং নেক কাজ করবে, তিঁনি তার পাপ মোচন করে দিবেন এবং তাকে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন, যার তলদেশে ঝর্ণাধারা প্রবাহমান থাকবে। সেখানে তারা চিরস্থায়ীভাবে বসবাস করবে । এটি একটি মহাসাফল্য ও মহাবিজয়।(৯)
 
💢পক্ষান্তরে যারা কাফের [=আল্লাহ ও রাসূলের অস্বীকারকারী] হবে এবং আমার আয়াতসমূহকে অস্বীকার করবে, তারা (জাহান্নামে) আগুনের সাথী হবে।♨️ সেখানে তারা চিরস্থায়ীভাবে বসবাস করবে। সেটা কতই না মন্দ পরিণতি হবে!(১০)
 
💢আল্লাহর অনুমতি ব্যতিরেকে কোন বিপদই আপতিত হয় না এবং যে ব্যক্তি আল্লাহর উপর ঈমান আনবে তার অন্তরকে তিঁনি হেদায়েতের দিকে পরিচালিত করবেন। আল্লাহ সর্ব বিষয়ে সম্যক অবগত।(১১)
 
💢আর তোমরা (হে মানবসকল!) আল্লাহর আনুগত্য করো এবং তাঁর রাসূলের আনুগত্য করো, যদি তোমরা (এ কাজ থেকে) মুখ ফিরিয়ে নাও তাহলে (আর কিছু করার নেই, তোমাদের কাছে আল্লাহর বাণী), সুস্পষ্টভাবে পৌছিয়ে দেয়া ছাড়া আমার রাসূলের উপর আর কোন দায়িত্ব নেই।(১২)
💢আর আল্লাহ! তিঁনি ব্যতীত কোন মা’বূদ নেই। সুতরাং আল্লাহর উপর ভরসা করা মু’মিনদের কর্তব্য।(১৩)
 
💢হে মু’মিনরা! (জেনে রাখো!) নিশ্চয় তোমাদের স্ত্রী ও সন্তানদের মধ্যে অনেকেই তোমাদের শত্রু। অতএব, তাদের সম্পর্কে তোমরা সতর্ক থেকো। তোমরা যদি তাদেরকে মার্জনা করে দাও এবং তাদের দোষ ক্রটি উপেক্ষা করো আর তাদেরকে ক্ষমা করে দাও তাহলে (জেনে রেখো যে,) আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।(১৪)
 
💢তোমাদের ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি ফিৎনা (পরীক্ষা) স্বরূপ। আর আল্লাহর নিকট রয়েছে মহা পুরস্কার।(১৫)
 
💢তোমরা যথাসাধ্য আল্লাহকে ভয় করে চলো। তোমরা (তাঁর কথা) শোন এবং (তাঁর) আনুগত্য করো আর দান করো, যা তোমাদের নিজেদের জন্যেই কল্যাণ। যারা নিজেদেরকে কৃপনতা ও লোভ থেকে মুক্ত রাখতে পারে তারাই সফলকাম।(১৬)
 
💢যদি তোমরা আল্লাহকে ক্বারদুল হাসানাহ [=উত্তম ঋণ] প্রদান করো তাহলে তিনি তা তোমাদের জন্য বহুগুণ বৃদ্ধি করে দিবেন এবং তোমাদেরকে ক্ষমা করে দিবেন। আল্লাহ কৃতজ্ঞতা প্রকাশকারী ও সহনশীল।(১৭)
 
💢তিনি দৃশ্য ও অদৃশ্যের পরিজ্ঞাতা, পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়।(১৮)
সমাপ্ত।
অনুবাদকঃ ড. নূরে আলম মোহাম্মদী

Related Post

সূরা আল-ইখলাস

Posted by - আগস্ট ১৫, ২০১৯
সূরা “আল ইখলাস”-এর অনুবাদঃ (আমি) আল্লাহর নামে (শুরু করছি), যিনি রাহমান (পরম করুণাময় সকল সৃষ্টির জন্যে), যিনি রাহিম (অসীম দয়াবান…

সূরা আল মাউন-এর অনুবাদ

Posted by - ফেব্রুয়ারি ২৫, ২০২০
 بِسْمِ الّٰلهِ الرَّحْمٰنِ الرَحِيْمِ   (বলো! আমি) আল্লাহর নামে (শুরু করছি), যিনি রহমান (পরম করুণাময় সকল সৃষ্টির জন্যে), যিনি রহিম (অসীম…

সূরা আল ফালাক্ব-এর বঙ্গানুবাদ

Posted by - আগস্ট ১১, ২০১৯
(আমি) আল্লাহর নামে (শুরু করছি), যিনি রাহমান (পরম করুণাময় সকল সৃষ্টির জন্যে), যিনি রাহিম (অসীম দয়াবান কিছু বিশেষ ব্যক্তিদের জন্যে)।…

সূরা “আল কাওসার”-এর অনুবাদ

Posted by - সেপ্টেম্বর ২, ২০১৯
(আমি) আল্লাহর নামে (শুরু করছি), যিনি রাহমান (পরম করুণাময় সকল সৃষ্টির জন্যে), যিনি রাহিম (অসীম দয়াবান কিছু বিশেষ ব্যক্তিদের জন্যে)।…

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Translate »