১। কোরআনের বর্তমান উসমানী মুসহাফ এর ক্রমিক নম্বর অনুসারে এ সূরাটি চৌষট্টিতম।
২। নাযিল হওয়ার ধারাবাহিকতা অনুসারে এ সূরাটি একশত দশ নম্বরে অবস্থিত।
৩। নাযিলের স্থানটি হচ্ছে পবিত্র মদিনা নগরী।
৪। আয়াতের সংখ্যা ১৮।
৫। এ সূরাটির অভ্যন্তরে অবস্থিত শব্দ সংখ্যা ২৪২।
৬। এ সূরাটির অভ্যন্তরে মোট বর্ণ ব্যবহৃত হয়েছে ১০৯১ টি।
৭। এ সূরাটির অভ্যন্তরে “আল্ল-হ” শব্দটি ব্যবহৃত হয়েছে মোট ২০ বার।
৮। সূরাটির নামের অর্থ: তাগ্বাবুন শব্দটির মূল ধাতু হচ্ছে গ্বাব্-ন। এর অর্থ হচ্ছে ধোঁকা খাওয়া ও ক্ষতিগ্রস্থ হওয়া।
৯। সূরাটির বৈশিষ্ট্য:
মানুষের জন্যে তাদের ধন-সম্পদ, সন্তান-সন্ততি ও স্ত্রী, পরিবার পরিজন আল্লাহর পক্ষ থেকে পরীক্ষা স্বরূপ এবং যদি এগুলো সঠিক ও আল্লাহর পথে না থাকে তাহলে ইসলামের কঠোর শত্রুতে পরিণত হতে পারে। এ কারণে, মানুষ যেন তাদের ধোঁকায় না পড়ে।
১০। সামগ্রিকভাবে সূরা “আত্ তাগ্বাবুন” -এর আলোচ্য বিষয়ঃ
একঃ সৃষ্টি জগতের সকল প্রাণী ও বস্তু আল্লাহর তসবিহ করে।
দুইঃ মানুষ, ভূ-মণ্ডল ও আসমানসমূহের সৃষ্টি।
তিনঃ বিভিন্ন জাতির কর্ম ও শিক্ষনীয় পরিণামের প্রতি ইঙ্গিত প্রদান।
চারঃ প্রতিদান দিবস ও আখেরাতের আলোচনা।
পাঁচঃ বিভিন্ন বিপদ ও বালা-মুসিবতের বর্ণনা।
ছয়ঃ মানুষের জন্যে কিছু গুরুত্বপূর্ণ শিষ্টাচারগত ও সামাজিক হুকুম ও নির্দেশ।
১১। সূরা “আত্ তাগ্বাবুন” তিলাওয়াতের ফযিলত:
•রাসূল(সা.): “যে ব্যক্তি সূরা আত্ তাগ্বাবুন পাঠ করবে তার কাছ থেকে আকস্মিক মৃত্যু সরিয়ে দেয়া হবে।” (মাজমাউল বায়ান ফি তাফসীরিল ক্বুরআন, খণ্ড ১০, পৃঃ নং ২৭)।
•ইমাম জাফার আস সাদিক্ব(আ.): “যে ব্যক্তি সূরা আত্ তাগ্বাবুন ফরজ নামাজগুলোতে তিলাওয়াত করবে এ সূরা তার জন্যে ক্বিয়ামতে শাফায়াতকারী হিসেবে পরিগণিত হবে এবং এ সূরা এমন ন্যায়বিদ সাক্ষ্যদাতা যে, আল্লাহর সমীপে পাঠকের স্বার্থে সাক্ষ্য দান করবে। অতঃপর সে ঐ পাঠককে বেহেস্তে প্রবেশ না করিয়ে তার কাছ থেকে পৃথক হবে না।”
(সাওয়াবুল আ’মল, পৃঃ নং ১১৮)।
•হযরত জাবির ইবনে আব্দুল্লাহ আনসারী(রা.), মুসাব্বাহাত সূরাগুলোর (যে সকল সূরা সাব্বিহ অথবা ইউসাব্বিহ শব্দ দিয়ে শুরু হয়েছে) ফজিলত ও মর্যাদা সম্পর্কে ইমাম মুহাম্মাদ ইবনে আলী আল বাক্বির(আ.)-এর কাছে থেকে বর্ণনা করছেন যে, ইমাম বলেছেনঃ “যে ব্যক্তি এই মুসাব্বাহাত বিশিষ্ট্য সূরাগুলো তিলাওয়াত করবে সে মৃত্যুর পূর্বেই হযরত ইমাম ক্বায়িম আল মাহদী(আ.)-কে দেখতে পাবে। আর যদি তার আগেই মারা যায় তাহলে রাসূল(সা.)-এর সাথেই তার স্থান হবে।”
(সাওয়াবুল আ’মল, পৃঃ নং ১১৯)।
১২। সূরা “আত্ তাগ্বাবুন” -এর মাধ্যমে তদবীর:
• ক) রাসূল(সা.): “যখন কেউ কোন শাসক ও রাজা-বাদশাহর সাথে সাক্ষাতে ভয় পায়, তখন সূরা “আত্ তাগ্বাবুন”-এর তিলাওয়াত তাকে সেই জালেম শাসকের অনিষ্ট থেকে নিরাপত্তা প্রদান করবে।”
(তাফসীরুল বুরহান, খণ্ড ৫, পৃঃ নং ৩৯১)।
• খ) “যদি কেউ কোন কিছুকে মাটির নিচে লুকিয়ে রাখার পর ভুলে যায় যে, কোথায় দাফন করেছে, তখন সে যে জায়গাটির ব্যাপারে সন্দেহ করবে সেই স্থানে যেন কানদুর (Olibanum)- জ্বালায়। অতঃপর সূরা “আত্ তাগ্বাবুন” –এর সাত নম্বর আয়াতটি নতুন এক টুকরা কাগজে লিখে পবিত্র পানি দিয়ে ধুঁয়ে নেয় এবং সেই পানি ঐ স্থানে ছিটিয়ে দেয়। এভাবে আল্লাহ তাকে সমাহিত বস্তুর প্রতি পথ নির্দেশনা দান করবেন।”
(তাফসীরুল বুরহান, খণ্ড ৫, পৃঃ নং ৩৯১)।
↯↻↯↻↯