[জনাব ইলিয়াস ছিলেন নিশাপুরের আমির এবং প্রধান সেনাপতি। চতুর্থ শতাব্দিতে নিশাপুর পারস্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ ও বৃহত্তম নগরী হিসেবে পরিগণিত ছিল। সেকালে এই শহরের প্রধান সেনাপতির পদটি ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও সম্মানজনক।]
একদিন জনাব ইলিয়াস হযরত আবু আলী দাক্কাক নামে এক স্বদেশী অলীর খেদমতে উপস্থিত হলেন। তিনি সম্মান প্রদর্শন পূর্বক হাটু গেড়ে সেই দরবেশের সমনে বসে পড়লেন। অতঃপর তিনি হযরত আলী দাক্কাকের কাছে কিছু উপদেশমূলক নসিহত পেশ করার জন্যে অনুরোধ জানালেন। জনাব ইলিয়াসের অনুরোধে আল্লাহর অলী বলেন :
“আমি তোমাকে উপদেশ দিবো না। তবে আমি তোমার কাছে একটি প্রশ্নের উত্তর আশা করবো। আশা করি তুমি তার সঠিক উত্তর দান করবে।”
সেনাপতি : “ঠিক আছে আপনি জিজ্ঞেস করুন হুজুর। আমি উত্তর দেয়ার চেষ্টা করবো।” হযরত দাক্কান ইলিয়াসের চোখে চোখ রেখে জিজ্ঞেস করলেন : “আমি জানতে চাই, তুমি ধন-দৌলতকে বেশী ভালবাস নাকি তোমার শত্রুকে?”
সেনাপতি ইলিয়াস এই প্রশ্ন শুনে বিস্ময়াভিভূত হয়ে গেলেন। কিছুক্ষন চুপ থেকে চিন্তা করে তিনি উত্তর দিলেন : “ধন-দৌলতকে আমি বেশী পছন্দ করি।”
হযরত আবু আলী কিছুক্ষন আত্মমগ্ন অবস্থায় কাটালেন। অতঃপর মাথা তুলে বললেন : “আচ্ছা! য
এরকমই হয় যা তুমি বললে, তাহলে কেন তোমার পছন্দনীয় জিনিষকে তুমি এখানে ছেড়ে যাচ্ছো। কেন তুমি সেগুলোকে নিয়ে যাচ্ছো না। আর যা তুমি পছন্দ কর না এবং যে তোমার শত্রু তাকেই সাথে নিয়ে যাচ্ছো?”
দরবেশের এই কথা শুনে সেনাপতির টনক নড়লো। তার চক্ষুযুগল অশ্রুতে ভরে গেল। কিছুক্ষন এভাবেই অতিবাহিত হল। যখন তার স্বম্বিত ফিরে এলো তখন তিনি দরবেশেকে বললেন :
“আমাকে ভাল উপদেশ দিলেন। আমাকে তন্দ্রা থেকে জাগ্রত করলেন। আল্লাহ আপনাকে উত্তম পুরস্কার দান করুন, আপনি আমাকে হেদায়েতের পথ দেখালেন।” (খাজা নিজামুল মুলক; সিয়াসাত নামা, পৃঃ নং ৬৪। ইমাম মুহাম্মাদ গাজ্জালী; নাসিহাতুল মুলুক, পৃঃ নং ৮৬-৯৭)।