এক কাফের ব্যক্তির একজন মুসলমান দাস ছিল। দাস তার নিজ ধর্মে ছিল অত্যন্ত দৃঢ় ও প্রত্যয়শীল। কাফের লোকটি তাকে ধর্মের কাজে কোনরূপ বাধা প্রদান করতো না।
একদিন মনিব তার গোলামকে বললো : “গোসল কারার সরঞ্জাম প্রস্তুত কর, গোসল করার জন্যে হাম্মামের দিকে রওয়ানা হতে হবে।” তারা যাত্রা শুরু করলে পথিমধ্যে একটি মসজিদের সাক্ষাত পেলো।
দাস বললো : “মনিব মহাশয়! আমাকে কী একটু অনুমতি দিবেন, আমি মসজিদের ভিতরে গিয়ে নামাজ আদায় করে আসি।”
মনিব বললো : “যাও! তবে যখনি নামাজ শেষ করবে তাড়াতাড়ী ফিরে এসো। আমি এখানেই দাঁড়িয়ে রইলাম। তোমার জন্যে অপেক্ষা করবো।”
মসজিদে জামায়াত সমাপ্ত হয়েছে। ইমাম সাহেব ও অন্যান্য মুসল্লিরা সকলে এক এক করে বাইরে চলে এসেছে। মনিব বেরিয়ে আসা মুসল্লিদে র মধ্যে তার দাসকে খুজে পাচ্ছে না। এরকম অনেকক্ষন সে ধৈর্যধারণ করলো। অবশেষে তার ধৈর্য্যচ্যুতি ঘটলো। তিনি উচ্চ স্বরে চিৎকার করে ডাকলেন : “এ-ই গোলাম, বাহিরে এসো।”
মসজিদের ভিতর থেকে জবাব আসলো : “আমাকে বাইরে আসতে দিচ্ছে না।”
শেষ পর্যন্ত মনিব দেখতে চাইলো কে তার দাসকে বাইরে আসতে দিচ্ছে না। তাই সে মসজিদের দরজার নিকটবর্তি হলো। কাফের মনিব উঁকি মেরে দেখলো মসজিদের ভিতর এক জোড়া জুতা আর একজন মানুষের ছায়া ছাড়া আর কিছুই তার নজরে পড়লো না। সেখান থেকেই সে চিৎকার করলো : “আচ্ছা! কে তোমাকে বাইরে আসতে বাধা দিচ্ছে ?”
মসজিদের ভিতর থেকে দাস উত্তর দিলো : যে আপনাকে ভিতরে আসতে বাধা দিচ্ছে।”(ফিহ্ মা ফিহ্ ( মাওলানা জালালুদ্দিন রুমীর কথোপকথন সংকলন ), সংশোধনে : বাদিউজ্জামান ফুরুজানফার, পৃঃ নং ১১৩)।
