মাহে রবিউল আওয়াল প্রত্যেক মুমিনের কাছে অত্যন্ত প্রিয় একটি মাস। কারণ, এ মাসে ধরাধামে আগমন করেছেন আমাদের প্রাণের চেয়ে প্রিয় হাবীব বিশ্ব মানবতার কান্ডারী, বিশ্ব মানবতার মুক্তির দিশারী, সাইয়্যিদুল মুরসালিন, ইমামুল আন্বিয়া, রাহমাতুল্লিল আলামিন, শাফিউল মুজনাবিন, খাতামুন নাবিয়্যিন, শাফিয়ে আ’যাম, রাসূলে আকরাম, রাহমাতে আলাম, নূরে মুজাসসাম, হাবীবে কিবরিয়া, আশরাফুল আম্বিয়া, সাইয়্যিদুল আম্বিয়া, শাফিয়ে মাহশার, আকায়ে নামদার, মদিনা কা তাজদার, হযরত মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ(সা.)। আর এ কারণে স্বভাবত:ই মুমিনরা এ মাসে খুশি প্রকাশ করে থাকে, যার আরবি পরিভাষা হচ্ছে ঈদে মিলাদুন্নবী। কিন্তু এক শ্রেণীর মানুষ এ বিষয়টিকে অবান্তর, অযৌক্তিক ও বিভ্রান্তিকর আপত্তির মাধ্যমে বিদ’আতে সাইয়্যিয়া প্রমাণের অপচেষ্টায় ব্যস্ত, এমনকি একে হক বাতিলের মানদন্ড বানিয়ে নিয়েছে। যা সত্যিই দুঃখজনক।
ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) মুসলিম বিশ্বের ধর্মীয় ও সংস্কৃতিক ঐতিহ্য। রাহমাতুল্লিল আলামিন রাসূলুল্লাহ (সা.)- এর শুভাগমনকে উপলক্ষ করে ঈদ উদযাপন করা প্রতিটি মুসলমানের ঈমানী দ্বায়িত্ব ও কর্তব্য। সারা বিশ্বে- বিশেষত মিশর, সিরিয়া, ইরাক, ইরান, তুরস্ক, লেবানন, দুবাই, পাকিস্তান, ভারতসহ বিভিন্ন রাষ্ট্রে এ ঈদ সরকারী – বেসরকারীভাবে উদযাপিত হয়। আমাদের দেশেও পবিত্র ১২ই রবিউল আউয়াল পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উদযাপিত হয়। বিশ্ব উলামায়ে কেরামের প্রায় সকলেই এ অনুষ্ঠানকে জায়েয বরং বরকতময় বলে বিশ্বাস করেন।
ইবনে হাজার আসকালানী, মুল্লা আলী কারী, ইবনুল জাওযী, জালালুদ্দীন সুয়ূতী, ইমাম কাস্তালানী, ইমাম বায়হাকী, ইমাম সাখাবী, শায়খ নাসিরুদ্দিন তায়ালুসী, শায়খ আব্দুল হক মুহাদ্দিসে দেহলবী, ওলীউল্লাহ মুহাদ্দিসে দেহলবী, আব্দুল আজিজ মুহাদ্দিসে দেহলবী (রহ.) প্রচলিত মিলাদুন্নবী (সা.) (জায়েয তরিকায়- কুরআন তেলাওয়াত, নাত পরিবেশন, নবীজির জন্মকালীন আলোচনা, দাড়িয়ে সালাম প্রদান, দোয়া-মুনাজাত ও তাবারুক বিতরণ ইত্যাদির মাধ্যমে) পালন করতেন। এমনকি বর্তমান সময়ে মিলাদ-ক্বিয়ামের বিরুদ্ধে জিহাদ ঘোষণাকারীদের আকাবীর দেওবন্দী উলামায়ে কেরামও তা জায়েয ও বরকতের বলে বিশ্বাস করতেন। বিশেষত: দেওবন্দ মাদ্রাসার প্রতিষ্টাতা কাসেম নানুতুবী, রশিদ আহমদ গাঙ্গুহী, আশরাফ আলী থানবী (রহ.) এবং তাদের সকলের পীর হাজী এমদাদুল্লাহ মুহাজিরে মক্কী (রহ.)ও নিজে মিলাদ-ক্বিয়াম করতেন। আবার কেউ না করলেও সে ব্যাপারে বাড়াবাড়ি করতে অপছন্দ করতেন। কিন্তু আজকাল আহলে হাদীস নামধারী লা-মাযহাবীরা সবচেয়ে বেশি ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.)- এর বিরুদ্ধে কথা বলছে। ঝঞ্জা বিক্ষুব্ধ বর্তমান পৃথিবীতে মুসলমানরা যখন তাদের মৌলিক অধিকার হারা, সারা পৃথিবী থেকে মুসলমান নিধনে যখন পশ্চিমা বিশ্ব একাত্মা, মুসলমানদের রক্তে যখন প্রতিনিয়ত এ বিশ্বের জমীন রঞ্জিত হচ্ছে -ঠিক সে মুহুর্তে একদল মানুষ না বুঝে, আকাবের আলেমদের মতামতের তুয়াক্কা না করে মুসলমানদেরকেই অমুসলিম – মুশরিক – বিদ’আতী বানাতে ব্যস্ত।
আল্লাহ আমাদের সবাইকে ওহাবী, মওদুদী, খারেজী, লা-মাযহাবীসহ সকল বাতিল ফেরকা থেকে হেফাজত করেন। আমিন!!!📣🌹🌺💐