✔️১. ইসলামে প্রথম বিদআতী নামাজ।
(সহীহ্ আল বুখারী, খণ্ড ২, আধুনিক
প্রকাশনী, প্রকাশকাল: আগষ্ট/২০০৮, কিতাবুস
সাওম অধ্যায়, অনুচ্ছেদ ৭১, শিরোনামঃ তারাবীহ নামাজের ফযীলত, পৃঃ নং ২৭৭-২৭৯)।
✔️২. প্রচলিত তারাবী নামাজ বনাম সহি আল বুখারী-তে বর্ণিত হাদিসঃ-
🔸ক) প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী রমজানের চাঁদ দেখে তারাবীর নামাজ শুরু করা হয় এবং শাওয়ালের চাঁদ দেখে তারাবীর নামাজের সমাপ্তি টানা হয়।
কিন্তু উল্লেখিত হাদীসগুলোতে শুরু এবং সমাপ্তির কোন নির্দিষ্ট দিক- নির্দেশনা নেই।
🔸খ) এশার নামাজের পর এবং বেতের নামাজের পূর্বে তারাবীর নামাজ পড়া হয় কিন্তু উল্লেখিত হাদীসের বর্ণনায় তারাবীর নামাজ ফজরের ওয়াক্তের সামান্য পূর্বে আদায় হয়।
[১৮৬৯ নং হাদীসে দেখা যায়, রাসূল (সা.) তারাবীর
নামাজ শুরু করেছেন মধ্যরাতের পর!]
🔸গ) ১৮৬৮ নং হাদীস অনুযায়ী জামাতবদ্ধ হয়ে তারাবীর নামাজ পড়ার সুন্নত রাসূল (সা.)-এর ওফাতের প্রায় সাড়ে ৯ বছর পর প্রচলিত হয়। অথচ সুন্নী সমাজে তা “সুন্নাতে রাসূল” হিসাবে প্রতিষ্ঠিত করা হয়েছে! যেমন এ নামাজের নিয়তে তা করা হয়।
🔸ঘ) জামাতের নামাজের জন্য একামতের ব্যবহার করা হয়।
কিন্তু উল্লেখিত হাদীসগুলোতে একামতের কোন দিক-নির্দেশনা নেই।
🔸ঙ) জামাতের নামাজের জন্য ইমাম প্রয়োজন হয় কিন্তু উল্লেখিত ১৮৬৮ নং হাদীস অনুযায়ী এ নামাজের জন্যে একজন ক্বারী নিয়োগের উল্লেখ রয়েছে।
🔸চ) ২০ অথবা ৮ রাকাত তারাবীর নামাজ সুন্নতে রাসূল হিসেবে প্রচলন আছে কিন্তু উল্লেখিত ১৮৭০ নং হাদীস অনুযায়ী রাসূল (সা.) ১১ রাকাতের বেশী তারাবীর নামাজ পড়েন নাই। এটাও বর্ণিত আছে যে, এভাবে রাসূল (সা.) সারা বছর প্রতি রাতে এই ১১ রাকাত নামাজ আদায় করতেন। *যদিও একই হাদিস, তাহাজ্জুদ নামাজ অধ্যায়েও বর্ণিত হয়েছে।* এখান থেকে বুঝা যায় এটা তারাবী নামাজ নয়, তাহাজ্জুদ নামাজ।
🔸ছ) ১৮৬৭ নং হাদীস অনুযায়ী হাদীস বর্ণনাকারী এবং তারাবীর হুকুমদাতা এ নামাজের ব্যাপারে ছিলেন উদাসীন। তাঁরা জামাতের তদরকী করার উদ্দেশ্যে দূরে দাঁড়িয়ে দেখতেন আর বলতেনঃ “এটি একটি উত্তম বিদআত।” তারা যে কখনো এ নামাজ পড়েছেন এমন কোন বর্ণনা পাওয়া যায় না।
ইসলামের এমন কোন বিধান কি আছে যা নেতাদের (বিশেষ করে দ্বিতীয় খলিফার) জন্য নফল অথচ আম-জনতার জন্য বাধ্যতামূলক?
🔸জ) এ নামাজে সমগ্র কোরআন খতম করা হয়। তবে কথা হলো প্রচলিত খতম তারবীর নামাজকেও যদি সুন্নাতে রাসূল হিসাবে চালিয়ে দেয়া হয় তাহলে প্রশ্ন হচ্ছে রাসূল (সা.)-এর ইন্তেকালের সময় থেকে পূর্বের রমজান মাসের সময় পর্যন্ত যে সূরা ও আয়াতগুলো নাযিল হয়েছিল সেই সূরা ও আয়াতগুলো তো আল্লাহর নবী (সা.) তাঁর ইন্তেকালের পূর্বের রমজান মাসের তারাবীর নামাজে পড়তে পারেন নাই। তাহলে তারাবী নামাজে পুরো কোরআন খতম করা সুন্নত কিভাবে হলো?
🔸ঝ) নামাজের রোকন অনুযায়ী প্রতি রাকাতে দুইবার সেজদা করা আবশ্যক। এর কম বেশি হলে নামাজ ভেঙ্গে যাবে। কিন্তু খতমে তারাবীতে সেজদার আয়াত তিলাওয়াতকালে সরাসরি অতিরিক্ত মোট ১৪টি সেজদা করা হয়। এর ফলে নামাজ নষ্ট হয়ে যায়।
🔸ঞ) এ নামাজের নিয়ত: “নাওয়াতুয়ান উসাল্লিয়া লিল্লাহী তাআ’লা রাকাতাই সালাতিত তারাবী সুন্নাতী রাসূলিল্লাহী তা’আলা…”। যেখানে এ নামাজ আল্লাহর রাসূল (সা.)- পড়েন-ই নাই সেখানে নিয়তের মধ্যে তার নামে মিথ্যাচার করে নামাজ আদায় করলে সেই নামাজের মাধ্যমে কী আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন সম্ভব?
[সহীহ্ আল বুখারী-তে বর্ণিত ১৮৬৮নং হাদীস অনুযায়ী তারাবীর নামাজে “জামাআত”-এর প্রবর্তক দ্বিতীয় খলিফা হওয়া সত্তেও আমরা জামাআতে দাঁড়িয়ে নিয়তের সময় রাসূল (সা.)- এর নামেই নিয়ত করছি]।
🔸ট) সহীহ্ আল বুখারী-র ১৮৬৯ নং হাদীস অনুযায়ী যেখানে স্বয়ং রাসূল (সা.) তারাবী নিয়মিত না করার পরামর্শ দিয়েছিলেন সেখানে আমাদের উপর ‘জামাআত’এবং খতম তারাবীকে বাধ্যতামূলক করে নিয়েছি কেন?
‼️সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয় হলো যে, সহী আল বুখারী-তে উল্লেখিত হাদিস ৪ টিতে আরাবী ভাষায় তারাবী শব্দের কোন উল্লেখ নেই। বাংলা অনুবাদে ব্রাকেট বন্ধনীতে “তারাবী” শব্দটি বাংলাতে লেখা হয়েছে। এ বিষয়টি আপনার নিকট আরো বেশী স্পষ্ট হয়ে যাবে যখন আপনি একই হাদীস গ্রন্থের ১ম খন্ডের
“সালাতুল তাহাজ্জুদ” অধ্যায়ে ৬৮৫, ৬৮৭ এবং ১০৫৮ নং হাদিস তিনটির প্রতি দৃষ্টিপাত করবেন, তখন দেখবেন ব্রাকেট বন্ধনীতে “তারাবী” শব্দটি “তাহাজ্জুদ”-এ রূপান্তরিত হয়ে গেছে‼️