⁉রাষ্ট্রবিজ্ঞান (Political science) সমন্ধে কতটুকু ধারনা আমাদের রয়েছে? যে বিজ্ঞান রাষ্ট্র, রাষ্ট্র পরিচালনা, সরকার, সরকার পরিচালনা, রাজনৈতিক ব্যবস্থা, জনপ্রশাসন, নেতা-নেতৃত্ব, জনগণ ও তাদের অবস্থান, শাষন ব্যবস্থা প্রভৃতি নিয়ে আলোচনা করে তাকেই বলে রাষ্ট্রবিজ্ঞান (Political science)। রাষ্ট্রবিজ্ঞানের আলোচনার মূল বিষয়বস্তু হল রাষ্ট্র। রাষ্ট্র সম্পর্কে আলোচনা বলতে বুঝায়—রাষ্ট্রের উৎপত্তি, গতি, প্রকৃতি বিষয়ে আলোচনা। এ সংজ্ঞা অনুযায়ী বলা যায়, যে শাস্ত্রের মূল বিষয়বস্তু হল রাষ্ট্র—তারই নাম রাষ্ট্রবিজ্ঞান। অধ্যাপক গার্নারের (Garner) ভাষায়, “Political Science begins and ends with the State”। বলা হয়ে থাকে, রাষ্ট্রবিজ্ঞানের জনক বিশ্ব বিখ্যাত বিজ্ঞানী ও দার্শনিক অ্যারিস্টোটল (খ্রিস্টপূর্ব ৩৮৪-খ্রিস্টপূর্ব ৩২২)। অ্যারিস্টোটল ও প্লেটো, রাষ্ট্রবিজ্ঞান সম্পর্কে অনেক কথাই বলেছেন, যা এখনো রাষ্ট্রবিজ্ঞানে সর্বোচ্চ আলোচিত বিষয়বস্তু। মূলতঃ সব দেশের রাষ্ট্র পরিচালনা হয় একটি নির্দিষ্ট রাষ্ট্র ব্যবস্থার অধীনে, যা রাষ্ট্রবিজ্ঞানের আলোচনা থেকেই নির্গত হয়।🚫
🔰এখন বলুন তো, আপনাকে যদি বলা হয় আপনি রাষ্ট্রবিজ্ঞানের মধ্যে ইসলামকে প্রবেশ করান, আপনি কী করবেন? আপনি কী আলোচনা করবেন? আপনি কুরআন ও হাদিসের আলোকে অনেক কথাই বলতে পারবেন সত্যি, কিন্তু নেতা-নেতৃত্ব নিয়ে আপনার কাছে ইসলামের কী দিক নির্দেশনা আছে? ইসলাম যদি ঐশ্বী ধর্ম হয়ে থাকে তাহলে আপনার দেখানো রাষ্ট্রের ব্যবস্থাপনায় আপনি কী পদ্ধতি বাস্তবায়ন করবেন? আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন ইসলামী ইতিহাসের শিক্ষক। আবার মাদ্রাসার উচ্চতর ফিকাহ শাস্ত্রেরও একজন শিক্ষক। সেই হিসেবে বলছি, আপনি যদি ইসলামী রাষ্ট্রবিজ্ঞানে গ্বাদীরে খুমের ঘটনা ও বিধান-ব্যবস্থার আলোচনা না করেন তাহলে বর্তমান প্রেক্ষাপটে কখনোই ইসলামী রাষ্ট্রবিজ্ঞান উপহার দিতে পারবেন না। আপনি যদি খুলাফা রাশিদিনের খেলাফতের উদাহরণ টানেন তাহলে নেতা নির্বাচন ও নেতার গুণাবলী নিয়ে আলোচনার সুত্রপাত করলেও ইতি টানতে পারবেন না। অর্থাৎ কোন একটি মডেল রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাপনার সুত্র উপস্থাপন করতে পারবেন না। তাই, গ্বাদীরে খুমকে বাদ দিয়ে ইসলামী রাষ্ট্রবিজ্ঞান রচনা এবং সেই রাষ্ট্রের রূপরেখা অংকন করা অসম্ভব।❌
🔊 গত ১৮ই যিলহজ্ব ছিল পবিত্র “গ্বাদীরে খুম” দিবস। এ দিবসের স্মরণে বাংলাদেশে যত অনুষ্ঠান ও আলোচনা হয়েছে তা সবই প্রশংসনীয়। এ জন্যে তাদের সবাইকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই।🌹
✔কিন্তু একটি সর্বোচ্চ গুরুত্বপূর্ণ বিষয় কোথায়ও গুরুত্বের সাথে আলোচিত হয়নি। আর তা হলোঃ
✅“দশম হিজরীর ১৮ই যিলহজ্বের এ দিনে আল্লাহর নবী একটি ইসলামী রাষ্ট্রের বাস্তব রূপরেখা বাতলে দিয়েছেন এবং ঐশ্বী নেতৃত্ব সংস্থাপনের মাধ্যমে তিনি ইসলামী রাষ্ট্র ও ইসলামী রাষ্ট্রবিজ্ঞানের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করে গেছেন। এদিনে আল্লাহর নবী ও রাসূল তার ইমামত তথা উম্মত ও রাষ্ট্রের নেতৃত্ব হস্তান্তর (Transfer) করেন আমিরুল মুমিনিন ইমাম আলীর হাতে। আর এভাবে তিনি দ্বীন ইসলামকে চীরজীবি ও চীরস্থায়ী করে যান।”
আল্লাহও খুশী হয়ে আয়াত নযিল করেনঃ
“আল ইয়াওমা আকমালতু লাকুম দ্বীনাকুম ওয়া আতমামতু আলাইকুম নিয়’মাতি ওয়া রাদ্বিতু লাকুমুল ইসলামা দ্বীনা।”
“আজকে তোমাদের জন্যে তোমাদের দ্বীনকে পরিপূর্ণ করলাম এবং তোমাদের উপর আমার নেয়ামতকে সম্পূর্ণ করলাম আর আমি দ্বীন ইসলামের ব্যাপারে তোমাদের উপর সন্তুষ্ট হলাম।”(সূরা মায়েদা, আয়াত নং ৩)।
গ্বাদীরে খুম কেন্দ্রীক রাষ্ট্র ব্যবস্থার জয় হোক।💐💐