✍️[এক আরব বেদুঈন মদীনা শহরে এসে রাসূলে আকরাম (সা.)-এর খেদমতে হাজির হয়ে আবেদন করলো, “হে আল্লাহর রাসূল (সাঃ)! আমাকে কিছু উপদেশ দান করুন।”
মহানবী (সা.) তাকে বললেন, “ক্রোধান্বিত হয়ো না।”
সেদিন তিঁনি এর বেশি সেই আরব বেদুঈনকে আর কিছুই বললেন না। অতঃপর লোকটি তার গোত্রের মাঝে ফিরে গেল। বাড়ি ফিরেই সে জানতে পারলো যে, তার অনুপস্থিতিতে এক মারাত্মক ঘটনা ঘটে গেছে। তারই গোত্রের যুবকরা অপর এক গোত্রের কিছু মালামাল জোরপূর্বক লুটপাট করে নিয়ে এসেছে। এর জবাবে সে গোত্রের লোকেরাও এদের অনেক মালামাল লুটপাট করে নিয়ে গেছে। এভাবে লুটপাটের এ ধারা উভয় গোত্রের মাঝে এমন এক পর্যায়ে গিয়ে উপনীত হয়েছে যে, এখন দুই গোত্রের লোকেরাই এক মারাত্মক যুদ্ধ-বিগ্রহ ও রক্তপাতের পূর্ণ প্রস্তুতি গ্রহণ করছে। এ খবর শোনা মাত্রই সে লোকটি ক্রোধে অগ্নিশর্মা হয়ে গেল। তৎক্ষণাত সে অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হলো এবং রণাঙ্গনের দিকে ছুটলো নিজের গোত্রের লোকদের সঙ্গ দেবার জন্য। ঠিক এমন সময় তার মনে পড়লো যে, সে মদীনায় গিয়েছিল এবং রাসূলে আকরাম (সা.)-এর কাছে উপদেশ প্রার্থনা করেছিল, তখন মহানবী (সাঃ) বলেছিলেন, “নিজের ক্রোধকে নিয়ন্ত্রণে রাখো।”
অতঃপর সে মনে মনে ভাবতে লাগলো, “কেন আমি অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হলাম? কোন কারণে আমি এভাবে যুদ্ধ ও রক্তপাতে তৈরি হয়ে গেলাম? কেনইবা আমি এরূপ ক্রোধান্বিত হয়ে গেলাম’? এসব প্রশ্ন তার মনে জেগে ওঠার পর সে ভাবলো, এখনই উপযুক্ত সময় রসুলুলাহর (সা.) ছোট্ট উপদেশটি পালন করার। এরপর সে এগিয়ে গেল এবং বিরোধী গোত্রের সরদারকে ডেকে বললো, এ সংঘাত কি জন্যে? যদি এ যুদ্ধের উদ্দেশ্য হয় সে সমস্ত মালামাল ফিরে পাওয়া যা আমাদের গোত্রের যুবকরা বোকামি করে তোমাদের থেকে জোরপূর্বক ছিনিয়ে নিয়ে এসেছে, তাহলে আসুন! আমি আমার নিজস্ব সম্পদ থেকে আপনাদের ক্ষতিপূরণ দিয়ে দেই। এটা একটা ভালো কথা নয় যে, এর কারণে আমরা একে অপরের রক্ত ঝরাবো। প্রতিপক্ষ গোত্রের লোকেরা যখন এ ব্যক্তির যুক্তিপূর্ণ ও উদারতাপূর্ণ কথাগুলো শুনলো তখন তাদের মধ্যেও বীরত্ববোধ জেগে উঠলো। বললো, আমরাও আপনাদের চেয়ে কোন অংশে কম নই। যদি এমনটিই হয় তাহলে আমরা আমাদের দাবি প্রত্যাহার করলাম। তখন উভয় গোত্রের লোকেরা নিজ নিজ বাড়িতে ফিরে গেল।]💐
📚ওয়াসাইলুশ শীয়া, আমীর বাহাদর মূদ্রণ, দ্বিতীয় খণ্ড, পৃ: ৫২৯।
↯↻↯↻↯