পীর সাহেব তাঁর মুরীদদের জিজ্ঞেস করেন : “তোমরা কি এমন কোন কাজ আঞ্জাম দিয়েছো যা থেকে অন্যেরাও উপকৃত হয়েছে? ” হুজুরের কথা শুনে মুরীদদের মধ্যে একজন বলে উঠলো : “আমি ছিলাম একজন আমির-বাদশাহ্। একবার একটি ভিক্ষুক আমার বাড়িতে সাহায্যের জন্য আসে। আমি আমার বাদশাহী পোশাক ও আংটি পড়িয়ে তাকে আমার সিংহাসনে বসিয়ে দিলাম। আর আমি সবকিছু ছেড়ে দরবেশী পোশাক পড়ে আল্লাহর সাধকের পথ ধরলাম।”
অন্য একজন মুরীদ বললো : “আমি এক সময় একটি জায়গা দিয়ে অতিক্রম করছিলাম। দেখলাম সাধারণ মানুষেরা একজন লোককে আটক করেছে। লোকেরা তার হাত কাটার সিদ্ধান্ত চুড়ান্ত করে ফেলেছে। সেখানে আমি নিজের হাত উৎসর্গ করে লোকটিকে মুক্ত করলাম। আর দেখুন এই যে আমার এক হাত নেই।”
এতক্ষন পীর সাহেব নিশ্চুপ ছিলেন। তিনি মুরীদদের বক্তব্য মনোযোগ সহকারে শুনছিলেন। তাদের কথা শুনার পর তিনি মুখ খুললেন। তিনি বল্লেন : “তোমরা যা করেছো তা নির্দিষ্ট দু’জন ব্যক্তির জন্যে করেছো। মু’মিন তো সূর্য, তার কাজ সূর্যের তাপের ন্যায় -যা সকলের জন্যে উপকারে আসে এবং কেউ তা থেকে বঞ্চিত হয় না। তোমাদের মধ্য থেকে কি এমন উপকারী কাজ আল্লাহর বান্দাদের কাছে পৌছেছে?” মুরীদরা হুজুরের এমন কথা শোনে নির্বাক হয়ে মাথা নিচু করে রইলো।
(শেইখ আবুল হাসান খারাক্বানী; নুরুল উলুম, প্রচেষ্টায় : আব্দুর রাফিয়’ হাক্বিক্বাত, পৃঃ নং ৮১)।
