ইসলামের ৫টি মৌলিক বিশ্বাসের সংক্ষিপ্ত পরিচিতিঃ
তাওহীদ
বিশ্ব বিধাতা পরিপূর্ণ ও পরম সত্তা। তাঁর জাত বা সারসত্তা সকল প্রকার গুণাবলীতে ভরপূর। যা কিছু আমরা পরিপূর্ণতা বলে আখ্যায়িত করে থাকি তার সবকিছুই তাঁর সারসত্তায় বিরাজমান। আর যা কিছু আমাদের ধারণারও অতীত তাও তাঁর জন্যে ধারণা করা যায়। তিনি পরম পরিপূর্ণ। তিনি সার্বজনীন প্রভু, তিনি চিরন্তন, চিরঞ্জীব, শাশ্বত ও অমর। তিনি চূড়ান্ত সার্বভৌম ও সর্বশক্তিমান। তিনি সর্বজ্ঞ, সর্বশ্রোতা ও সর্বদ্রষ্টা। তিনি কারো মুখাপেক্ষী নন। তিনি কোন স্থান, কাল বা পাত্রে সীমাবদ্ধ নন। স্থান, কাল, পাত্র তাঁর জন্যে কল্পনা করারও অশোভনীয়। তিনি কোন বস্তুগত সত্তা নন। তিনি কোন মিশ্র বা যৌগিক সত্তা নন। তিনি একজন অপরিহার্য সত্তা।
আদালত
আল্লাহ্ ন্যায় বিচারক, সুবিচারক ও সুবিচক্ষণ। তিনি হাকিম, সর্বশ্রেষ্ঠ দার্শনিক ও প্রজ্ঞাবান। তাঁর প্রতিটি কার্যে সুনির্দিষ্ট কারণ নিহিত থাকে। তিনি অযথা কোন কাজ সম্পাদন করেন না। ন্যায়বিচারের আরাবী প্রতিশব্দ হচ্ছে ‘আদ্ল’। আদ্ল -এর বিপরীত শব্দ হচ্ছে যুলুম বা অত্যাচার। আদ্ল এর বিভিন্ন অর্থ হতে পারে। তন্মধ্যে চারটি অর্থ উল্লেখযোগ্য।
একঃ ভারসাম্য রক্ষা।
দুইঃ সাম্য বা সমান বিচার।
তিনঃ সকলকে প্রাপ্য অধিকার দান।
চারঃ পাত্র হিসেবে করুণা বর্ষণ।
উপরোক্ত চারটি অর্থের চতুর্থ প্রকার আদালত বা ন্যায়বিচারের অর্থ অধিকাংশ মুসলিম দার্শনিক ও প্রজ্ঞাবিদগণ গ্রহণ করেছেন।
রিসালত
রিসালত হলো একটি ঐশী দায়িত্ব এবং আল্লাহর মিশন। আল্লাহ একাজে সর্বোচ্চ যোগ্য ও পরিপূর্ণ মানবসত্তাদের নিয়োগ দিয়েছেন। তাদেরকে মানুষদের নিকট প্রেরণ করা হয়েছে, ইহকাল ও পরকালীন লাভ ও কল্যাণ সম্পর্কে বর্ণনা করার জন্যে, যাতে চারিত্রিক কলুষতা, শয়তানী কর্মকান্ড ও ক্ষতিকর আচরণ থেকে মানুষকে পরিশুদ্ধ করতে পারেন।
ইমামত
ইমামত হলো দ্বীনের মৌলিক বিষয়সমূহের একটি যার উপর বিশ্বাস ব্যতীত ঈমান পরিপূর্ণ হয় না। নবুওয়াত ও রিসালতের মত ইমামতও হলো মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে দয়া ও করুণা। সুতরাং প্রত্যেক যুগেই পথ প্রদর্শক ইমাম থাকা আবশ্যক যিনি মানুষের হেদায়াতকারী এবং দুনিয়া ও আখেরাতের কল্যাণের সংবাদদাতা হিসেবে মহানবীর(সা.) প্রতিনিধিত্ব করবেন। মহানবী(সা.) সর্বসাধারণের উপর যেরূপ সার্বজনীন বেলায়াত বা কর্তৃত্ব রাখতেন ইমামরাও জনগণকে যাবতীয় কল্যাণের পথে পরিচালনা করার জন্য, ন্যায়নীতি প্রতিষ্ঠার জন্য, অন্যায়-অবিচার নির্মূল করার জন্য সেরূপ কর্তৃত্ব রাখেন।
আখেরাত
মহান আল্লাহ মানুষকে মৃত্যুর পর পুনরুত্থান দিবসে নতুন করে জীবিত করবেন এবং সৎকর্মকারীকে পুরস্কৃত করবেন। আর পাপীকে শাস্তি দিবেন। এ বিশ্বাসের ক্ষেত্রে সামগ্রিকভাবে সমস্ত ঐশী দ্বীনসমূহ ও দার্শনিকরা একমত। পবিত্র কোরআনে প্রায় এক হাজারের মত আয়াতে সুষ্পষ্টরূপে পুনরুত্থান ও মানুষকে দ্বিতীয়বারের মত জীবিত করার ব্যাপারে ইংগিত দেয়া হয়েছে। অতএব যখন কেউ এ ব্যাপারে দ্বিধাদ্বন্দ্ব প্রকাশ করে তখন এটা সুষ্পষ্টরূপে প্রতীয়মান হয় যে, প্রকৃতপক্ষে সে রাসূলের (সা.) রেসালাতের প্রতি, কিংবা মহান আল্লাহর অস্তিত্ব ও তার ক্ষমতার প্রতি সন্দেহ পোষণ করে।
Mashallah
সালামুন আলাইকুম। সাথে থাকার জন্যে আপনাকে অনেক শুকরিয়া।